মহিলাদের নামাযের ৯৯ মাসায়িল
মাসায়িলে কিয়াম ২৭টি
দাঁড়ানোতে ৭ কাজ
- পায়ের আঙ্গুলসমূহ কিবলার দিকে সোজাভাবে রাখা।
- উভয় পায়ের মাঝখানে অনূর্ধ্ব চার আঙ্গুল পরিমাণ ফাঁক রাখা।
- উভয় পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলদ্বয় ও গোঁড়ালিদ্বয়ের মাঝে সমান দূরত্ব রাখা।
- তাকবীরে তাহরীমার পূর্বে হাত ছেড়ে দাঁড়ানো। (হাত বেঁধে না রাখা)।
- সম্পূর্ণ সোজা হওয়া (এক পায়ে ভর দিয়ে বাঁকা হয়ে না দাঁড়ানো)।
- ঘাড় সোজা রাখা। চেহারা জমিনের দিকে না করা।
- সিজদার জায়গার দিকে নজর রাখা।
⭐ [বি.দ্র. ফরয নামাযের কিয়াম (দাঁড়িয়ে নামায পড়া পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যই ফরয।]
হাত উঠানোতে ৮ কাজ
- হাত কাপড়ের ভিতর রেখে উঠানো। (বাইরে বের না করা) হাত উঠানোর সময় জমিনের দিকে মাথা না ঝুঁকানো।
- হাত উঠানোর সময় (যথাসম্ভব) হাত শরীরের সাথে লাগিয়ে রাখা।
- তাকবীরে তাহরিমার সময় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠানো।
- হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখা।
- হাতের তালু সম্পূর্ণ কিবলামুখী করে রাখা।
- তাকবীরে তাহরীমা বলার প্রাক্কালে উক্ত নামাযের খেয়াল (নিয়ত) মনে হাজির করা। [ফরয]
- হাত উঠানোর পর তাকবীরে তাহরীমা শুরু করা। (তাকবীর-এর মাদ এক আলিফ থেকে বেশী না টানা।)
- তাকবীরে তাহরীমা বলার পর সরাসরি বুকের উপর হাত রাখা। (হাত বাঁধার আগে হাত ঝুলিয়ে না দেয়া)।
হাত বাঁধায় ৪ কাজ
- ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের উপর রাখা।
- সিনার উপর হাত রাখা।
- হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখা।
- উভয় বাজু বগলের সাথে মিলিয়ে রাখা।
হাত বাঁধার পর ৮ কাজ
- ছানা পড়া
- আ‘উযুবিল্লাহ পড়া।
- বিসমিল্লাহ পড়া।
- সূরা ফাতিহা পড়া [ওয়াজিব]।
- সূরা ফাতিহা পড়ার পর নীরবে আমীন বলা।
- সূরা মিলানো (ফজরের প্রথম দু’রাকা‘আতে এবং ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফলের সব ক’টি রাকা‘আতে) [ওয়াজিব]।
- সূরা এর শুরু থেকে মিলালে প্রথমে বিসমিল্লাহ পড়া।
- মাসনূন ক্বিরা‘আত পড়া।
⭐ [বি.দ্র.পরবর্তী রাকা‘আতগুলোতে তাকবীরে তাহরীমার মত হাত উঠানো,ছানা,আউ‘যুবিল্লাহ নেই।]
মাসায়িলে রুকু ১৩টি
রুকু অবস্থায় ১০ কাজ
- রুকু‘তে যাওয়া অবস্থায় তাকবীর বলা।
- উভয় পায়ের গোড়ালীদ্বয় মিলিয়ে রাখা।
- রুকুতে পূর্ণ বাঁকা না হয়ে মধ্যম ধরনের ঝুঁকা।
- চাদরের ভিতর দিয়ে হাতের আঙ্গুল হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া।
- হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখা।
- হাঁটুদ্বয় একটু বাঁকিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে রাখা।
- সম্পূর্ণ হাত শরীরের সাথে মিলিয়ে রাখা।
- পায়ের দিকে নজর রাখা।
- রুকু‘তে কমপক্ষে তিনবার রুকু‘র তাসবীহ্ (সুবহানা রাব্বিয়াল ‘আযীম) পড়া।
- রুকু‘ করা ফরয এবং রুকুতে কমপক্ষে এক তাসবীহ পরিমাণ দেরী করা ওয়াজিব।
রুকু থেকে উঠায় ৩ কাজ
- রুকু‘ থেকে উঠার সময় ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ্’ বলা।
- সোজা হয়ে (হাত ছেড়ে) স্থিরভাবে দাঁড়ানো। [ওয়াজিব]
- দাঁড়িয়ে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ্’ বলা।
মাসায়িলে সিজদা ৩৪টি
সিজদা অবস্থায় ১৯ কাজ
- সিজদায় যাওয়া অবস্থায় তাকবীর বলা।
- হাঁটু মাটিতে লাগার আগ পর্যন্ত সিনা ও মাথা সোজা রাখা অবস্থায় সিজদায় যাওয়া।
- (প্রথমে) উভয় হাঁটু মাটিতে রাখা।
- (তারপর) নিতম্ব রাখা।
- উভয় পা ডান দিক দিয়ে বের করে বিছিয়ে রাখা।
- পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে রাখা।
- তারপর আঙ্গুল মিলিয়ে হাঁটুর কাছে মাথা রাখা।
- আঙ্গুলের মাথাগুলো কিবলামুখী করে সোজাভাবে রাখা।
- দু‘হাতের মধ্যখানে চেহারা রাখা যায় এ পরিমাণ ফাঁক রাখা।
- (তারপর) বৃদ্ধাঙ্গুলের মাথা বরাবর হাঁটুর সামনে রাখা।
- নাকের অগ্রভাগের দিকে অর্থাৎ জমিনের দিকে নজর রাখা।
- (তারপর) কপাল রাখা।
- পেট উরু থেকে পৃথক রাখা।
- কনুই মাটি ও রান থেকে পৃথক রাখা।
- পেট উরুর সঙ্গে মিলিয়ে রাখা।
- কনুই মাটিতে লাগিয়ে রাখা।
- বাহু শরীরের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা।
- অত্যন্ত জড়সড় হয়ে সিজদা করা।
- আঙ্গুলসমূহ পরস্পরে মিলিয়ে রাখা।
- কমপক্ষে তিনবার সিজদার তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা ) পড়া।
- সিজদা করা ফরয এবং সিজদায় কমপক্ষে এক তাসবীহ পরিমাণ দেরী করা ওয়াজিব।
সিজদা থেকে উঠার সময় ১৫ কাজ
- সিজদা থেকে উঠা অবস্থায় তাকবীর বলা।
- (প্রথমে) কপাল উঠানো।
- (তারপর) নাক উঠানো।
- (তারপর) উভয় হাত উঠানো।
- দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে স্থিরভাবে বসা। [ওয়াজিব]।
- উভয় পা ডান দিক দিয়ে বের করে বিছিয়ে রাখা।
- উভয় পায়ের আঙ্গুলসমূহ (সম্ভবমত) কিবলার দিকে মুড়িয়ে রাখা।
- নিতম্বের উপর বসা।
- উভয় হাত উরুর উপর হাতের আঙ্গুলের মাথা হাঁটু বরাবর রাখা।
- নজর দুই হাঁটুর মাঝে রাখা।
- বসা অবস্থায় দু‘আ (আল্লাহুম্মাগফিরলী) বলা।
- তাকবীর বলা অবস্থায় দ্বিতীয় সিজদায় যাওয়া।
- পূর্বের নিয়মে দ্বিতীয় সিজদার পর তাকবীর বলা অবস্থায় পরবর্তী রাক‘আতের জন্য পায়ের অগ্রভাগে ভর করে দাঁড়ানো।
- হাঁটুর উপর হাত রেখে দাঁড়ানো।
- সিজদা হতে সরাসরি দাঁড়ানো। (মাঝখানে না বসা) এবং উঠার মাঝে রুকুর অবস্থা সৃষ্টি না করা।
মাসায়িল কু‘উদ (বৈঠক) ১৯টি
বসায় ১২ কাজ
- উভয় পা ডান দিকে বের করে বিছিয়ে বসা।
- উভয় পায়ের আঙ্গুলসমূহ (সম্ভবমত) কিবলার দিকে মুড়িয়ে রাখা।
- উভয় হাতের আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে রাখা এবং উরুর উপর আঙ্গুলসমূহের মাথা হাঁটু বরাবর রাখা।
- মাথা ও পিঠ সোজা রাখা।
- নজর দুই হাঁটুর মাঝে রাখা।
- ‘আত্তাহিয়্যাতু’ পড়া। [ওয়াজিব]
- ‘আশহাদু’ বলার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলির মাথা একসঙ্গে মিলিয়ে এবং অনামিকা ও কনিষ্ঠাঙ্গুলদ্বয় মুড়িয়ে রেখে হালকা বাঁধা।
- ‘লা ইলাহা’ বলার সময় শাহাদাত আঙ্গুল সামান্য উঁচু করে ইশারা করা। অতঃপর ‘ইল্লাল্লাহু’ বলার সময় নামানো।
- বৈঠক শেষ হওয়া পর্যন্ত হাত ঐরূপ হালকা বাঁধা অবস্থায় রাখা।
- আখেরী বৈঠক (আত্তাহিয়্যাতুর পর) দরূদ শরীফ পড়া।
- (অতঃপর) দু‘আয়ে মাসূরা পড়া।
⭐ [বি.দ্র. ১ম বৈঠক ওয়াজিব ও শেষ বৈঠক ফরজ।]
সালাম ফিরানোর ৭ কাজ
- একা নামায পড়লে উভয় সালামের সময় ফেরেশতাদেরকে সালাম করার নিয়ত করা এবং জামা‘আতের সময় উভয় সালামে ইমাম, অন্যান্য মুসল্লী, ফেরেশতা ও নামাযী জ্বিনদের সালাম করার নিয়ত করা।
- উভয় সালাম কিবলার দিক থেকে শুরু করা।
- উভয় দিকে সালাম বলতে বলতে চেহারা কাঁধের দিকে ঘুড়ানো।
- প্রথমে ডান দিকে, অতঃপর বাম দিকে সালাম ফিরানো।
- সালামের সময় ডানে-বামে শুধু চেহারা ফিরানো (সিনা না ফিরানো)।
- আলাইকুম বলার সময় নজর কাঁধের দিকে রাখা।
- দ্বিতীয় সালাম, প্রথম সালামের তুলনায় আস্তে বলা।