হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বিবি
মহান আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসুল দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন মানুষের হেদায়াতের জন্য। তাদের একত্ববাদের দাওয়াত ও শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন। ঠিক তেমিনভাবে অনেক নেককার মহিলাও দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। তাদের মধ্যেও আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য মুজিজা দিয়েছিলেন। যেগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। এখানে তেমনিভাবে আল্লাহর কিছু প্রিয় নেককার মহিলাদের কাহিনী ও তাদের শিক্ষা তুলে ধরা হলো।
হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বিবি
খানায়ে কা’বা নির্মাণের পর হযরত ইব্রাহীম খালীলুল্লাহ আরও দুইবার মক্কায় আগমন করেন। কিন্তু একবারও পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ ঘটে নাই। প্রথম বার এসে হযরত ইসমাঈলের বিবিকে বাড়িতে পেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি অবস্থায় কালাতি-পাত করছো? উত্তরে তিনি বললেন, আমরা অত্যন্ত মুছিবতের ভিতর কালযাপন করছি।
অতঃপর হযরত ইব্রাহীম খালীলুল্লাহ বললেন, আচ্ছা তোমার স্বামী (হযরত ইসমাঈল) বাড়ি আসলে আমার সালাম বলিও এবং এটাও বলিও যে, তিনি (খালীলুল্লাহ) বলেছেন, আপনার ঘরের চৌকাঠ বদলে ফেলতে। কিছুদিন পর হযরত ইসমাঈল (আঃ) বাড়ি আসলেন, বিবির নিকট থেকে বিস্তারিত খবর অবগত হলেন।
অতঃপর হযরত ইসমাঈল (আঃ) বললেন, উক্ত আগন্তুক আমার পিতা এবং চৌকাঠ তুমি নিজে। তিনি এই কথাই বললেন যে, আমি যেন তোমাকে পরিত্যাগ করি। এরপর হযরত ইসমাঈল এই বিবিকে তালাক দিয়ে অন্য এক বিবাহ করলেন।
নব-বধূকে বাড়িতে রেখে তিনি পুনরায় বিদেশে বাহির হলেন। ইতিমধ্যে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আগমন করলেন। নব-বধূকে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি অবস্থায় কালাতিপাত করছো? হযরত ইসমাইল (আঃ) এর বিবি উত্তর করলেন, আল্লাহ্ তা’আলার শোকর যে, আমরা সুখেই কালযাপন করছি। হযরত ইবরাহীম আলাইহিসসালাম তার জন্য দো’আ করলেন এবং বললেন, তোমার স্বামী বাড়ি আসলে আমার সালাম জানাইও এবং এটাও বলিও যে, সে যেন তার ঘরের চৌকাঠ ঠিকই রাখে।
অল্পদিন পরেই হযরত ইসমাঈল বাড়ি আসলেন এবং যাবতীয় বিষয় অবগত হলেন। তারপর বললেন, উক্ত আগন্তুক আমার পিতা এবং উক্ত চৌকাঠ তুমি নিজেই। অর্থাৎ, তিনি বলেছেন, তোমাকে আমার নিকট রাখতে। এখানে শিক্ষণীয় বিষয় এটাই যে, প্রথমা বিবির না-শুকরির কারণে এক নবীর অসন্তুষ্টির দরুন অন্য নবী তাকে পরিত্যাগ করলেন। পক্ষান্তরে দ্বিতীয়া বিবি শুকরগোযার হওয়ার পরিণামে এক নবীর সন্তুষ্টি ও দো’আর বরকতে অন্য নবী তাকে স্ত্রীরূপে রাখা মোনাসেব মনে করলেন। অতএব, প্রত্যেক আল্লাহ্- বিশ্বাসী মানুষের কর্তব্য সর্বাবস্থায়ই ধৈর্য সহকারে রাযী থেকে আল্লাহ্ তাআলার শোকর গোযার হওয়া। এটাই অতি উত্তম পন্থা।
নেককার মহিলাদের কাহিনী ও তাদের জীবনী
• হযরত হাওয়া (আঃ) • হযরত সারা (আঃ) • হযরত হাজেরা (আঃ) • হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বিবি • বাদশাহ্ নমরুদের কন্যা • আইয়ূব নবীর স্ত্রী বিবি রহিমা • হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর খালা • হযরত মূসা (আঃ)-এর মাতা • হযরত মূসা (আঃ)-এর বোন • হযরত মূসা (আঃ)-এর বিবি ছফুরা • হযরত বিবি আছিয়া • ফেরাউনের কন্যা ও বাঁদী • হযরত মূসার এক বৃদ্ধা লস্কর • হাইসূরের ভগ্নী • হযরত বিলকিস • বনি-ইসরাইলের এক দাসী • বনি-ইসরাইলের এক বুদ্ধিমতী নারী • হযরত বিবি মারইয়াম • হযরত খাদিজা • হযরত সওদা • হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা • হযরত হাফসা • হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ • হযরত যোয়ায়রিয়াহ • হযরত মায়মুনাহ • হযরত সাফিয়া • হযরত যয়নব • হযরত রোকেয়া • হযরত উম্মে কুলসুম • হযরত ফাতেমা (রাঃ) • হযরত হালিমা সাদিয়া •
তথ্যসূত্র
- বেহেশতী জেওর • লেখক: হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহ.) • অনুবাদক: হযরত মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী (রহ.)