ইসলামিক ক্যালেন্ডারে রমজান একটি পবিত্র মাস। এই মাসে সারা বিশ্বের মুসলমানরা ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখে। ইবাদাতে অধিকতর মনোযোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ইবাদাতের পাশাপাশি এই মাসে আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কিছু স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হল যা আপনাকে পুরো রমজানে সুস্থ থাকতে সাহায্য করতে পারে।
রমজানে সুস্থ্য থাকার জন্য কিছু স্বাস্থ্য পরামর্শ
- রোজা না করার সময় অর্থাৎ ইফতারের পর থেকে পরবর্তী সেহরী খাওয়া পর্যন্ত সময়টুকুতে প্রচুর পানি এবং তরল পান করে হাইড্রেটেড থাকুন।
- চিনিযুক্ত এবং ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন। কারণ এগুলো আপনাকে দ্রুত ডিহাইড্রেট করতে পারে।
- প্রচুর ফল এবং শাকসবজিসহ একটি সুষম খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- বড় খাবারের আগে খেজুর এবং পানীয় বা হালকা নাস্তা দিয়ে আপনার রোজা ভাঙুন।
- ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি বদহজম এবং অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
- আপনার খাবারে প্রোটিনের স্বাস্থ্যকর উত্স যেমন মুরগির মাংস, মাছ এবং লেবু অন্তর্ভুক্ত করুন।
- ভাজা এবং তৈলাক্ত খাবার খাওয়া সীমিত করুন, কারণ এগুলো আপনার পেটকে ভারী করে দেয়। এমনকি অনেক সময় হজমেও সমস্যা করে।
আরো পড়তে পারেন: পবিত্র রমজানের রোযার নিয়ত, রোযা ভঙ্গের কারণ, রোযার আমল, মাসয়ালা ও মাসায়েল
- আপনার শক্তি সংরক্ষণ করতে দিনের বেলা ঘুমান বা বিশ্রাম নিন।
- দিনের বেলা অর্থাৎ রোজা অবস্থায় কঠোর শারীরিক পরিশ্রম বা কার্যকলাপ এড়িয়ে চলুন।
- নন-ফাস্টিং ঘন্টায় যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিংয়ের মতো মৃদু ব্যায়াম অনুশীলন করুন।
- সেহরীর খাবার কোনভাবেই মিস করবেন না। কারণ এটি আপনাকে সারাদিন শরীরের শক্তি যোগানো থেকে শুরু করে শরীরের সামগ্রীক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
- রোজার সময় ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
- প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত খাবার গ্রহণ সীমিত করুন। প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ নিশ্চিত করুন।
- আপনার খাবারে অ্যাভোকাডো, বাদাম এবং জলপাই তেলের মতো স্বাস্থ্যকর চর্বি যুক্ত করুন।
- সাধারণ কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে জটিল কার্বোহাইড্রেট যেমন ব্রাউন রাইস এবং পুরো শস্যের রুটি বেছে নিন।
- আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাচ্ছেন তা নিশ্চিত করতে একটি মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন (অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী)।
- আপনার দাঁত ব্রাশ করতে এবং ভাল মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে ভুলবেন না।
- গভীর রাতে জেগে থাকা এড়িয়ে চলুন এবং পর্যাপ্ত ঘুমের চেষ্টা করুন।
- আপনার মনকে বিশ্রাম দিতে সোশ্যাল মিডিয়া এবং প্রযুক্তি থেকে বিরতি নিন।
- মানসিক চাপ কমাতে এবং শিথিলতা বাড়াতে মননশীলতা এবং ধ্যান অনুশীলন করুন।
- এই মাসে সহায়তার জন্য বন্ধুদের এবং পরিবারের কাছাকাছি পৌছে যান। পরিবারকে আরো বেশি সময় দেয়ার চেষ্টা করুন। আত্মীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগ রাখুন।
- অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ এড়িয়ে চলুন কারণ এটি আপনার ঘুমের সময়সূচীকে ব্যাহত করতে পারে।
আরো পড়তে পারেন: সরিষার তেলের এলার্জিক প্রতিক্রিয়া
- স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে আপনার খাদ্য তালিকায় প্রোবায়োটিক যেমন দই ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন।
- অত্যধিক লবণ খাওয়া এড়িয়ে চলুন কারণ এটি ডিহাইড্রেশন হতে পারে।
- অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য আপনার খাবারে হলুদ, দারুচিনি এবং আদার মতো ভেষজ এবং মশলা যুক্ত করুন।
- আপনি যদি এই মাসে কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা বা উদ্বেগ অনুভব করেন তবে চিকিত্সার পরামর্শ নিতে দ্বিধা করবেন না।
- আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার সাথে সাথে রমজানের আধ্যাত্মিক সুবিধাগুলি উপভোগ করুন।