Saturday, November 16, 2024

পবিত্র রমজানের রোযার নিয়ত, রোযা ভঙ্গের কারণ, রোযার আমল, মাসয়ালা ও মাসায়েল

ইসলামের প্রধান পাঁচটি রোকনের মধ্যে অন্যতম একটি হলো রোযা। পবিত্র কোরআনে কারীম ও হাদীস শরীফসহ বিভিন্ন কিতাবে পবিত্র রমজানের রোযার বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তা’আলার নিকট রোযার মর্তবা অতি বড়। রোযা ইসলামের বড় একটি রোকন। যে রোযা না রাখবে, সে মহাপাপী হবে এবং তার ঈমান দুর্বল হয়ে যাবে।



পবিত্র কোরআনে কারীমে বলা হয়েছে,

হে মুমিন সকল! তোমাদের উপর রমাযানের রোযা ফরয করা হলো, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল। যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পারো।

সূরা বাকারা-১৮৩ৎ

রসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন,

যে ব্যক্তি রমযান শরীফের রোযা ঈমানের সঙ্গে শুধু আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি এবং আখেরাতের সওয়াব লাভের আশায় রাখিবে, তাহার পূর্ববর্তী সমস্ত (ছগীরা) গোনাহ মা’ফ হয়ে যাবে।

বুখারী শরীফ: হাদীস নং ১৯০১

হাদীস শরীফে আছে, কিয়ামতের দিন অন্যান্য লোক যখন হিসাব-নিকাশের কঠোরতায় আবদ্ধ থাকবে, তখন রোযাদারের জন্য আরশের ছায়ায় দস্তরখান বিছানো থাকবো। তারা সানন্দে পানাহার করতে থাকবে। তখন অন্যান্য লোক আশ্চর্য হয়ে বলবে, এ কি ব্যাপার! তারা সানন্দে পানাহার করছে, আর আমরা এখনও হিসাবের দায়ে আবদ্ধ রয়েছি! উত্তরে বলা হবে, দুনিয়াতে তোমরা সানন্দে পানাহার করেছিলে, তখন তারা আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে রোযা রেখে ক্ষুৎপিপাসার যন্ত্রণা সহ্য করেছিল।

হাদীস শরীফে এসেছে, রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশ্কের খোশবু অপেক্ষা অধিক প্রিয়। কিয়ামতের দিন রোযার অসীম সওয়াব পাবে।

হিজরী বছরের মধ্যে অত্যন্ত মূল্যবান মাস এই রমযান মাস। এই মাসের প্রতিটি মূহুর্তই আমল দিয়ে সাজানো আর পূণ্য (সওয়াব) দিয়ে পরিপূর্ণ। এই মাস হলো সারা বছরের জন্য ট্রেনিং এর মাস। এই মাসে ইবাদাতের কঠোর ট্রেনিং গ্রহণ করে সারা বছর তা পালন করা উচিত। আমরা সাধারণত গুটিকয়েক আমল এর কথা জানি এবং সেই গুটিকয়েক আমলই করে থাকি।

এতো গুরুত্বপূর্ণ ফজিলতময় ফরজ রোযা পালন করা প্রত্যেকটি মুসলমানের আবশ্যক। আর এই রোযা সঠিকভাবে পালন করে আল্লাহ তায়ালার পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য রোযার জরুরী নিয়ম-কানুন-পদ্ধতি (মাসয়ালা-মাসাইল) ভালভাবে জানা দরকার। তা না হলে, রোযা শুধুমাত্র না খেয়ে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এতে কোন ফজিলত বা সওয়াব অর্জিত হবে না। আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হবে না। তাই সঠিকভাবে রোযা পালনের কিছু বিষয় ভালভাবে জেনে সেইভাবে আমল করা উচিত। যেমন-

  • রোযার নিয়ত
  • সেহরি ও ইফতার
  • রোযা ভঙ্গ হওয়ার কারণসমূহ
  • রোযা মাকরূহ হওয়ার কারণসমূহ
  • রোযার গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসাইল
  • যেসব কারণে রোযার ক্ষতি হয়না
  • মহিলাদের জন্য রোযার কিছু জরুরী বিষয়

মহান আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত হুকুম-আহকামগুলো (ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব ইত্যাদি) পালন করা এবং নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে বিরত থাকার জন্যই মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে। এসব হুকুম-আহকামের মধ্যে পবিত্র রমজানের রোযা আমাদের উপর ফরয করা হয়েছে এবং এই রোযা পালনের মাধ্যমে রয়েছে অসংখ্য সওয়াব ও আখেরাতে অমূল্য উপহার। ঠিক তেমনিভাবে কিভাবে এসকল হুকুম আহকামগুলো পালন করবো সেটা জানাও আল্লাহ তায়ালা ফরয করে দিয়েছেন। তাই এসব হুকু-আহকামগুলো বিশেষ করে রমজানের রোযা সঠিকভাবে পালন করার জন্য এগুলোর নিয়ম-কানুন ভালোভাবে জানা প্রয়োজন। এসব বিষয়ে সঠিক জ্ঞান লাভের জন্য আমরা হক্কানী আলেমগণের দারস্থ হতে পারি। তাদের মাধ্যমে আমরা সঠিক এলেম হাসিল করে সে অনুযায়ী আমল করতে পারি। এছাড়াও হক্কানী আলেমগনের লিখিত বই/কিতাবগুলো পড়েও আপনার এসব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারি। যেমন উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহ.) এর বইগুলো পড়তে পারেন। যিনি ভারতীয় উপমহাদেশের গন্ডি পেরিয়ে লাখো মানুষকে আত্মশুদ্ধি ও তাসাওউফ এর শিক্ষা। তাঁর প্রায় সবগুলো বই-ই বাংলায় অনুবাদ রয়েছে।


পবিত্র রমজানের সেহরি খাওয়ার নিয়্যত, ইফতারের দোয়া, রোযা ভঙ্গের কারণসমূহ এবং রোযা মাকরূহ হওয়ার কারণসমূহ

পবিত্র রমজানের সেহরি খাওয়ার নিয়্যত, ইফতারের দোয়া, রোযা ভঙ্গের কারণসমূহ এবং রোযা মাকরূহ হওয়ার কারণসমূহ

রোযার রাখার নিয়ত (বাংলা অর্থসহ)

পবিত্র রমজানের রোযার নিয়ত, আরবিতে রোযার নিয়ত ও বাংরায় রোযার নিয়ত

রোযাদারের জন্য সেহরি খাওয়া সুন্নাত। রমাজানের রোযা পালন করার জন্য সুবহে সাদিকের পূর্বে মনে মনে এই নিয়ত করতে হবে যে, ‘আমি আজ রোযা রাখবো’ অথবা দিনে আনুমানিক ১১টার পূর্বে মনে মনে এইরূপ নিয়ত করবে যে, আমি আজ রোযা রাখলাম। মুখে নিয়ত করা জরুরী নয়, বরং মুস্তাহাব। (রদ্দুল মুহতার: ২/৩৭৭)। যারা আরবী ভালভাবে সহি-শুদ্ধ বলতে ও বুঝতে পারেন তারা আরবীতেও নিয়ত করতে পাবেন। তবে আবরি সহি-শুদ্ধ না পারলে বাংলায় নিয়ত করাই উত্তম। যারা আরবি ভালো পারেন, তারা নিচের দোয়াটি পাঠ করে রোজার নিয়্যত করতে পারেন-

نويت ان اصوم غدا من شهر رمضان المبارك فرضا لك ياالله فتقبل منى انك انت السميع العليم.

বাংলায় উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুমা গদাম মিন শাহরি রমাদ্বানাল মুবারকি ফারদ্বল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্বব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আংতাস সামীউল আলীম।বাংলায় অর্থ: হে আল্লাহ পাক! আপনার সন্তুষ্টির জন্য আগামীকালের পবিত্র রমজানের এর ফরয রোযা রাখার নিয়ত করছি। আমার তরফ থেকে আপনি তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাত।


ইফতার ও ইফতারের দোয়া

ইফতার ও ইফতারের দোয়া

রোযাদারের জন্য ইফতার করা সুন্নাত। কেবল পানি পান করে অথবা অন্য কোন খাদ্য দিয়েও ইফতার করা যাবে। খুরমা কিংবা খেজুর দ্বারা ইফতার করা সুন্নাত। ইফতারের সময় নিচের দোয়াটি পাঠ করতে হবে-

اللهم لك صمت و على رزقك افطرت.

