পুরুষরা পরিবারের প্রধান। তাদের অনেক দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। তাদের উপর নির্ভরশীল থাকে পরিবারের অনেক সদস্য। পুরুষদেরকে ঘরে-বাইরে সব জায়গায় বিভিন্ন দায়দায়িত্ব নিয়ে থাকতে হয়। আখেরাতের বিষয়েও তারা অনেক দায়িত্বশীল। কিন্তু বর্তমান সময়ে পুরুষদের মধ্যে তাদের দায়দাযিত্ব সম্পর্কে অনেক উদাসীন থাকতে দেখা যায়। মুফতী মনসূরুল হক তার লিখিত ইশাআতুস সুন্নাহ নামক বইতে এই বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। এখানে তারই কিছু এখানে তুলে ধরা হলো-
পুরুষদের বর্জনীয় অভ্যাসগুলো
পুরুষরা অলসতা বশত: বা কর্ম ব্যস্ততার অজুহাতে বা গাফলতির কারণে ঈমান শিক্ষা করে না এবং ফরযে আইন পরিমাণ ইলম অর্জন করে না। অথচ শরী‘আত এটা ফরয ঘোষণা করেছে এবং এ ব্যাপারে কোন হিলা বাহানা গ্রহণযোগ্য নয়। উল্লেখ্য পাঁচটি বিষয় শিক্ষা করা ফরযে আইন যথা: ঈমান, ইবাদাত, হালাল রিযিক, বান্দার হক ও আত্মশুদ্ধি।
নিজের বিবি বাচ্চাদের দ্বীনী জরুরী তা‘লীম দেয়া থেকে উদাসীন থাকে অথচ এটাও তার উপর ফরয দায়িত্ব।
আত্মসমালোচনা না করে অপরের কাজ-কর্মের সমালোচনায় আনন্দ বোধ করে। আর এর দ্বারা যে গীবতের গুনাহ হচ্ছে সে কথা ভাবতেও চায় না। তেমনিভাবে অন্যের ব্যাপারে কু-ধারণা করে গুনাহগার হয়। সালামের অভ্যাস উম্মত থেকে বিদায় নিচ্ছে, যা ছিল গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। অপর দিকে অনেকে তো সালামের উত্তরই দেয় না, আর কেউ দিলেও ঘাড় নেড়ে বা মনে মনে দেয়। অথচ সালামের উত্তর শুনিয়ে দেয়া ওয়াজিব।
স্ত্রী থেকে নিজের হক পাওনা থেকে বেশি আদায় করে কিন্তু তার উপর স্ত্রীর যে অধিকার আছে তা আদায় করতে রাজি না। বরং অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের উপর জুলুম করে থাকে। এটা অন্যায়।
সাংসারিক কোন কাজে পরিবারের অন্য কোন সদস্যের সাথে পরামর্শ করে না। যার কারণে পারস্পরিক অন্তঃকলহ বেড়ে যায়। স্ত্রী ও বুঝমান সন্তানদের সাথে পরামর্শ করবে, তার পর যেটা ভালো বুঝে আসে, যেটার মধ্যে কল্যাণ মনে হয় সেটার ফায়সালা দিবে।
নিজের বাবা মায়ের খেদমত স্ত্রীর উপর ফরয মনে করে, অথচ বাবা-মার খেদমত ছেলের দায়িত্ব , স্ত্রীর দায়িত্ব নয়। স্ত্রীর দায়িত্ব হলো স্বামীর খেদমত করা এবং সুযোগ মত নিজ পিতা মাতার খোঁজ-খবর রাখা।
অনেক বোকা পুরুষ বিবাহের পর নিজ বাবা-মা, ভাই-বোনকে পর ভাবতে শুরু করে। আর শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দেরকে আপন মনে করে। এমনটা করা মোটেও ঠিক নয়। কারণ বাবা-মা, ভাই-বোনের ভালবাসা স্বার্থহীন হয়ে থাকে, কিন্তু শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের ভালবাসা অনেক সময় এমন হয় না। তাই উভয়কুলের আত্মীয়দের তাদের প্রাপ্য হক যথাযথভাবে দেয়া কর্তব্য।
সন্তান ছেলে হওয়ার ব্যাপারে বেশি আগ্রহ থাকে, পক্ষান্তরে মেয়ে হলে স্ত্রীকে দোষারোপ করতে থাকে। অথচ ছেলে বা মেয়ে হওয়া আল্লাহর ইচ্ছা, এতে স্ত্রীর কোন দখল নেই। অপর দিকে মেয়ে সন্তানের ফযীলত অনেক বেশি, মেয়ে সন্তান লালন পালন ও দ্বীনী তা‘লীমকে বেহেশতের সনদ বলা হয়েছে।
যৌবনের তাড়নায় ভোগ বিলাসে মত্ত থাকে। ইসলামের হুকুম আহকাম মেনে চলে না। ইসলামী জীবন যাপন বার্ধক্যের জন্য গচ্ছিত রাখে। যেমন যুবক অবস্থায় হজ্জ ফরয হলেও তা আদায় করা বার্ধক্যের সময়ের দায়িত্ব মনে করে, অথচ এটা গুনাহের কাজ। তাছাড়া লম্বা হায়াতের গ্যারান্টি কী? উল্লেখ্য যে, যে বছর হজ্জ ফরয হয় সে বছর হজ্জে যাওয়া ওয়াজিব, দেরি করা গুনাহ।
অনেক পুরুষ স্ত্রীদের অন্ধভক্ত হয়ে থাকে। কোন প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়া সবক্ষেত্রে স্ত্রীর কথাকে প্রাধান্য দিয়ে পিতা-মাতা, ভাই -বোনদের সাথে মহা ঝগড়া বাধিয়ে দেয়। এমনটা হওয়া মোটেও কাম্য নয়। বরং সব সময় স্ত্রীর অভিযোগ যাচাই করে তার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। নচেৎ লোকদের সামনে বেকুব সাব্যস্ত হতে হয়।
বিয়ের মজলিসে বেশি পরিমাণ মহরানা নির্ধারণ করা সামাজিক মর্যাদার বিষয় হিসেবে দেখা হয়। অথচ এটা মর্যাদার কোন বিষয় নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী ও কন্যাদের সর্বোচ্চ মহর ছিল দেড়শত তোলা রুপা বা তার সমমূল্য। তাছাড়া মোটা অংকের মহর ধার্যকালে অধিকাংশ লোকের তা পরিশোধ করার নিয়ত থাকে না যা অনেক বড় গুনাহ। বিয়ের মজলিসে নগদ আদায়কৃত মহরকেই যথেষ্ট মনে করা হয়। অবশিষ্ট মহর আদায় করা সাধারনত পুরুষরা জরুরী মনে করে না। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামী প্রথম রাত্রেই কিংবা পরে কোন অন্তরঙ্গ মুহূর্তে স্ত্রী থেকে মহর মাফ করিয়ে নেয়। অথচ পুরুষ হয়ে মেয়েলোকের কাছে পাওনা মুক্তির ভিক্ষা চাওয়া কেমন আত্মমর্যাদাবোধের পরিচায়ক তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল- হারামের তোয়াক্কা করে না। ন্যায়- অন্যায় যে পথেই পয়সা আসে সেটাই গ্রহণ করে থাকে এবং নিজের উপার্জনের মাধ্যমকেই রিযিকদাতা ভাবে। যে কারণে তা নষ্ট হলে পেরেশানির সীমা থাকে না অথচ এগুলো মাধ্যম বা রিযিক পৌঁছানোর পিয়ন মাত্র। আসল রিযিকদাতা হলেন মহান রাব্বুল আলামীন। কারো রিযিকের একটা পথ বন্ধ হলে তিনি আরো পথ খুলে দেন।
পুরুষেরা যখন কিছুটা বয়স্ক হয়ে যায়, এবং কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তখন সর্বক্ষেত্রে তার কথাকেই সত্য বলে মনে করে। বাস্তবতা যাচাই না করে তার কথামত অন্যের উপর চড়াও হয়, যা জুলুমের শামিল। এই দুর্বলতা থেকে জ্ঞানীলোকেরাও মুক্ত নয়।
অনেকে পিতা- মাতাকে সম্মান করে না। তাদের খোঁজ-খবর রাখে না। অথচ পিতা-মাতার সন্তুষ্টি ছাড়া জান্নাতে যাওয়া যাবে না। এ জন্য পিতা-মাতার হক সমূহ সন্তানকে শিক্ষা দেওয়া জরুরী। পিতা-মাতার হায়াতে সাতটি হক এবং মৃত্যুর পরে আরো সাতটি হক রয়েছে।
অনেক বদ মেজাযী পুরুষ সামান্য কারণে স্ত্রীকে মার-পিট করে থাকে। এমনকি রাগের মাথায় তিন তালাক দিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। এজাতীয় পুরুষরা আল্লাহর স্পষ্ট হুকুম “আর স্ত্রীর সাথে সৎভাবে জীবন যাপন কর (সূরা নিসা, আয়াত ১৯) এর উপর আমল করছে না এবং আল্লাহর দয়া ও করুণা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অনেক ভবঘুরে স্বামীরা নিয়মিত সংসারের খোঁজ খবর রাখে না। তাদের হক আদায়ের কোন তোয়াক্কা করে না। অনেক মূর্খ মানুষ এটাকে বলে আল্লাহর উপর ভরসা করি। যা শরীআত বিরোধী কথা। এটাকে শরীআতে তাওয়াক্কুল বলা হয় না। অপর দিকে কিছু পুরুষ বিবিকে চাকুরীতে পাঠান। তাদের বিবিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেপর্দাভাবে পয়সা রোজগার করেন। এটা খুবই গর্হিত কাজ। কারণ বাড়ির বাইরে গিয়ে এভাবে চাকুরী করা তাদের দায়িত্বও নয় এবং তা জায়িযও নেই।
অনেক ভাই, বোনদের পাওনা মীরাস আদায় করতে চায় না। অথচ বোনদের পাওনা আদায় করা ভাইদের উপর ফরয দায়িত্ব। এটা না করলে তাদের রিযিক হারাম মিশ্রিত হয়ে যায় এবং জান ও মালের বরকত নষ্ট হয়ে যায়। আরো দুঃখজনক কথা হলো, অনেক জালিম পিতাও নিজের মেয়েকে মাহরূম করতে বা কম দিতে চেষ্টা করে থাকে অথচ হাদীস অনুযায়ী এটা সরাসরি জাহান্নামে যাওয়ার রাস্তা।
পিতামাতার উপর সন্তানের অন্যতম হক হলো, তাদেরকে জরুরত পরিমাণ দ্বীনী ইলম শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং শরী‘আতের আদব কায়দা শিক্ষা দেয়া। কিন্তু অধিকাংশ পিতা-মাতা এ সম্পর্কে উদাসীন। এমনকি সন্তানরা বে-নামাযী হলে পিতামাতার কোন পেরেশানি দেখা যায় না।
অনেক পুরুষ স্ত্রী, সন্তানের নাজায়িয দাবী পুরা করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। অথচ স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে সৃষ্টির বাধ্য হওয়ার মধ্যে কোন ফায়দা নেই। বরং এতে পরকালের আযাব বৃদ্ধি করা হয়, যার মধ্যে বিবি বাচ্চারা শরীক হবে না। তবে তাদের আযাব তারা ভিন্নভাবে পাবে।
স্বামীরা স্ত্রীদের দায়িত্ব তথা সংসার সামলানোকে ছোট নজরে দেখে এবং এটা স্ত্রীর দায়িত্ব মনে করে তাই এটার কোন মূল্যায়নও করে না। এবং কখনোই স্ত্রীর রান্নাবান্নার এবং অন্যান্য ভালো কাজের শুকরিয়া আদায় ও প্রশংসা করতে চায় না। এতে স্ত্রীরা সাংসারিক কাজে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। অথচ স্বামীর সামান্য প্রশংসায় স্ত্রী হাজারো কষ্টের কাজ হাসি মুখে আঞ্জাম দিতে পারে।
অনেকে বিয়ের পর স্ত্রী পক্ষ থেকে যৌতুক গ্রহণ করে। কেউ কেউ যৌতুকটাই ভিন্ন নামে ভিন্নভাবে গ্রহণ করে। অথচ চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বা কৌশল করে কারো থেকে ধন-সম্পদ হাসিল করা হারাম।
পুরুষরা সাধারণত বিবাহের জন্য পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দৈহিক সৌন্দর্য ও বিত্তবৈভবকে দ্বীনদারীর উপরে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। অথচ হাদীসে দ্বীনদারীকে সৌন্দর্য ও সম্পদের উপর অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে এবং এরই মধ্যে কামিয়াবী নিহিত আছে বলা হয়েছে। এর ব্যতিক্রম করলে সুখ শান্তি তো হয়ই না বরং দুনিয়া ও আখিরাত ধ্বংস হয়।
অনেক উচ্চ শিক্ষিত লোকেরা দ্বীনের ব্যাপারে স্বেচ্ছাচারী হয়ে থাকে, দ্বীনী কোন সমস্যায় আলেমদের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না। নিজের আত্মার ব্যাধির চিকিৎসার জন্য (যা ফরযে আইন) কোন বুজুর্গ লোকের সান্নিধ্যে যাওয়া প্রয়োজনীয় বা জরুরী কিছু মনে করে না। অথচ আত্মশুদ্ধি অর্জন না করার দরুন “রিয়া” বা লোক দেখান অন্তঃব্যধির কারণে, সারা জীবনের সকল ইবাদত-বন্দেগী নষ্ট হয়ে যায় । যেমন, হাদীসে পাকে যে তিন ব্যাক্তিকে সর্ব প্রথম জাহান্নামী বলা হয়েছে তারা আত্মশুদ্ধি না করানোর অপরাধে এ শাস্তির উপযুক্ত বিবেচিত হবে।
যারা কোন আল্লাহওয়ালা বুযুর্গ এর সাথে সম্পর্ক রাখে কিংবা তাবলীগে কয়েক চিল্লা সময় লাগায়, তাদের অনেকের হালাত এই যে, তারা নিজেদেরকে দ্বীনী ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞানী মনে করে এবং নিজেকে অনেক কিছু মনে করে যা তাকাব্বুর এর শামিল। এমনকি কেউ কেউ অন্য আলেমদের সহীহ কথা-বার্তাও মানতে চায়না। তাদের কথা সুকৌশলে প্রত্যাখ্যান করে এবং তাদের ভুল অনুসন্ধানের চেষ্টা করে। এটা মারাত্মক অপরাধ। সঠিক কথা যেই বলুক না কেন তা গ্রহণ করা জরুরী।
সুশীল সমাজের অনেকে গৃহ পরিচারিকাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করে থাকে, আর বাইরে মানবাধিকার কর্মী হিসাবে পুরষ্কার গ্রহণ করে। তাদের কথায় ও কাজে মিল না থাকায় তারা মুনাফিক সাব্যস্ত হয়।
অনেক নব্য শিক্ষিত লোকেরা কুরআন হাদীসের বাংলা অনুবাদ ও ব্যাখ্যা পড়ে নিজেকে ইসলামী চিন্তাবিদ মনে করে। এমনকি হাদীস ও ফিকহের অনেক বিষয়ে দ্বীনের বিশেষজ্ঞ তথা হক্কানী আলেমদের সাথে তর্কে লিপ্ত হয় । এদের ব্যাপারে হাদীসে কঠোর ধমকি এসেছে । এদের উচিত হক্কানী উলামাদের সমালোচনা ছেড়ে দিয়ে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করা।
