▶ প্রশ্ন: শানে নুযূল কী? শানে নুযূল জানার গুরুত্ব কী? আল-কুরআন খন্ডাকারে নাযিল হওয়ার কারণ কী? আলোচনা করুন। ▶ বিষয়: (IST-505) Principles and History of Tafsir Literature ▶ কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (১ম পর্ব)
ভূমিকা
মহাগ্রন্থ আল কোরআন ৬১০ খ্রিস্টাব্দ ও রমজান মাসের কদরের রজনীতে হেরা পর্বতের গুহায় সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়। মানব জাতির হেদায়াত ও রহমত স্বরূপ এই কোরআন মোট ২২ বছর পাঁচ মাস ১৪ দিনে অবতীর্ণ হয়। সুরা ফাতিহা হলো পবিত্র কোরআনের প্রথম নাজিলকৃত পূর্ণ সুরা। সমস্ত কোরআন মাজীদ একসঙ্গে অবতীর্ণ না হয়ে কেন অল্প অল্প করে দীর্ঘ প্রায় তেইশ বছরে অবতীর্ণ হয়।
শানে নুযুল কি?
মহান আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির ইহ-পরকালীন কল্যাণ ও সাফল্যের চূড়ান্ত নির্দেশিকা হিসেবে যে মহাগ্রন্থ নাযিল করেছেন, সেই আল কুরআনুল কারীম মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর একসাথে অবতীর্ণ হয়নি। প্রায় ২৩ বছর সময়কালব্যাপী এই কোরআন নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে হযরত জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) কোরআনের আয়াত নিয়ে আগমন করতেন।
কোরআনুল কারিমের আয়াতসমূহ প্রধান দুই প্রকার। যেমন- ১. কিছু আয়াত আল্লাহ তায়ালা কোন উপলক্ষ বা কারো কোন প্রশ্ন ছাড়াই নাযিল করেছেন, ২. কিছু আয়াত এমন যেগুলো কোন বিশেষ উপলক্ষ বা কারো কোনো প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে। মুফাসসিরগণ দ্বিতীয় প্রকার আয়াত অবতরণের পটভূমিকে শানে নুযুল বলে আখ্যা দিয়েছেন।
অর্থাৎ পবিত্র কোরআনের কোন সূরা বা আয়াত অবতরণের পরিপ্রেক্ষিত বা পটভূমিকে শানে নুযুল বলা হয়। উদাহরণ স্বরূপ সূরা বাকারার ২২১ নম্বর আয়াতটি উল্লেখ করা যায়। এই আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَ لَا تَنۡکِحُوا الۡمُشۡرِکٰتِ حَتّٰی یُؤۡمِنَّ ؕ وَ لَاَمَۃٌ مُّؤۡمِنَۃٌ خَیۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِکَۃٍ وَّ لَوۡ اَعۡجَبَتۡکُمۡ ۚ وَ لَا تُنۡکِحُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَتّٰی یُؤۡمِنُوۡا ؕ وَ لَعَبۡدٌ مُّؤۡمِنٌ خَیۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِکٍ وَّ لَوۡ اَعۡجَبَکُمۡ ؕ اُولٰٓئِکَ یَدۡعُوۡنَ اِلَی النَّارِ ۚۖ وَ اللّٰهُ یَدۡعُوۡۤا اِلَی الۡجَنَّۃِ وَ الۡمَغۡفِرَۃِ بِاِذۡنِهٖ ۚ وَ یُبَیِّنُ اٰیٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ
অর্থ: আর তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে এবং মুমিন দাসী মুশরিক নারীর চেয়ে নিশ্চয় উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। আর মুশরিক পুরুষদের সাথে বিয়ে দিয়ো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। আর একজন মুমিন দাস একজন মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। তারা তোমাদেরকে আগুনের দিকে আহবান করে, আর আল্লাহ তাঁর অনুমতিতে তোমাদেরকে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন এবং মানুষের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।
আরো পড়তে পারেন: কোরআনের পরিচয় দিন। এর নামকরণ, বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য আলোচনা করুন।