বাংলায় উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সুমতু লাকা, ওয়া তাওআক্কালতু আ‘লা রিঝক্বিকা, ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।

বাংলায় অর্থ: হে আল্লাহ পাক! আমি আপনারই সন্তুষ্টির জন্য রোযা রেখেছি এবং আপনারই দেয়া রিযিক্ব দ্বারা ইফতার করছি।


রোযা ভঙ্গ হওয়ার কারণসমূহ

রোযা ভঙ্গে কারণসমূহ
  • রোযা স্মরণ থাকা অবস্থায় কোন কিছু খাওয়া বা পান করা অথবা স্ত্রী-সহবাস করা। এতে কাযা ও কাফফারা (একাধারে দুই মাস রোযা রাখা) ওয়াজিব হয়।
  • নাকে বা কানে তৈল বা ঔষধ প্রবেশ করানো।
  • নস্য বা হাপানী রোগীর জন্য ইনহেলার গ্রহণ করা।
  • ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করা।
  • বমি আসার পর তা গিলে ফেলা।
  • কুলী করার সময় পানি গলার ভিতরে চলে যাওয়া।
  • দাঁতে আটকে থাকা ছোলার সমান বা তার চেয়ে বড় ধরনের খাদ্যকণা গিলে ফেলা।
  • মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পরে জাগ্রত হওয়া।
  • ধূমপান করা।
  • ইচ্ছাকৃতভাবে আগরবাতি কিংবা অন্য কোন সুগন্ধি দ্রব্যের ধোঁয়া গলধকরণ করা বা নাকের ভিতরে টেনে নেওয়া।
  • রাত্র মনে করে সুবহে সাদিকের পর সাহরী খাওয়া বা পান করা।
  • সূর্যাস্তের পূর্বে সূর্য অস্তমিত হয়েছে ভেবে ইফতার করা। এগুলোতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়, কাফফারা ওয়াজিব হয় না। কিন্তু রোযা ভেঙ্গে যাওয়ার পর দিনের বাকী সময় রোযাদারের ন্যায় পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে। (রদ্দুল মুহতার ও দুররে মুখতার: ২/৪০২)

যে সমস্ত কারণে রোযার ক্ষতি হয় না

  • ভুলক্রমে পানাহার করা।
  • আতর সুগন্ধি ব্যবহার করা বা ফুল ইত্যাদির ঘ্রাণ নেওয়া।
  • নিজ মুখের থুথু ও কফ জমা না করে গিলে ফেলা।
  • শরীর বা মাথায় তৈল ব্যবহার করা।
  • ঠাণ্ডার জন্য গোসল করা।
  • ঘুমে স্বপ্নদোষ হওয়া।
  • মিসওয়াক করা।
  • অনিচ্ছাকৃত বমি হওয়া
  • চোখে ঔষধ বা সুরমা ব্যবহার করা।
  • যে কোন ধরনের ইনজেকশন লওয়া। (রদ্দুল মুহতার ও দুররে মুখতার: ২/৩৯৪)

রোযা মাকরুহ হওয়ার কারণসমূহ

রোযা মাকরূহ হওয়ার কারণসমূহ বা যে সমস্ত কারণে রোযা মাকরূহ হয়ে যায়
  • মিথ্যা কথা বলা।
  • গীবত বা চোগলখোরী করা।
  • গালাগালি বা ঝগড়া-ফাসাদ করা।
  • সিনেমা দেখা বা অন্য কোন কবীরা গুনাহে লিপ্ত হওয়া।
  • সকাল বেলায় নাপাক অবস্থায় থাকা।
  • রোযার কারণে অস্থিরতা বা কাতরতা প্রকাশ করা।
  • কয়লা, মাজন, টুথ পাউডার, টুথপেষ্ট বা গুল দিয়ে দাঁত মাজা।
  • অনর্থক কোন জিনিস মুখের ভিতরে দিয়ে রাখা।
  • অহেতুক কোন জিনিষ চিবানো বা চেখে দেখা।
  • কুলী করার সময় গড় গড়া করা।
  • নাকের ভিতর পানি টেনে নেয়া। (কিন্তু উক্ত পানি গলায় পৌঁছলে রোযা ভেঙ্গে যাবে।)
  • ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে থুথু জমা করে গিলে ফেলা।
  • ইচ্ছাকৃতভাবে অল্প বমি করা। (দুররে মুখতার: ২/৪১৬, বাদাইউস সানায়ে: ২/৬৩৫, কিতাবুল ফিকহ: ১/৯২৩)