অনেকে দ্বীন শেখার জন্য আলেমদের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করে না। বরং বিভিন্ন ইসলামী (?) টিভি চ্যানেল বা ইন্টারনেট প্রোগ্রামকে দ্বীন শেখার মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করে এবং এসব চ্যানেলের কতিপয় লেকচারারকে এবং কিছু উলামায়ে “ছু” কে নিজেদের ধর্মগুরু মনে করে। অথচ এই সবগুলোই গোমরাহির মাধ্যম। কিয়ামত পর্যন্ত ঈমান ও আমল হাসিলের একমাত্র পথ হক্কানী উলামায়ে কিরামের সাহচর্য।
সাধারণ মানুষ ব্যবসা, লেন- দেন, বিবাহ, তালাক ইত্যাদির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে এর হুকুম আহকাম সম্পর্কে উলামাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে না। যখন কঠিন কোন সমস্যায় নিপতিত হয়, তখন আলেমদের কাছে ছুটে আসে অথচ পূর্বেই যদি সে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে নিত, তাহলে হয়তো এই সমস্যার সম্মুখীন হতো না। অথবা সমাধান দেয়া সহজ হতো।
ছেলেরা মনে করে পর্দা করা মেয়েদের দায়িত্ব। আর তাদের দায়িত্ব হলো রাস্তায় বের হয়ে মেয়েদের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকা। অথচ কুরআনে পর্দার আলোচনায় মহান রাব্বুল আলামীন আগে পুরুষদের সম্বোধন করে বলেছেন, “তোমরা তোমাদের দৃষ্টিকে নত করো। এবং কু-দৃষ্টিকে হারাম ও লানতের কাজ ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া বিবাহপূর্ব দেখা-সাক্ষাত, কথা-বার্তা, সম্পর্ক করা কুরআনে হারাম করা হয়েছে।
অনেকে মনে করে তার মধ্যে কোন দোষ নেই । অথচ তাকাব্বুর, রিয়া ইত্যাদি আত্মার ব্যাধিতে সে ভয়ংকরভাবে আক্রান্ত । কিন্তু হক্কানী শাইখদের সুহবতে না যাওয়ায় সে নিজেকে ফেরেশতা ভেবে বসে আছে।
যুবকদের মধ্যে মিথ্যার আশ্রয়ে বয়স কমানো, আর বৃদ্ধদের মধ্যে বয়স বাড়ানোর বেশ প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। উভয়টা ধোকা হওয়ার কারণে হারাম।
স্ত্রী সম্ভোগ সাধারণভাবে জায়েয হলেও এ ব্যাপারে উত্তম হলো এ কাজটা ‘নিজেকে গুনাহ থেকে বাঁচানো, স্ত্রীর হক আদায় এবং নেক সন্তান লাভের নিয়তে করা ’। সেক্ষেত্রে এটা অনেক বড় ইবাদাত হিসাবে গণ্য হবে এবং আল্লাহ এধরণের লোকের সাহায্যের দায়িত্ব নেন।
অনেকে শেষ জীবনে নিজের ওয়ারিশদের জন্য কোন বিশেষ সম্পদের ওসিয়্যত করে থাকে। অথচ ওয়ারিশদের জন্য ওসিয়্যত করা জায়িয নেই। আবার অনেকে হায়াতে সম্পদ বণ্টন করতে গিয়ে শরীয়ত সম্মত কারণ ছাড়া সন্তানদের মাঝে কম বেশি করে বণ্টন করে থাকে যা অনুচিত। এতে বান্দার হক নষ্ট করা হয়। হায়াতে সম্পদ বণ্টন করতে চাইলে ছেলে মেয়ে সকলকে সমান দেয়া উত্তম।