এ আয়াত বিশেষ একটি ঘটনার কারনে নাযিল হয়। যার শানে নুযুল হলো- জাহেলী যুগে আনাক নামীয় এক মহিলার সাথে হযরত মারছাদ ইবনে আবু মারছাদ-এর সম্পর্ক ছিল। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি মদীনায় হিজরত করলেও আনাক মক্কায় থেকে যায়। হযরত মারছাদ একবার কোন কাজে মক্কা এলে ওই মহিলা তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। হযরত মারছাদ পরিষ্কার ভাষায় ওই কুপ্রস্তাব অস্বীকার করে বলেন, ইসলাম তোমার ও আমার মাঝে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য তুমি চাইলে আমি রাসূলুল্লাহ’র (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনুমতির পরে তোমাকে বিবাহ করতে পারি। সে অনুযায়ী তিনি রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে বিবাহের অনুমতি চাইলে আল্লাহ তায়ালা এই আয়াত নাযিল করে মুশরিক নারীকে বিবাহ করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
শানে নুযূল এর গুরুত্ব ও উপকারিতা
শানে নুযুল ইলমে তাফসীরের একটি অপরিহার্য শর্ত। শানে নুযুলের অনেক উপকারিতা রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয়ে আলোচনা করা হলো-
(১) আল্লামা বদরুদ্দীন যরকাশী (রহ.) বলেন, শানে নুযুল জানার প্রথম উপকার এই যে, এর দ্বারা শরয়ী বিধানের হেতু জানা যায়। বুঝা যায় আল্লাহ পাক কোন অবস্থায় কি প্রেক্ষাপটে কেন এ বিধান নাযিল করেছেন। যেমন- আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, “হে ঈমানদারেরা! তোমরা মাতাল অবস্থায় নামাজের কাছে যেও না” (সূরা নিসা ৪৭৩)
এই আয়াতের শানে নুযুল জানা না থাকলে স্বাভাবিকভাবেই কারো মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, কুরআনের দৃষ্টিতে মদ যেহেতু হারাম সেহেতু এখন বলার দরকার কি যে, তোমরা মাতাল অবস্থায় নামাজ পড়ো না। এ প্রশ্নের জবাব পাওয়া যেতে পারে কেবল শানে নুযুল থেকে। এর শানে নুযুল প্রসঙ্গে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মদ হারাম হওয়ার পূর্বে একবার হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু কিছু সাহাবাকে খাবারের দাওয়াত দেন। সেখানে খাবার পর শরাব পান করা হয়। ইতোমধ্যে নামাজের ওয়াক্ত এসে যায়। এক সাহাবী ইমামতি করেন এবং নেশার কারণে কোরআনের আয়াত তেলাওয়াতে ভুল করেন। তখন এই আয়াত নাযিল হয়।
(২) অনেক ক্ষেত্রে শানে নুযুল ছাড়া আয়াতের সঠিক অর্থ বা মর্ম জানা সম্ভব হয় না। যদি শানে নুযুল জানা না থাকে তাহলে ঐ আয়াত সম্পর্কে মানুষের ভুল মর্ম লাভের সম্ভাবনা থাকে অধিক। যেমন সুরা বাকারার ১১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَ لِلّٰهِ الۡمَشۡرِقُ وَ الۡمَغۡرِبُ ٭ فَاَیۡنَمَا تُوَلُّوۡا فَثَمَّ وَجۡهُ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ
অর্থ: আর পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। সুতরাং তোমরা যে দিকেই মুখ ফিরাও, সে দিকেই আল্লাহর চেহারা। নিশ্চয় আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
যদি এই আয়াতের শানে নুযুল জানা না থাকে তাহলে মনে হবে, নামাজের মধ্যে কেবলা মুখী হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। পূর্ব-পশ্চিম সবদিকেই যখন আল্লাহ আছেন, তখন কেবলা মুখি হওয়ার দরকার কি? অথচ ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা কেবলামুখী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ জটিলতা নিরসনে শানে নুযুল এর শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত মুসলিম জাতির কিবলা যখন বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে পরিবর্তিত হয়ে বাইতুল্লাহ বা ‘কাবা শরীফ’ নির্ধারিত হলো, তখন ইহুদিরা প্রশ্ন করল যে এই পরিবর্তনের হেতু কি? তাদের এ প্রশ্নের জবাবে আলোচ্য আয়াত নাযিল হয়। আয়াতের মর্ম হচ্ছে প্রতিটি দিকের স্রষ্টা আল্লাহ। তিনি সর্বত্র বিরাজমান। সুতরাং যে দিকে তিনি মুখ করতে বলেন সে দিকেই মুখ করা ফরয।
কোরআন খন্ডাকারে নাযিল হওয়ার কারণ
সমস্ত কোরআন একসঙ্গে অবতীর্ণ না হয়ে কেন খন্ডাকারে দীর্ঘ তেইশ বছরে কালব্যাপী অবতীর্ণ হল। কেন আল্লাহ তওরাত, জবুর, ইঞ্জিল প্রভৃতি আসমানী কিতাবের ন্যায় কোরআন মাজীদকেও এক সংগে অবতীর্ণ করলেন না। কাফেরদের এই প্রশ্নের জবাব দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা আল-ফোরকান এর ৩২ নম্বর আয়াতে বলেন-
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَوۡ لَا نُزِّلَ عَلَیۡهِ الۡقُرۡاٰنُ جُمۡلَۃً وَّاحِدَۃً ۚۛ کَذٰلِکَ ۚۛ لِنُثَبِّتَ بِهٖ فُؤَادَکَ وَ رَتَّلۡنٰهُ تَرۡتِیۡلًا
অর্থ: আর কাফিররা বলে, ‘তার উপর পুরো কুরআন একসাথে কেন নাযিল করা হল না? এটা এজন্য যে, আমি এর মাধ্যমে তোমার হৃদয়কে সুদৃঢ় করব। আর আমি তা আবৃত্তি করেছি ধীরে ধীরে।
লেখক আল্লামা আব্দুল আজিম তার লেখা কিতাব মানাহেহুল ইরফান ফি উলুমিল কোরআন এ কোরআন অল্প অল্প করে নাযিল হওয়ার ভিতরে চারটি বিশেষ হিকমতের কথা উল্লেখ করেছেন।
১. রসূলের অন্তরকে শক্তিশালী করা
অর্থাৎ স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ হতে বার বার ওয়াহী বহনকারী সম্মানিত ফিরিশতা হযরত জিবরাইল আমিনের হুজুরের কাছে আগমনে তাঁর অন্তরাত্না আধ্যাত্নিক আনন্দে পরিপূর্ণ থাকত এবং মনের পবিত্র মনিকোঠায় নিয়তই এ ধারণা বদ্ধমুল থাকত যে তাঁর উপরে আসমান থেকে অবারিত ধারে আল্লাহর অনুগ্রহ ও নিয়ামত বর্ষিত হচ্ছে। ফলে হুজুরের অন্তর-আত্না ঈমানের অলৌকিক শক্তিতে ক্রমশই শক্তিশালী হতে থাকে।
কোরআন বিরতি সহকারে অল্প অল্প করে নাযিল হওয়ার ফলে হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা সাথে সাথে মুখস্থ করে ফেলতেন এবং তার অন্তরনিহিত মর্ম উপলব্ধি করে তার হিকমত সম্পর্কে বিশেষভাবে ওয়াকিফহাল হতেন। ফলে হুজুরের পবিত্র অন্তকরণ কোরআনের অভিনব ও অলৌকিক শক্তিবলে নিয়তই শক্তিশালী হতে থাকত।
২. মুসলিম উম্মতের ধারাবাহিক তরবীয়ত
অর্থাৎ নবীর নেতৃত্বে যে নতুন একটি জাতির অভ্যুদয় ঘটেছিল সেই জাতিকে ধারাবাহিক শিক্ষা ও তরবীয়তের মাধ্যমে ধাপে ধাপে অগ্রসর করিয়ে পূর্ণতার প্রান্ত সীমায় নিয়ে যাওয়া। বিরতিসহ অল্প অল্প কোরআনের অংশ নাযিলের মাধ্যমে উক্ত উদ্দেশ্য বিশেষভাবে সাধিত হয়েছিল। কেননা শরীয়তের যাবতীয় হুকুম-আহকাম যদি প্রথম ধাপেই একত্রে অবতীর্ণ হত, তাহলে হয়ত সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী নতুন লোকদের পক্ষে উহা পুরাপুরি মেনে চলার অধিকতর কষ্টসাধ্য হত। যেমন আল্লাহ বলেছেন, “আর আমি কোরআনকে ভাগ ভাগ করে এই জন্য অবতীর্ণ করেছি যাতে করে আপনি ইহা লোকদেরকে বিরতি সহকারে পাঠ করে শুনাতে পারেন।” (সুরা ইসরা, আয়াত-১০৬)
৩. নতুন নতুন সমস্যা সমূহের ব্যাপারে পথ প্রদর্শন
হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর আত্নোৎসর্গী সঙ্গীদের উপরে ইসলামী আন্দোলন পরিচালনার যে গুরুদায়িত্ব আল্লাহ অর্পণ করেছিলেন, উহার বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছিল এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রশ্নেরও সম্মুখীন হুজুরকে হতে হয়েছিল। উক্ত সমস্যা সমূহের সমাধান ও প্রশ্ন সমূহের জওয়াব দান প্রসঙ্গে বিভিন্ন সময় কোরআনের বিভিন্ন অংশ নাযিল হওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল।
যেমন একদা একজন মুসলিম মহিলা হযরত খাওলা বিনতে সায়ালাবা রসূলের দরবারে হাজির হয়ে তার স্বামী কর্তৃক তাকে জেহার করার ঘটনা বর্ণনা করে কান্নাকাটি ও হাহুতাশ করতে লাগলেন। কেননা তার কয়েকটি ছোট ছোট সন্তান সন্ততি ছিল। যদি এই সন্তানদেরকে তিনি তাঁর স্বামীর হাতে অর্পণ করেন তাহলে তাদের জীবনই বরবাদ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। আবার যদি নিজের কাছে রেখে দেন, তাহলেও অন্নকষ্টে তাদের অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল। ফলে মহিলাটি অত্যন্ত বিচলিত হয়ে হুজুরের সামনে কান্নাকাটি ও হাহুতাশ করতে লাগলেন।
ইসলাম পূর্বে জাহেলিয়াত যুগে জেহার দ্বারায় স্ত্রী তালাক হয়ে যেতো। [জেহার বলা হয় আপন স্ত্রীকে মোহররামাত অর্থাৎ মা, কন্যা ইত্যাদিদের সাথে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার নিয়তে তুলনা করা। যেমন কেহ যদি তার স্ত্রীকে একথা বলে তুমি আমার মায়ের ন্যায়, তাহলে উহা জেহার হবে। জাহেলিয়াত যুগে আরবরা যে স্ত্রীর সাথে জেহার করত তাকে তারা চিরদিনের তরে নিজের জন্য হারাম মনে করত। ইসলাম ইহাকে অনুমোদন দেয়নি। তবে এ ধরনের অশালীন ও অসংগত আচরণের জন্য জেহারকারীর উপর কিছু কাফফারা আরোপ হয়েছে।]
মুসলিম সমাজে জেহারের সমস্যা এই প্রথম বারই দেখা দিয়েছিল। হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। ঠিক এই মুহুর্তে উহার সমাধানে নিম্নলিখিত আয়াত অবতীর্ণ হয়, “যে মহিলাটি তার স্বামীর ব্যাপারে তোমার সাথে ঝগড়াঝাটি করছিল এবং আল্লাহর কাছে অভিযোগ পেশ করছিল। আল্লাহ তোমাদের উভয়ের কথাবার্তাই শুনে নিয়েছিলেন। আর আল্লাহ সবকিছুই শুনেন ও দেখেন। তোমাদের মধ্য হতে যারা আপন স্ত্রীর সাথে জেহার করে তাদের সে জেহারকৃত স্ত্রীরা (প্রকৃতপক্ষে) তাদের মা হয়ে যায় না। তাদের মা তো তারাই যারা তাদেরকে প্রস্রব করেছে।”
একদা মক্কার মুশরিকরা ইহুদীদের প্ররোচনায় হুজুরকে অপ্রস্তুত করার মানসে জুলকারনাইন সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিল অথচ তখনও জুলকারনাইন সম্পর্কে হুজুরের কিছুই জানা ছিলনা। ফলে মহাবিজ্ঞানী আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীকে জুলকারনাইনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ওয়াহীর মারফত অবগত করিয়ে দেন। “আর এরা আপনার নিকটে জুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। আপনি বলুন শীঘ্রই তোমাদেরকে তাঁর বর্ণনা পাঠ করে শুনাচ্ছি।” (সুরা কাহাফ, আয়াত-৮৩)
উপসংহার
কোরআনের আয়াতের মর্মার্থ বুঝার জন্য শানে নুযুল জানার গুরুত্ব অনেক বেশি। শানে নুযুল না জেনে শুধুমাত্র কোরআনের আয়াতের শাব্দিক অর্থ দেখে কোরআন বোঝার চেষ্টা করলে অনেক গোমরাহীতে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই শানে নুযুল গুরুত্ববহ।
• IST-501 : Study of Al-Quran (Surah: Al-Fatah and Al-Hujurat) • IST-502 : Introduction to Islamic Dawah • IST-503 : Al-Sirat Al-Nababiah • IST-504 : Human Rights in Islam • IST-505 : Principles and History of Tafsir literature • IST-506 : Principles of Islamic Jurisprudence •