রোযার গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসাইল

  • রমযানের প্রত্যেক দিনেই ঐ দিনের রোযার নিয়ত করা জরুরী। একদিনের নিয়ত পুরো মাসের রোযার জন্য যথেষ্ট নয়। (দুররে মুখতার: ২/৩৭৯)
  • যদি কেউ রোযার নিয়ত ব্যতীত এমনিতেই সারা দিন না খেয়ে থাকে, তাহলে এটা রোযা বলে ধর্তব্য হবে না। (রদ্দুল মুহতার: ২/৩৭৭)
  • সুবহে সাদিকের পর খানা-পিনা জায়িয নেই। আযান হোক বা না হোক। লোক মুখে যে প্রচলিত রয়েছে যে, সুবহে সাদিকের পরেও আযান পর্যন্ত খাওয়া যায় তা সম্পূর্ণ ভুল। (রদ্দুল মুহতার:২/৪১৯)
  • রোযা অবস্থায় গোসল করলে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। তবে কুলী করার সময় গড়গড়া করবে না এবং নাকে পানি দেয়ার সময় নাকের মধ্যে জোরে পানি  টানবে না। (দুররে মুখতার: ২/৪১৯)
  • রোযা অবস্থায় কাউকে রক্ত দিলে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। যদি রক্তদাতার শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকে।(রদ্দুল মুহতার: ২/৪১৯)
  • রমযান মাসের দিনে বা রাতে কেউ যদি বেহুঁশ হয়ে যায় এবং তা যদি কয়েকদিন বা অবশিষ্ট পুরো মাস পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে প্রথম যে দিন বেহুঁশ হয়েছে ঐ দিন বাদ দিয়ে বাকী দিনগুলির রোযার কাযা করতে হবে।(দুররে মুখতার: ২/৪৩২)
  • রমযান মাসে কেউ যদি পাগল হয়ে যায় তাহলে তার রোযা মাফ হয়ে যায়। তবে পুরো মাসের কোন অংশে সুস্থ হলে পূর্বের রোযাগুলোর কাযা করতে হবে।(আল বাহরুর রায়েক: ২/৫০৭)
  • হস্তমৈথুন করলে রোযা ভেঙ্গে যায় এবং তার কাযা আদায় করা জরুরী। এটা জঘন্য পাপকার্য। হাদীসে এইরূপ ব্যক্তির উপর লানত করা হয়েছে। (দুররে মুখতার: ২/৩৯৯)
  • যদি রোযা অবস্থায় দাঁত দিয়ে রক্ত বের হয়ে কণ্ঠনালীতে পৌঁছে যায় এবং তা পরিমাণে কম হয়, তাহলে রোযা নষ্ট হবে না। আর যদি রক্ত থুথুর সমান বা থুথু থেকে বেশী হয় তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং তার কাযা করতে হবে। (দুররে মুখতার: ২/৩৯৬)
  • বাচ্চাকে দুধ পান করালে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু নামায অবস্থায় দুধ পান করালে নামায ভেঙ্গে যায়। (দুররে মুখতার: ২/৩৭১)
  • সফরে যদি কষ্ট হয় তাহলে রোযা না রাখা জায়িয আছে বরং না রাখা উত্তম। আর সফরে কষ্ট না হলে রোযা রাখাই হল মুস্তাহাব। তবে রোযা রেখে ভাঙ্গা ঠিক নয়। কেউ যদি ভেঙ্গে ফেলে তাহলে কাফফারা আসবে কি না এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। যদিও গ্রহণযোগ্য মত হল যে, এই সূরতে কাফফারা ওয়াজিব হয় না। (আহসানুল ফাতাওয়া ৪:৪৪)
  • কেউ রোযা রাখার পর মারাত্মক অসুস্থ হয়ে গেলে অথবা পূর্বের রোগ বেড়ে যাওয়ার প্রবল ধারণা হলে রোযা ভাঙ্গা জায়িয আছে। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে। একান্ত কাযা করার শক্তি না পেলে উক্ত রোযার ফিদিয়া দিতে হবে অর্থাৎ, প্রত্যেক রোযার বদলে একজন গরীবকে দু’বেলা খাওয়াতে হবে বা পোনে দু’সের আটা কিংবা তার মূল্য গরীবকে দিতে হবে। (দুররে মুখতার: ২/৪২২)
  • নাবালেগ ছেলে-সন্তানদেরকে রোযা রাখার হুকুম করতে হবে, যদি তারা এর শক্তি রাখে এবং এর দ্বারা তাদের কোন ক্ষতি না হয়। আর দশ বৎসর বয়সে রোযা রাখতে শুরু না করলে প্রয়োজনে প্রহার করা যাবে।(দুররে মুখতার: ২/৪০৯)
  • রমযানের দিনের বেলায় কোন ছেলে বা মেয়ে বালেগ হলে বা কোন কাফের মুসলমান হলে কিংবা মুসাফির সফর শেষ করলে বাকী দিন খানা-পিনা থেকে বিরত থাকতে হবে।

