নেককার মহিলাদের কাহিনী • হযরত মূসা (আঃ)-এর বোন
মহান আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসুল দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন মানুষের হেদায়াতের জন্য। তাদের একত্ববাদের দাওয়াত ও শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন। ঠিক তেমিনভাবে অনেক নেককার মহিলাও দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। তাদের মধ্যেও আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য মুজিজা দিয়েছিলেন। যেগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। এখানে তেমনিভাবে আল্লাহর কিছু প্রিয় নেককার মহিলাদের কাহিনী ও তাদের শিক্ষা তুলে ধরা হলো।
হযরত মূসা (আঃ)-এর বোন
মূসা (আঃ)-এর ভগ্নীর নাম নিয়ে মতভেদ আছে। অনেকের মতে মারইয়াম—আবার কারো মতে কুলসুম। আল্লাহ্ তা’আলার আদেশ পেয়ে হযরত মূসার মাতা মূসা (আঃ)-কে সিন্দুকে ভরে সাগরে ভাসিয়ে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে মারইয়ামকে নির্দেশ দিলেন সিন্দুক ভেসে কোথায় যায়, অবশেষে কি হয় তা দেখার জন্য।
সিন্দুকটি সাগরে ভাসতে ভাসতে ঢেউয়ের তালে তালে নাচতে নাচতে যালেম বাদশাহ্ ফেরআউনের ঘাটে এসে ভিড়লো। ফেরআউনের লোকেরা কৌতূহলী মনে সিন্দুক উঠিয়ে খুলে দেখলো। সেটাতে তারা সুন্দর ফুটফুটে সোনালী চেহারার একটি ছেলে দেখতে পেলো। ছেলেটিকে নিয়ে তারা ফেরআউনের সামনে হাজির করলো। নিষ্ঠুর যালেম ফেরআউন ছেলেটিকে কতল করার ইচ্ছাই প্রকাশ করলো। কিন্তু ফেরআউনের নেকবখত বিবি ছেলেকে কতল করতে দিলেন না। তাঁর মাতৃ সুলভ সস্নেহে ছেলেকে আপন পুত্ররূপে গ্রহণ করলেন। এটাতে বাধ্য হয়ে ফেরআউনও রাজী হয়ে গেল। কিন্তু ছেলেকে দুধ পান করানোর দারুণ সমস্যা দেখা দিল। শিশুটি কারো স্তন্য পান করতে চায় না। সকলেই এই ব্যাপারে নিরাশ হয়ে পড়লো। সকলেই মাথায় হাত দিয়ে চিন্তা করতে লাগলো কি করা যায়?
এই সময় মারইয়াম (মূসার ভগ্নী) তথায় উপস্থিত হলেন। আল্লাহ্র রহমতে তাঁর মাথায় এক চূড়ান্ত বুদ্ধি হাজির হলো। তিনি বললেন, আমি তোমাদের নিকট এমন একজন দুধ-মায়ের সন্ধান দিতে পারি, যাঁহার দুধ অতি উত্তম এবং তিনি সন্তান পালনেও বিশেষ পারদর্শী। এই হিসেবে তিনি মূসা (আঃ)-এর মাতার নাম জানালেন। তাঁকে ডেকে আনা হলো। শিশুটি তাঁরই দুধ পান করতে লাগলো। অতঃপর শিশুটির লালন-পালন মূসা (আঃ)-এর মাতার উপরই অর্পণ করা হলো। এইভাবে আল্লাহ্ তা’আলা স্বীয় পূর্বকৃত ওয়াদা পুরা করলেন।
হযরত মূসা (আঃ)-এর ভগ্নী অত্যন্ত বুদ্ধিমতি নারী ছিলেন। তাই তিনি অতি সুষ্ঠু কৌশলে, তীক্ষ্ণবুদ্ধির বলে অত্যন্ত নিরাপদে ছেলের দুধ-মার স্থলে প্রকৃত মাতাকেই নিযুক্ত করতে সক্ষম হলেন। দুশমনেরা উপস্থিত থেকেও কোন কিছুই বুঝতে পারলো না। অতএব, দেখা যাচ্ছে যে- আক্কল অত্যন্ত মূল্যবান বস্তু। আর সুবুদ্ধি বলে কাজ করতে পারলে সেটার পরিণাম অতি উত্তম।
নেককার মহিলাদের কাহিনী ও তাদের জীবনী
• হযরত হাওয়া (আঃ) • হযরত সারা (আঃ) • হযরত হাজেরা (আঃ) • হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বিবি • বাদশাহ্ নমরুদের কন্যা • আইয়ূব নবীর স্ত্রী বিবি রহিমা • হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর খালা • হযরত মূসা (আঃ)-এর মাতা • হযরত মূসা (আঃ)-এর বোন • হযরত মূসা (আঃ)-এর বিবি ছফুরা • হযরত বিবি আছিয়া • ফেরাউনের কন্যা ও বাঁদী • হযরত মূসার এক বৃদ্ধা লস্কর • হাইসূরের ভগ্নী • হযরত বিলকিস • বনি-ইসরাইলের এক দাসী • বনি-ইসরাইলের এক বুদ্ধিমতী নারী • হযরত বিবি মারইয়াম • হযরত খাদিজা • হযরত সওদা • হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা • হযরত হাফসা • হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ • হযরত যোয়ায়রিয়াহ • হযরত মায়মুনাহ • হযরত সাফিয়া • হযরত যয়নব • হযরত রোকেয়া • হযরত উম্মে কুলসুম • হযরত ফাতেমা (রাঃ) • হযরত হালিমা সাদিয়া •
তথ্যসূত্র
- বেহেশতী জেওর • লেখক: হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহ.) • অনুবাদক: হযরত মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী (রহ.)