▶ প্রশ্ন: আল-কুরআন এর পরিচয় দিন। কুরআন নাযিলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও কুরআন মাজীদে বর্ণিত মূল বিষয়সমূহ আলোচনা করুন ▶ বিষয়: (IST-505) Principles and History of Tafsir Literature ▶ কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (১ম পর্ব)
ভূমিকা
মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন সমগ্র মানব জাতির হিদায়াতের জন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা এই কিতাবে দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনের সকল বিষয়বস্তু উল্লেখ করেছেন। দুনিয়াতে মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এই কোরআনে। আর আখিরাতের সুখ-শান্তি ও কঠিন আযাব-শাস্তির কথাও উল্লেখ রয়েছে এই কিতাবে।
আল-কুরআনের পরিচয়
আল-কুরআন শব্দটি কারউন ধাতু থেকে এসেছে। এর অর্থ একত্র করা, সন্নিবেশ করা, জমা করা। আল্লামা যারকানী বলেন, কুরআন শব্দটি (কারা’আতুন) ধাতু থেকে এসেছে, যার অর্থ অধ্যয়ন করা ও পাঠ করা।
মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহ.) বলেন, আল-কুরআন মহান আল্লাহর সেই পবিত্র ও সম্মানিত কালাম যা তাঁর পক্ষ হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে আমাদের নিকট ধারাবাহিক বর্ণনায় কোনরূপ সন্দেহ-সংশয় ব্যতীত পৌঁছেছে।
আরো পড়তে পারেন: ১০ জন প্রসিদ্ধ মুফাসসির তাবেয়ীর পরিচয় দিন। তাবেয়ীদের যুগে তাফসীরের বৈশিষ্ট্য লিখুন।
আল-কুরআন মানব রচিত কোন গ্রন্থ নয়। এ গ্রন্থের ভাব, ভাষা, মর্ম-বিষয়বস্তু সবকিছুই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে। এতে মানব জাতির পার্থিব ও পরলৌকিক জীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান রয়েছে। পূর্ববর্তী সকল নবী- রাসূলের দাওয়াত ও তাদের প্রতি অবতীর্ণ আসমানি কিতাবের শিক্ষার সারসংক্ষেপ এ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। কুরআন নাযিল হওয়ার পর পূর্ববর্তী সকল আসমানি কিতাব রহিত হয়ে গেছে। সুতরাং এখন আল-কুরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যা মানব জাতির কল্যাণ ও মুক্তির পথ প্রদর্শক।
কুরআন নাযিলের ইতিহাস
মহান আল্লাহ মানুষের হিদায়াতের জন্য তাঁর মনোনীত সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি আল-কুরআন নাযিল করেন। প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে নবী জীবনের সুদীর্ঘ ২৩ বছর ব্যাপী তা নাযিল হয়েছিল। এটি লাওহে মাহফুযে সুরক্ষিত ছিল। কুরআন মাজীদ লাওহে মাহফুয থেকে মহানবীর (স) কাছে দুই পর্বে নাযিল হয়।
১. লাওহে মাহফুয থেকে বায়তুল ইয্যাতে
লাওহে মাহফুযে আল-কুরআন রক্ষিত ছিল। সেখান থেকে পরিপূর্ণ কুরআন একই সাথে রমযান মাসের কদর রাতে পৃথিবী সংলগ্ন বায়তুল ইয্যাতে নাযিল হয়। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারা এর ১৮৫ নম্বর আয়াতে বলেন-
شَہۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَبَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡہُدٰی وَالۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَہِدَ مِنۡکُمُ الشَّہۡرَ فَلۡیَصُمۡہُ ؕ وَمَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَلَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَلِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَلِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ وَلَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ
অর্থ: রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।
আরো পড়তে পারেন: আন-নাসখ বলতে কী বোঝায়? আন-নাসখ কত প্রকার ও কি কি? সুন্নাহ দ্বারা কুরআন রহিত করা যায় কী আলোচনা করুন।
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, লাওহে মাহফুয হতে কুরআনকে পৃথিবীর আকাশে বায়তুল ইয্যাতে রাখা হয়। তারপর জিবরাঈল (আ) সময় সময় তা আমার প্রতি নাযিল করতে থাকেন।
২. বায়তুল ইয্যাত হতে মহানবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি
এরপর বায়তুল ইযযাত থেকে মহানবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাঈলের (আ) মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ওহীযোগে কুরআন নাযিল হতে থাকে। তা একসাথে নাযিল হয়নি; বরং প্রয়োজনের আলোকে কুরআনের কোন কোন আয়াত ও খণ্ড খণ্ড সূরা ধারাবাহিকভাবে তেইশ বছর কালব্যাপী নাযিল হয়। মহান আল্লাহ সূরা বনী ইসরাইল এর ১০৬ নম্বর আয়াতে বলেন-
وَقُرۡاٰنًا فَرَقۡنٰہُ لِتَقۡرَاَہٗ عَلَی النَّاسِ عَلٰی مُکۡثٍ وَّنَزَّلۡنٰہُ تَنۡزِیۡلًا
অর্থ: আমি কোরআনকে যতিচিহ্ন সহ পৃথক পৃথকভাবে পাঠের উপযোগী করেছি, যাতে আপনি একে লোকদের কাছে ধীরে ধীরে পাঠ করেন এবং আমি একে যথাযথ ভাবে অবতীর্ণ করেছি।
কুরআন নাযিলের সময় সময় ও স্থান
৬০৯ খ্রিষ্টাব্দে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ৪০ বছর বয়সে রামাযান মাসের কদরের রাতে হেরা গুহায় সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত নাযিল হয়। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা (রা) বর্ণনা করেন, “মহানবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে ওহী নাযিলের সূচনা হয়েছিল। অতঃপর তাঁর মধ্যে নির্জনে ইবাদাত করার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। তখন তিনি হেরা পর্বতের একটি গুহায় রাত দিন ইবাদাতে মগ্ন থাকতেন। এমতাবস্থায় এক রাতে হযরত জিবরাঈলের (আ) মাধ্যমে তাঁর নিকট সর্বপ্রথম সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত নাযিল হয়। জিবরাঈল (আ) মহানবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিকট এসে বললেন, পড়ুন! তিনি বললেন, আমি পড়তে পারি না। তিনি বলেন, তখন জিবরাঈল (আ) আমাকে চেপে ধরলেন, তারপর ছেড়ে দিয়ে আবার বললেন, পড়ুন। আমি আবার বললাম আমি পড়তে পারি না। তিনি পুনরায় আমাকে চেপে ধরে ছেড়ে দিয়ে বলেন, পড়ুন। আমি বললাম আমি পারিনা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ফেরেশতা পুনরায় আমাকে ধরে জোরে কোলাকুলি করায়, আমার ভীষণ কষ্ট হলো। এবার তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলেন, পড়ুন আপনার প্রভুর নামে, যিনি মানুষকে জমাট বাধা রক্ত হতে সৃষ্টি করেছেন, পড়ুন, আর আপনার প্রভু মহিমান্বিত।
এরপর মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কম্পিত হৃদয়ে ঘরে ফিরে বিস্তারিত ঘটনা স্ত্রী খাদীজা (রা)-কে বললেন। খাদীজা (রা) সবকিছু শুনে তাঁকে সান্তনা দিয়ে স্বীয় চাচাতো ভাই ধর্ম বিশেষজ্ঞ ওয়ারাকা ইবনে নওফেল- এর নিকট নিয়ে যান। ওয়ারাকা সবকিছু শুনে বললেন- ভয় নেই, মূসার (আ) কাছে আল্লাহ যে নামুসকে পাঠিয়েছেন, এ সেই নামুস (অর্থাৎ হযরত জিবরাঈল ফেরেশতা)। আপনিই প্রতিশ্রুত শেষ নবী। আমি বেঁচে থাকলে আপনার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। ওয়ারাকার কথায় নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও খাদীজা (রা) আশ্বস্ত হলেন।
এরপর তিন বছরের মধ্যে আর কোন ওহী নাযিল হয়নি। তিন বছর বা কারো মতে আড়াই বছর পর আবার ওহী অবতীর্ণ শুরু হয়। এভাবে সুদীর্ঘ তেইশ বছরে পরিপূর্ণ কুরআন নাযিল সম্পন্ন হয়। ওহী বিরতি কালকে ফাতরাত বলা হয়। দীর্ঘকাল ধরে ওহী নাযিল হচ্ছিল না। এমতাবস্থায় প্রিয় নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মনে ওহীর বাহক জিবরাঈল (আ)-কে আবার দেখার আগ্রহ জাগ্রত হয়। কিছু কাল ওহী আসা বন্ধ থাকলে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চিন্তাযুক্ত হয়ে পড়লেন। তিনি কখনও কখনও পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করে আকাশের দিকে তাকাতেন এজন্য যে, কোথাও জিবরাঈল (আ) কে দেখতে পাবেন অথবা কোন প্রকার আওয়াজ শুনতে পাবেন। একদিন এমন ঘটনা ঘটে, তিনি পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করলেন আর জিবরাঈল (আ) তাঁর সামনে এসে বললেন, “হে মুহাম্মাদ! আপনি সত্যিই আল্লাহর রাসূল।” এ কথা শুনে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মন শান্ত হয় এবং তিনি ফিরে এলেন।
এর কিছু দিন পর আবার তিনি হেরা পর্বতের কাছে গিয়ে দেখতে পান হযরত জিবরাঈল (আ) আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানে একটি আসনে বসে আছেন। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে ঐ অবস্থায় দেখে নিজ গৃহে ফিরে আসেন এবং বললেন, “কম্বল দিয়ে আমাকে আচ্ছাদিত করে দাও”। এ সময় সূরা মুদ্দাছ্ছিরের প্রথম আয়াতগুলো নাযিল হয়, “হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! উঠুন, আর সতর্ক করুন এবং আপনার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন।”
এরপর থেকে নিয়মিতভাবে ওহী নাযিল হতে থাকে। মহানবী (স)-এর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। পবিত্র কুরআন ও ইসলামের পূর্ণাঙ্গতার ঘোষণা দিয়ে বিদায় হজের সময় আল্লাহ তাআলা সর্বশেষ অবতীর্ণ করেন সূরা মায়িদার ৩ নম্বর আয়াত নাযিল করেন।
বস্তুত মহান আল্লাহ জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর প্রতি আল-কুরআন নাযিল করেন।
আল-কুরআনের আলোচ্য বিষয়সমূহ
হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলবী (রহ.) পবিত্র কুরআনের আলোচ্য বিষয়সমূহকে প্রধানত পাঁচ ভাগে ভাগ করেছেন-
১. ইলমুল আহকাম বা সংবিধান সংক্রান্ত জ্ঞান
পবিত্র কুরআনে ইবাদত-বন্দেগী, পারস্পরিক মুআমালাত, আচার-ব্যবহার, দাম্পত্য জীবন, সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থ, যুদ্ধ-সন্ধি প্রভৃতি মানব জীবনের যাবতীয় প্রয়োজন ও বিষয় সংক্রান্ত বিধি-বিধান ও নির্দেশাবলি আলোচিত হয়েছে। ফরয, ওয়াজিব, মুস্তাহাব, হালাল-হারাম, মাকরূহ, মুবাহ এবং যাবতীয় আদেশ-নিষেধ এর অন্তর্ভুক্ত।
২. ইলমুল মুখাসামা বা তর্ক শাস্ত্র
ইয়াহুদি, খ্রিষ্টান, কাফির-মুশরিক ও মুনাফিক এ চার শ্রেণির পথভ্রষ্ট মানুষের সাথে বিতর্ক সম্পর্কিত জ্ঞান। এ পর্যায়ে তাদের আকিদা-বিশ্বাস এবং মতবাদের ভ্রান্ততা প্রমাণ করা হয়েছে। সাথে সাথে তাদের ভ্রান্ত ও অযৌক্তিক মতাদর্শের প্রতি জনমনে ঘৃণা জাগ্রত করা হয়েছে। এদের কুসংস্কার ও ভ্রান্ত মতবাদের অসারতা প্রতিপন্ন করা হয়েছে। সেগুলোর জবাব দান করা হয়েছে।
৩. ইলমুত্ তাযকীর-বি-আলা ইল্লাহ বা স্রষ্টাতত্ত্ব
বিশ্ব স্রষ্টা ও নিয়ন্তা হিসেবে মহান আল্লাহর পরিচয়, অনুগ্রহ, অবদান এবং কুদরতী নিদর্শনাবলি সম্পর্কিত জ্ঞান। এ ছাড়াও আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি রহস্য, দৈনন্দিন জীবনে প্রাপ্ত বান্দার অভিজ্ঞান, সর্বোপরি স্রষ্টার সর্ববিধ গুণাবলির পরিচয় সম্পর্কিত আলোচনা সন্নিবেশিত হয়েছে।
৪. ইলমুত্ তাযকীর-বি-আইয়্যামিল্লাহ বা সৃষ্টিতত্ত্ব
আল্লাহর সৃষ্টিবস্তুর অবস্থা সংক্রান্ত জ্ঞান। এতে হক ও বাতিল, সত্য ও মিথ্যার মধ্যে অতীত সংঘর্ষ ও রেষা-রেষির ইতিহাস আলোচনা করা হয়েছে। সেই সাথে হক ও সত্যপ্রিয়তার শুভ পরিণাম, মিথ্যা ও বাতিলের শোচনীয় পরিণতি এবং মিথ্যার জন্য সতর্ক ও সাবধান করা হয়েছে।
৫. ইলমুত্ তাযকীর বিল-মাউত বা পরকাল সংক্রান্ত জ্ঞান
পবিত্র কুরআনে সৃষ্টিলোকের লয়, মানুষের মৃত্যু, অক্ষমতা এবং মৃত্যুর পর অনন্ত জীবন-জান্নাত বা জাহান্নামের দৃশ্যের প্রত্যক্ষ বর্ণনা রয়েছে। রহমত ও আযাবের ফেরেশতাদের উপস্থিতি, কিয়ামতের আলামত, হযরত ঈসা (আ) -এর অবতরণ, দাজ্জাল- ইয়াজুজ-মাজুজের আবির্ভাব, ইসরাফিলের শিঙ্গায় ফুঁকের উল্লেখ। হাশর-নশর, হিসাব-নিকাশ, পাপ-পুণ্যের জ্ঞান, আমলনামা, মুমিনগণের আল্লাহর সাথে দীদার ইত্যাদির বর্ণনা। তাছাড়া আযাব ও শাস্তির নানা রকম ভীতিপ্রদ বর্ণনা। জান্নাতের নয়নাভিরাম দৃশ্য ও নিয়ামত রাশির বিবরণ। মানব জাতিকে আত্মসচেতন ও সদা সতর্ক করার জন্য এবং আল্লাহ তাআলার দাসত্ব ও আনুগত্যের জন্য উৎসাহিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
উপসংহার
পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের এ অফুরন্ত জ্ঞান ভাণ্ডারে সব কিছুরই মৌলিক বর্ণনা ও জ্ঞান আলোচিত হয়েছে। মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণের যাবতীয় বিষয়ের এমন পরিপূর্ণ বর্ণনা আর কোথাও নেই। তাই আল কোরআন একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান।
• IST-501 : Study of Al-Quran (Surah: Al-Fatah and Al-Hujurat) • IST-502 : Introduction to Islamic Dawah • IST-503 : Al-Sirat Al-Nababiah • IST-504 : Human Rights in Islam • IST-505 : Principles and History of Tafsir literature • IST-506 : Principles of Islamic Jurisprudence •