Saturday, November 16, 2024

সন্তানকে ইলমে দীন শিক্ষা না দেয়ার ক্ষতি

সন্তানকে ইলমে দীন শিক্ষা না দেয়ার ক্ষতি

প্রত্যেক পিতা-মাতার উপর নিজ সন্তানকে ইলমে দীন শিক্ষা দেয়া ফরজ। যাতে করে সন্তান পিতা-মাতার স্বীয় ঈমান ও আমল-আখলাক রপ্ত করার পাশাপাশি জীবন হায়াতে তাদের খিদমতের হক আদায় করতে সক্ষম হয় এবং তার ইন্‌তিকালের পর তাদের জানাযার নামায পড়িয়ে বিগলিত অন্তরে মহান আল্লাহ্‌র  নিকট কান্নাকাটি করে তাদের মাগফিরাতের জন্য দু’আ করতে পারে; তাদের কাফন-দাফন সবকিছু সঠিকভাবে সুন্নত মুতাবিক করতে পারে এবং কবরে-হাশরে নেক সন্তান পিতা-মাতার জন্য সদকায়ে জারিয়া হয়ে তাদের নাজাতের উসিলা হতে পারে।

পক্ষান্তরে পিতা-মাতা যদি তাদের এ ফরজ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে আল্লাহ্‌ তা’আলার ঘোষণা অনুযায়ী এটা সন্তানকে হত্যা করার সমতুল্য অপরাধ-এবং এটা সন্তানের প্রতি স্পষ্ট জুলুম এবং তার হক ও অধিকার আদায়ে চরম ব্যর্থতা হয়, যার খেসারতে পিতা-মাতা দুনিয়া ও আখিরাতে পদে পদে বিপদ ও আজাবের সম্মুখীন হবে। দুনিয়াতে নিজেদের দীন-ধর্ম দুর্বল হতে হতে শেষ পর্যন্ত বেদীন হয়ে যেতে পারে এবং সন্তানের বদ দীনী আমলের কারণে কবরে-হাশরে লা’নত ও আজাবের পাত্র সাব্যস্ত হয়ে যেতে পারে। আল্লাহ তা’আলা সকলকে হিফাজত করুন। সন্তানকে ইলমে দীন শিক্ষা না দেয়ার দুনিয়াবী ও পরকালীন ক্ষতি সম্পর্কে নিম্নে আলোকপাত করা হচ্ছেঃ

দুনিয়াবী ক্ষতি

মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,

وَ لَا تَقْتُلُوْۤا اَوْلَادَكُمْ مِّنْ اِمْلَاقٍ ؕ نَحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَ اِیَّاهُمْ ۚ ………(الأنعام:١٥١)

“তোমরা স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্র্যের কারণে হত্যা করো না আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে রিযিক দিয়ে যাচ্ছি।”(সূরাহ আনআম-১৫১)

উক্ত আয়াতের সারমর্ম

সন্তানকে দীনী  শিক্ষা ও উত্তম চরিত্র গঠন থেকে মাহরূম করা এবং তাকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়া সন্তানকে হত্যা করার শামিল। উল্লেখিত আয়াতে বর্ণিত সন্তানকে হত্যা যে গুরুতর অপরাধ ও কঠোর গুনাহ, তা বাহ্যিক হত্যা ও মেরে ফেলার অর্থে তো সুস্পষ্টই, যেমন- আইয়ামে জাহেলিয়াতে সন্তানকে জীবিত কবর দেয়া হতো এবং বর্তমানে উন্নত বিশ্বে সুখী ও সমৃদ্ধ পরিবার গড়ার লক্ষ্যে ফ্যামিলি প্লানিং-এর নামে নানাভাবে সন্তানদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, তেমনিভাবে সন্তানকে চারিত্রিকভাবে হত্যা করার ব্যাপারটিও এ আয়াতের ব্যাপকতার মধ্যে শামিল। অর্থাৎ সন্তানকে দীনী ও কুরআন শিক্ষা-দীক্ষা না দেয়া এবং তার চরিত্র গঠন না করা। যদ্দরুন আল্লাহ্‌, রাসূল ও পরকালের ব্যাপারে সে উদাসীন হয়ে পড়ে এবং চরিত্রহীন ও নির্লজ্জ কাজে জড়িত হয়ে পড়ে- এটাও সন্তানকে হত্যার চাইতেও গুরুতর। বাহ্যিক হত্যার দ্বারা পিতা এক দোষী সাব্যস্ত হয়, কিন্তু চারিত্রিক হত্যার দ্বারা পিতা-পুত্র উভয়ই দোষী হয় এবং উভয়ের উভয় জগত ধ্বংস হয়। বর্তমানে যারা সন্তানকে দীনী শিক্ষা দিচ্ছে না, বরং তাদেরকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দিচ্ছেন, কিংবা দুচারটা পয়সার লোভে এমন ভ্রান্ত শিক্ষা দিচ্ছেন-যার ফলে তাদের ইসলামী চরিত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।