মহিলাদের জন্য রোযার কিছু জরুরী বিষয়

  • ঋতুবতী কোন মহিলার যদি দিনের বেলায় স্রাব বন্ধ হয়ে যায় তাহলে দিনের বাকী সময় খানাপিনা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে। আর কোন মহিলার রোযা অবস্থায় ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেলে তার জন্য উপবাস থাকা জায়িয নেই। বরং সে চুপে চুপে খানা-পিনা করবে এবং পরবর্তীতে রোযাগুলির কাযা করবে। (দুররে মুখতার: ২/৪০৮, ইমদাদুল আহকাম: ২/১৩৯)
  • যদি কোন মহিলা ঔষধ সেবন করে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে তাকে পুরো মাসই রোযা রাখতে হবে। তবে স্বাভাবিক নিয়মের বিপরীত করার দরুন কাজটি ঠিক হবে না। (ফাতাওয়া রহীমিয়া: ৬/৪০৪)

রমযান মাসে ৪ টা কাজ বেশি বেশি করা

(১) রোযা রেখে নিজেকে দেখা-শুনা করতে হবে, যাতে কোন প্রকার গুনাহ না হয়। গুনাহ ছাড়তে হবে।
(২) রমযান মাস কুরআন শরীফ নাযিলের মাস, তাই প্রতি দিন কুরআন শরীফ তিলাওয়াতের জন্য সময় রাখতে হবে। এটা রমযান মাসের হক।
(৩) কালিমায়ে তাইয়্যিবা বেশী করে পড়তে হবে।
(৪) রমযান মাসে এই দু‘আ বেশি করে পড়তে হবে –  اَللّٰهُمَّ اِنَّا نَسْئَلُكَ الْجَنَّةَ وَنَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارَ


তথ্য সূত্র:


ট্যাগসমূহ

সেহরি সময় | ইফতারের সময় | রমজানের ফাজিলত | মাহে রমজান ২০২২ | ramadan | romjan | romjan2022 | namaz time | sheri & ifter | iftari | রমজান মাসের দোয়া | রমজান মাসে কী কাজ নিষেধ | রোজা রাখার দোয়া | রোজার নিয়ত | রোজার মাসয়ালা মাসায়েল | রোজা ভঙ্গের কারন | রোজার মাসের জরুরী আমল | রোজা অবস্থায় ব্রাশ ও মেসওয়াক | রোজা ভাঙ্গবে | রমজান উপলক্ষে | রোজা ভাঙ্গার কারণ | রোজার মাসায়েল pdf | রোজার মাসায়েল আল কাউসার | রোজার ফাযায়েল ও মাসায়েল | রোজার আধুনিক মাসায়েল | রোজার মাসয়ালা মাসায়েল

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,606FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles