Thursday, March 13, 2025

হারাম মাস কয়টি ও কি কি? ‘হারাম মাস’ নামকরণের কারণ কী?

প্রশ্ন: হারাম মাস কয়টি ও কি কি? ‘হারাম মাস’ নামকরণের কারণ কী? বিষয়: IST-601 : Study of Al Tafsir কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



ভূমিকা

মহান আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সকল মানুষ আর নবী রাসূলগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। তেমনি ভাবে সপ্তাহের ৭টি দিনের মধ্যে জুম‘আর দিনকে, রাতগুলোর মধ্যে ক্বদরের রাতকে, পৃথিবীর স্থানগুলোর মধ্যে হারামাইনের মতো বিশেষ কিছু স্থানকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। ঠিক একই ভাবেই আল্লাহ তায়ালা ১২টি মাসের মধ্যে অধিক মর্যাদা দিয়েছেন ৪টি মাসকে। এই ০৪টি মাস হারাম মাস হিসেবে পরিচিত।

হারাম মাস কয়টি ও কি কি? ‘হারাম মাস’ নামকরণের কারণ কী?

হারাম মাস কয়টি ও কি কি

মহান আল্লাহ মুমিনদের জন্য ইবাদাতের মাঝেও বৈচিত্রতা দিয়ে রেখেছেন। সারা বছরের বিভিন্ন দিন, মাসের প্রাধান্য তার একটি নমুনা। কতগুলি মৌলিক কাজসহ প্রতিটি হারাম মাসের একটি বিশেষ দিক নির্দেশনা রয়েছে। হারাম মাসের সংখ্যা ০৪টি। মাসগুলো হলো — রজব, জিলকদ, জিলহজ্জ এবং মুহাররম।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আল কোরআনের সূরা মায়েদার ০২ নম্বর আয়াতে বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُحِلُّوا شَعَائِرَ اللَّهِ وَلَا الشَّهْرَ الْحَرَامَ .

অর্থ: হে ঈমানদার বান্দারা, তোমরা আল্লাহ তা’লার নিদর্শনসমূহের অসম্মান করো না, সম্মানিত মাসগুলোকেও না।

রাসূলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, নিশ্চয়ই আবর্তনের পথ ধরে মহাকাল আজ তার সেই প্রারম্ভিক বিন্দুতে প্রত্যাবর্তন করেছে, যেখানে সে আল্লাহ কর্তৃক আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিনে ছিল। আল্লাহর কাছে মাস সুনিশ্চিতভাবেই বারোটাই। যখন আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তখন থেকেই তাঁর অদৃষ্ট লিপিতে মাসের সংখ্যা এভাবেই লেখা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে চারটি মাস নিষিদ্ধ। তিনটি মাস ধারাবাহিক – জিলকদ, জিলহজ্জ ও মুহাররম। আর একটির অবস্থান একাকী অর্থাৎ রজব মাস, যা জমাদিউস সানী ও শা’বানের মাঝখানে অবস্থিত।

‘হারাম মাস’ নামকরণের কারণ

নির্ধারিত এই মাসগুলোতে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষেধ। তবে শত্রুপক্ষ আগে আঘাত করলে সেক্ষেত্রে প্রতিরক্ষার জন্য প্রতিরোধ করতে পারবে। স্বাভাবিক ভাবে গুনাহের কাজ করা সব সময়ই হারাম ও নিষিদ্ধ। কিন্তু হারাম হিসেবে উল্লেখ করে এই মাসগুলোতে অন্য সময়ের তুলনায় আরো জোড়ালোভাবে নিষেধ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সূরা আত-তওবার ৩৬ নম্বর আয়াতে বলেন,

إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ

অর্থ: আসমানসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহ তা’লার বিধানে মাসের সংখ্যা লেখা ছিল বারোটি, এই (বারোটির) মধ্যে চারটি হচ্ছে (যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্যে) নিষিদ্ধ মাস। এটা (আল্লাহর প্রণীত) নির্ভুল ব্যবস্থা। অতএব এই সময়ের ভিতরে তোমরা নিজেদের উপর যুলুম করো না।

ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, এই আয়াতে সবগুলো (১২ টি) মাসের ইতিহাস বলা হচ্ছে এবং এরপর সেখান থেকে আল্লাহ তায়ালা ৪টি মাসকে খাস করেছেন এবং সেগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সেগুলোর নিষিদ্ধতাকে গুরুতর বলে উল্লেখ করেছেন, সে মাসসমূহের গুনাহকে মহা অপরাধ গণ্য করেছেন এবং সে মাসসমূহের নেক কাজ ও সওয়াবকেও মহান করেছেন।

কাতাদাহ রহিমাহুল্লাহ বলেন, নিশ্চয় হারাম মাসসমূহে যুলুম করা অন্য মাসসমূহে যুলুম করার চেয়ে অধিক মারাত্মক গুনাহ। যদিও যুলুম সবসময়ই মারাত্মক। কিন্তু, আল্লাহ্‌ তাআলা নিজ ইচ্ছায় তাঁর কোন কোন নির্দেশনাকে অতি মহান করে থাকেন।

উপসংহার

এই পবিত্র মাসগুলোতে যেন আমরা গুনাহের কাজে না জড়িয়ে পড়ি তার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে যদিও সবসময়েও গুনাহ থেকে দূরে থাকতে হবে। নেতিবাচক কাজ যা নিজের উপর যুলুম হয় তা থেকেও দূরে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।



• IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,606FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles