যে অভ্যাসগুলো মেয়েদের সৌন্দর্যহানি ঘটায়
মেয়েদের মধ্যে এমন কিছু অভ্যাস তাদের অগোচরে তৈরি হয়ে যায় প্রকৃতপক্ষে সে অভ্যাসগুলো সৌন্দর্যের হানি ঘটায়। একটু চেষ্টা করলেই এই অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা সম্ভব নতুবা তা দীর্ঘদিন ধরে চললে সৌন্দর্যহানির পাশাপাশি ত্বকের ক্ষতিসাধিত হয়।
ঠোঁট কামড়ানো
কোনোকিছু চিন্তা করার সময় কিংবা আনমনে কোনো কাজ করার সময় মেয়েরা সাধারণত দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরে থাকে। অনেক সময় ঠোঁট শুকিয়ে গেলে অনেকেই ঠোঁটে জিহ্বা বুলিয়ে ঠোঁটটাকে ভিজিয়ে নেয়। কেউ কেউ ঠোঁটের ওপরের পাতলা শুষ্ক আবরণ তুলে ফেলে। কিন্তু এ সবকিছুই ঠোঁটের জন্যে ক্ষতিকর। এধরনের অভ্যাসের ফলে ঠোঁটের ত্বকের স্তরে অসামঞ্জস্য সৃষ্টি হয়। ঠোঁট যদি শুষ্ক মনে হয় তাহলে ভেসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ঠোঁটে মাখতে হবে। যদি তাতেও ঠোঁটের শুষ্কতা না কমে তাহলে ঠোঁটের ওপর জেলি পুরু করে মাখতে হবে। ঠোঁটে কখনোই জিহ্বা বুলানো উচিত নয়। এছাড়া বারবার ঠোঁট কামড়ালে কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
👉 আরো পড়তে পারেন: সু-স্বাস্থ্যের জন্য ছোটমাছ
মুখমণ্ডল ঘষামাজা করা
মেয়েরা রূপচর্চার সময় সাধারণত মুখমণ্ডল বেশি করে ঘষামাজা করে থাকে। মুখমণ্ডল যত্ন নেয়ার নামে পক্ষান্তরে এটা ত্বকের ওপর অত্যাচার। মুখমণ্ডলের ত্বক অত্যন্ত নাজুক থাকে। অতিরিক্ত ঘষামাজার ফলে ত্বকের বাইরের আবরণ নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় ত্বকের নিচের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যায়। অনেক মেয়ে মুখে খসখসে কাপড় কিংবা খোসা দিয়ে মুখ ঘষে থাকে। মনে করে যেন এতে মুখের ময়লা দূর হয়ে মুখটা ঝকঝকে হয়ে উঠবে। কিন্তু এধরনের ঘষামাজা করা কিছুতেই ঠিক নয়।
পরিবর্তে হালকা সাবান ব্যবহার করে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। মুখে মেকআপ থাকলে তা তুলে ফেলার জন্যে ক্লিনজিং লোশন ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে প্রথমে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়া যেতে পারে।
বারবার নেইলপলিশ তোলা
অনেক মেয়ে আছে যারা বারবার নখের নেইল পলিশ রিমুভার দিয়ে তুলে থাকে। ঠোঁটের লিপস্টিক কিংবা পোশাকের সঙ্গে মেলানোর জন্যে বিভিন্ন রঙের নেইলপলিশ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে—তার ফলে এক এক সময় এক এক রঙের নেইল পলিশ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু ঘন ঘন নেইল পলিশ তুলে ফেলাটা নখের জন্যে ক্ষতিকর। বারবার নেইল পলিশ তুললে নেইল পলিশের সাথে নখের একটি আবরণও খসে যেতে থাকে, ফলে নখ তার স্বাভাবিক সজীবতা হারায় এবং একসময় অল্প চাপে নখ ভেঙে যায়। তাই কখনোই বারবার নেইল পলিশ তোলা যাবে না।
থুতনিতে রিসিভার চেপে ধরা
টেলিফোনে কথা বলার সময় অনেকে থুতনিতে রিসিভার চেপে ধরে কথা বলেন। কিন্তু এতে থুতনির ঐ অংশের লোমকূপ বন্ধ হয়ে সেখানে ব্রনের সৃষ্টি হতে পারে। এটাকে বলে ফোন ব্রন। এছাড়া থুতনিতে রিসিভার চেপে রাখার দরুন অংশটি কালো হয়ে যেতে পারে। তাই কথা বলার সময় সর্বদা রিসিভারটি মুখমণ্ডল থেকে অন্তত এক সেন্টিমিটার দূরে রাখতে হবে। অনেক সময় রিসিভারটি থুতনিতে চেপে রাখার ফলে চর্মরোগ হতে পারে। সুতরাং সাবধান।
ঘন ঘন লিপস্টিক দেয়া
সুন্দর ঠোঁটের আবেদন সর্বত্র। ঠোঁটটাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে অনেক মেয়ে ঠোটে ঘন ঘন লিপস্টিক ব্যবহার করে থাকে। লিপস্টিকে মূলত রাসায়নিক উপাদান ব্যবহৃত হয় যা সত্যিকার অর্থে অনেকের ঠোঁটে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে।
ঘন ঘন লিপস্টিক ব্যবহারের ফলে অনেকের ঠোঁটে জ্বালাপোড়া অনুভূতির সৃষ্টি হয়, ঠোঁট চুলকায় এবং কখনো ঠোঁট ফুলে যায়। কারো কারো ঠোঁটে ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা দেয়। যদি লিপস্টিক ব্যবহারের ফলে এ সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে উক্ত লিপস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে। ত্বকের জন্যে সহনীয় এমন লিপস্টিক বাছাই করে তা ব্যবহার করতে হবে। লিপস্টিক ব্যবহারের ফলে ঠোঁটে অ্যালার্জি হলে একজন ত্বক- বিশেষজ্ঞকে দেখানোই উত্তম।