সন্তানের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার
মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন
اَمْ كُنْتُمْ شُهَدَآءَ اِذْ حَضَرَ یَعْقُوْبَ الْمَوْتُ ۙ اِذْ قَالَ لِبَنِیْهِ مَا تَعْبُدُوْنَ مِنْۢ بَعْدِیْ ؕ قَالُوْا نَعْبُدُ اِلٰهَکَ وَ اِلٰـهَ اٰبَآئِکَ اِبْرٰهٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ اِلٰـهًا وَّاحِدًا ۚۖ وَّنَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ ﴿۱۳۳﴾
“তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে, যখন হযরত ইয়াকুব আ. দুনিয়া থেকে বিদায় নিচ্ছিলেন এবং যখন তিনি নিজের পুত্রদেরকে জিজ্ঞাসা করছিলেন যে, তোমরা আমার ইন্তিকালের পর কার ইবাদত করবে? তারা সকলেই জবাব দিলেন-আমরা ঐ মহান সত্তার ইবাদত করব, যে সত্তার ইবাদত আপনি করতেন এবং আপনার পূর্বে আপনার মুরব্বীবর্গ হযরত ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক আ. করতেন, অর্থাৎ ঐ মা’বুদেরই ইবাদত করব, যিনি এক, যার কোন শরীক নেই। আর আমরা ঐ আল্লাহর আনুগত্যের উপর সুদৃঢ় থাকব।” (সূরাহ বাকারা, আয়াত-১৩৩)
👉 আরো পড়তে পারেন: ঈমান শক্তিশালী বা দুর্বল হয় কিভাবে
উল্লেখিত আয়াতের পূর্বের আয়াতে বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত ইবরাহীম আ.ও মৃত্যুর পূর্বে সন্তানকে এই একই ওসীয়ত করেছিলেন। উল্লেখিত আয়াতদ্বয়ের দ্বারা সাধারণ মানুষ এবং আম্বিয়ায়ে কিরামের আ. দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। সাধারণ মানুষদের দৃষ্টিতে দুনিয়ার মাল-দৌলতের গুরুত্ব ও চিন্তা সর্বাধিক থাকে। এ কারণে মৃত্যুর পূর্বে তারা কামনা করে যে, বড় বড় সম্পদ-যা তার নিকট আছে, সন্তানদের দিয়ে যাবে এবং চায় যে, তারা এসব সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করবে। উক্ত প্রেক্ষাপটে একজন কোটিপতি বা শিল্পপতির আকাঙ্খা থাকে যে, আমার সন্তানরা মিল ফ্যাক্টরিসমূহের মালিক হবে এবং তাদের এক্সপোর্ট ও ইমপোর্টের বড় বড় লাইসেন্স থাকবে, লক্ষ লক্ষ বা কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স তাদের থাকবে। এরূপ একজন উচ্চপদস্থ পিতার বাসনা থাকে যে, তার ছেলেও উচ্চ পদ হাসিল করবে এবং অনেক বড় অংকের বেতনের মালিক হবে ইত্যাদি।
পক্ষান্তরে হযরত আম্বিয়ায়ে কিরামের নজরে সর্বাধিক গুরুত্ব পেত প্রকৃত দৌলত তথা ঈমান ও আমালে সালিহ। এ কারণে মৃত্যুর পূর্বে তাদের এবং তাঁদের অনুসারীদের মনের একান্ত খায়েশ এ ছিল যে, যে জিনিসকে তারা প্রকৃত স্থায়ী ও সর্বাধিক দামী দৌলত বলে মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, সেই দৌলত তাদের সন্তানদের হাসিল হয়ে যাক। এজন্য তারা আজীবন সন্তানদের ঐ দৌলত হাসিল হওয়ার জন্য সর্ব প্রকার চেষ্টা-মেহনত সন্তানদের জন্য করতে থাকতেন। আর যিন্দেগীর শেষ মুহূর্তেও অত্যন্ত তাকীদের সাথে ঐ দৌলতের ওসীয়ত করে যেতেন। যেমন উল্লেখিত দুই আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।