১৪টি কারণে নামাযের জামাআত ছেড়ে দেয়া জায়েয
- গুপ্তাঙ্গ (নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত) ঢাকবার পরিমাণ কাপড় না থাকলে জামাআত তরক করা জায়েয আছে।
- মসজিদের পথে যদি এমন কাদা থাকে যে, চলতে কষ্ট হয়। কিন্ত ইমাম আবু ইউছুফ (রহ.) ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর নিকট জিজ্ঞাসা করলেন, রাস্তায় কাদা পানি থাকলে (জমা’আতে যাওয়া) সম্বন্ধে আপনার কি মত? ইমাম সাহেব বললেন, জামাআত তরক করা আমার পছন্দ হয় না।
- মুষলধারে বৃষ্টি বা প্রচন্ড ঝড়তুফান হতে থাকলে, যদিও এমনতাবস্থায জমা’আতে হাজির না হওয়া জায়েয আছে; কিন্ত ইমাম মোহাম্মদ (রহ.) বলেন, এরূপ অবস্থায়ও জমা’আতে হাযির হওয়া উত্তম।
👉 আরো পড়তে পারেন: নামাযের মধ্যে মাকরূহ এবং নিষিদ্ধ কাজসমূহ
- প্রচন্ড শীতের কারণে বাইরে বা মসজিদে গেলে যদি প্রাণের ভয় থাকে কিংবা রোগীর রোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে, তাহলে জামাআত তরক করা জায়েয আছে।
- মসজিদে গেলে যদি মাল সামান চুরির আশংকা থাকে, তাহলে জামাআত তরক করা জায়েয আছে।
- মসজিদের সম্মুখে শত্রুর সম্মুখীন হওয়ার আশংকা থাকে, তাহলে জামাআত তরক করা জায়েয আছে।
- মসজিদে যাওয়ার পথে করযদাতা কর্তৃক উৎপীড়িত হওয়ার আশংকা থাকলে। অবশ্য পরিশোধের সামর্থ্য না থাকলে এই হুকুম। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি ঋণ শোধ না করে, তবে যালিম হবে। তার জামাআত তরক করা জায়েয নাই।
- অন্ধকার রাত্রে পথ দেখা না গেলে। কিন্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে জামাআত তরক করা জায়েয নাই।
- অন্ধকার রাত্রে প্রচন্ড ধূলি ঝড় প্রবাহিত হলে, তাহলে জামাআত তরক করা জায়েয আছে।
- পীড়িত ব্যক্তির সেবায় রত ব্যক্তি জমা’আতে গেলে যদি রোগী কষ্ট বা ভয় পায়, তবে জামাআত তরক করতে পারে।
- খানা প্রস্তত হয়েছে কিংবা হইতাছে, আবার ক্ষুধা এত বেশী যে, খানা না খেয়ে নামাযে দাঁড়ালে কিছুতেই নামাযে মন বসবে না, এমনতাবস্থায় জামাআত তরক করা জায়েয আছে।
- পেশাব পায়খানার খুব বেশী বেগ হলে, তাহলে জামাআত তরক করা জায়েয আছে।
- সফরে রওয়ানা হওয়ার সময় হয়েছে, এখন জমা’আতে নামায পড়তে গেলে দেরী হয়ে যাবে এবং কাফেলার সঙ্গীরা চলে যাবার আশংকা হলে জামাআত তরক করা জায়েয আছে। রেল গাড়ীতে ভ্রমণের মাসআলা তার সাথে তুলনা করা যায়, তবে পার্থক্য এইটুকু যে, এক কাফেলার পর অন্য কাফেলা পাইতে অনেক দেরী। আর রেলগাড়ী দৈনিক কয়েকবার পাওয়া যায়। অবশ্য তাতে ক্ষতির পরিমাণ বেশী হলে জামাআত তরকে দোষ নাই। আমাদের শরীয়াতে অসুবিধা ভোগ করতে বলা হয় নাই।
- রোগের কারণে চলাফেরা করতে পারে না এমন ব্যক্তি কিংবা অন্ধ, খোঁড়া বা পা কাটা লোকের জামাআত মা’ফ। অন্ধ ব্যক্তি যদি অনায়সে মসজিদে পৌছাতে পারে, তবে তার জামাআত তরক করা উচিত না।
তথ্যসূত্র
- বেহেশতী জেওর • লেখক: হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহ.) • অনুবাদক: হযরত মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী (রহ.)