👉 আরো পড়তে পারেন: কুরআন-সুন্নাহর আলোকে কাযা নামায পড়ার বিধান


সহীহ আক্বীদা- বিশ্বাসের তা’লীম না দেয়ার তারা নাস্তিকতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, বরং অনেক সন্তান বাহ্যিকভাবে মুসলমান দাবী করলেও বাস্তবে ইসলামের গণ্ডির বাইরে চলে গিয়ে জাতীয় বোধ হারিয়ে চারটা পয়সার বিনিময়ে কাফির-খৃষ্টানদের সহযোগী হয়ে দেশ, ইসলাম ও মুসলমানিত্ব ধ্বংসের পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে- এ ধরনের ভ্রান্তির শিক্ষাদাতা পিতা-মাতা নিঃসন্দেহে সন্তানকে হত্যা করার অপরাধে অপরাধী। তাদের মনে রাখতে হবে, বাহ্যিক হত্যার প্রভাবে তো শুধু ক্ষণস্থায়ী জাগতিক জীবন বিপর্যস্ত হয়, কিন্তু চারিত্রিক হত্যা সন্তানের পারলৌকিক ও চিরস্থায়ী জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। সন্তান হত্যার এ অপরাধের কারণে পিতা-মাতা জালিম ও সন্তান মজলুম সাব্যস্ত হয় এবং এ পরিণতিতে আজীবন পিতা-মাতাকে সন্তানের জুলুম-অত্যাচার সহ্য করতে বাধ্য হতে হয়। অর্থাৎ সন্তানের হক আদায় না করায় সন্তান জালিম হয়ে যায়, আর পিতা-মাতা নির্যাতিত মজলুম হয়ে জীবন কাটায়। সন্তানের সেবা পাওয়ার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়।

এ সম্পর্কে হাদিসে একটি ঘটনা পাওয়া যায়ঃ হযরত উমর ফারুক রাযি. তখন খলীফাতুল মুসলিমীন। তাঁর আদালতে এক মজলূম পিতা জালিম সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলো। খলিফা সন্তানকে তলব করে এর কৈফিয়ত চাইলেন। উত্তরে সন্তান জিজ্ঞাসা করলো, হে আমীরুল মুমিনীন! সন্তানের নিকট কি শুধু পিতারই পাওনা বা অধিকার আছে, নাকি পিতার নিকট সন্তানেরও কোন পাওনা আছে? খলীফা জওয়াব দিলেন, হ্যাঁ, সন্তানেরও পিতার নিকট পাওনা আছে, যথা-সন্তানের খাতিরে অর্থাৎ সন্তানকে আল্লাহ ওয়ালা বানানোর জন্য পিতার কর্তব্য-দীনদার স্বামীভক্ত কোন রমণীকে বিবাহ করা এবং সন্তান জন্ম নেয়ার পর তার জন্য উত্তম নাম রাখা– যাতে তার চরিত্র সুন্দর হয়। কেননা, নামের তাছির ব্যক্তির উপর পরিস্ফুট হয়ে থাকে। তারপর সন্তান পড়ার বয়সে পৌঁছলে, তাকে দীনী তালীম দেয়া। অন্য এক রিওয়ায়াতে আছে, তারপর যখন সন্তান প্রাপ্ত বয়সে পৌঁছে, তখন তাকে দীনদার পাত্র-পাত্রীর সাথে বিবাহ দেয়া। বালেগ হওয়ার পর পিতা-মাতা সন্তানের বিবাহের ব্যবস্থা না করলে, তার চোখ, কান, হাত-পা ও অন্যান্য অঙ্গ দ্বারা যত প্রকার গুনাহ সংগঠিত হবে, তা সমানভাবে পিতা-মাতার উপরেও বর্তাবে। পিতার নিকট সন্তানের এ অধিকারগুলো জানার পর ঐ জালিম সন্তান বলতে লাগলো- হে আমীরুল মুমিনীন! আমার পিতা তো এর কোন একটি অধিকারও আদায় করেননি।


👉 আরো পড়তে পারেন: নাসির গাজীর বুদ্ধিদীপ্ত ও শিক্ষণীয় গল্পসমূহ


প্রথমতঃ তিনি আমার খাতিরে দীনদার কোন মহিলাকে বিবাহ করেননি। বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে একটা বেপর্দা চরিত্রহীনা মহিলাকে তিনি বিবাহ করেছেন। তারপর যখন আমি জন্ম নিয়েছি, আমার নাম রেখেছেন জু’উল অর্থাৎ পায়খানার কিড়া। এরপরে যখন আমার বয়স হয়েছে, তখন আমাকে কোনরূপ দীনী তা’লীম না দিয়ে আমাকে কাম-কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। ছেলের এ বক্তব্য যাচাই করে এর সত্যতা উপলব্ধি করে খলীফা এ মামলা খারিজ করে দিলেন এবং পিতাকে বলে দিলেন-তুমিই প্রথমে নিজের সন্তানের উপর জুলুম করেছো, এর ফল তোমাকে ভোগ করতেই হবে।” (হযরত থানবী রহ. রচিত তরবিয়তে আওলাদ-১১৯ পৃষ্টা)

এ হাদীস স্পষ্ট প্রমাণ করে যে, জুলুমের পরিণাম সারা জীবন জুলুম ভোগ করা অবশ্যম্ভাবী। সুতরাং যারা সন্তানকে দুনিয়ার লোভে দীনী তা’লীম থেকে মাহরূম করছে, তারা দুনিয়া-আখিরাতের কোথাও এ সন্তান দ্বারা লাভবান হতে পারবে না। উভয় জগতে সন্তান তার জন্য মুসীবতের কারণ হবে। এ জন্য নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনে, “যখন ইলম উঠে যাবে, মূর্খতা বাড়বে, তখন কিয়ামতের বড় বড় আলামতসমূহ প্রকাশ পাবে। তম্মধ্যে একটি এই যে, দীনী শিক্ষা বিমুখ সন্তানেরা স্ত্রীর আনুগত্য করবে, আর মায়ের নাফরমানী করবে। অপর দিকে তারা বন্ধু-বান্ধবের খুবই খাতির-তোয়াজ করবে, কিন্তু পিতার কোন খোঁজ-খবর নিবে না।” (তিরমিযী শরীফ ২২১৬)

অধুনা অনেক দীনদার পিতা-মাতাকে দেখা যাচ্ছে- তারা তাদের ছেলেমেয়েকে দীনী শিক্ষা দিতে নারাজ। পিতা-মাতা খুবই দীনদার। হাজী সাহেব, তাহাজ্জুদ গুজার ইত্যাদি। কিন্তু ছেলে-মেয়েকে আল্লাহওয়ালা বানানোর কোন ফিকির তাদের নেই। তারা সন্তানদেরকে নির্দ্বিধায় ইংরেজদের হাতে বা ইংরেজদের সিলেবাসে শিক্ষা লাভ করার জন্য স্বাধীনভাবে ছেড়ে রেখেছেন। না তাকে ঈমান আমলের কোন তা’লীম দিচ্ছেন, না তাকে নাফরমানী থেকে বাঁচানোর জন্য কোনরূপ চেষ্টা চালাচ্ছেন। এর পরিণতি এই হচ্ছে যে, ছেলে-মেয়ের বদ দীনীর কারণে পিতা-মাতার দীনদারী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আস্তে আস্তে তাদের দীনদারী সুনাম নষ্ট হয়ে বদনাম শুরু হবেই। সন্তানের কারণেই তার ঘরে টেলিভিশন, ভিসিআর ঢুকবে। ছেলের রূপসী বদ্বদীন স্ত্রীর কারণে দীনদারী পরিবেশ নষ্ট হতে থাকবে। সম্পূর্ণ ঘরটা নাচগানের একটা আসর হয়ে যাবে। অনেক লোকের একটা আসর হয়ে যাবে। অনেক লোককে দেখা গেছে-বউয়ের বদদ্বীনী আচরণের কারণে ঘরে বসে ২/৪ রাকা’আত নফল নামায পড়ার মত সুযোগও তাদের নেই। অথচ এই ঘর বহু কষ্টের বিনিময়ে তিনিই তৈরি করেছেন। কিন্তু আজ তিনি সেখান থেকে বিতাড়িত। অথবা ছেলে-মেয়েদের এসব নাফরমানী নীরবে তাকে সহ্য করতে হচ্ছে। এগুলোকে মনে না চাইলেও তখন তার মেনে নিয়ে “বোবা শয়তানের” উপাধির পাত্র হচ্ছেন।



অন্যায়ের সমর্থন অন্যায়, আর শেষ পর্যন্ত তা অন্যায়েই লিপ্ত করে। অন্যায়ের পরিণতিতে এবং সন্তানের প্রতি মহব্বতের কারণে শেষ পর্যন্ত অনেক পিতা-মাতাও নিজেদের দীনদারীকে বাদ দিয়ে জান্নাতের আয়েশ-আরামের কথা ভুলে গিয়ে সন্তান কর্তৃক আমদানিকৃত গুনাহের আসরে শরীক হয়ে দুনিয়াবী হারাম আনন্দ উল্লাসে মত্ত হয়ে উঠেন। (আল্লাহ তা’আলা সকলকে হিফাজত করেন।)

সন্তানের বদদীনীর কারণে পিতা-মাতার দীনদারী নষ্ট হতে পারে, এ দিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ্‌ তা’আলা হযরত মুসা আ. ও খিজির আ.-এর ঘটনার এক স্থানে ইরশাদ করেন,

فَانْطَلَقَا ٝ حَتّٰۤی اِذَا لَقِیَا غُلٰمًا فَقَتَلَهٗ ۙ قَالَ اَقَتَلْتَ نَفْسًا زَکِیَّۃًۢ بِغَیْرِ نَفْسٍ ؕ لَقَدْ جِئْتَ شَیْئًا نُّكْرًا ﴿۷۴﴾

“অতঃপর মূসা ও খিজির আ. চলতে লাগলেন। অবশেষে একটি বালককে দেখতে পেলেন। তখন খিজির আ. উক্ত বালকটিকে হত্যা করলেন। মুসা আ. বললেন- আপনি একটা নিষ্পাপ জীবনকে বিনা কারণে হত্যা করলেন?”  (সুরাহ কাহাফ-৭৪)

অতঃপর উভয়ের বিচ্ছিন্নতার মুহূর্তে হযরত খিজির আ. পূর্ব ওয়াদা অনুযায়ী তার প্রত্যেকটি আশ্চর্যজনক কাজের ব্যাখ্যা প্রদান করলেন। তখন বালক হত্যার কারণ উল্লেখ করলেন এই যে, তার পিতা-মাতা ছিলো ঈমানদার। আমি আশংকা করলাম যে, সে অবাধ্যতা ও কুফর দ্বারা “তার পিতা-মাতাকে প্রভাবিত করবে।

وَ اَمَّا الْغُلٰمُ فَکَانَ اَبَوٰهُ مُؤْمِنَیْنِ فَخَشِیْنَاۤ اَنْ یُّرْهِقَهُمَا طُغْیَانًا وَّكُفْرًا ﴿ۚ۸۰﴾ (الكهف:٨٠)

সুতরাং তার পিতা-মাতার ঈমানের হিফাজতের লক্ষ্যে আল্লাহ্‌র নির্দেশে আমি বালকটিকে হত্যা করেছি”  (সুরাহ কাহাফ-৮০)

তাফসীরে মাআরিফুল কুরআনে উক্ত কারণ এভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, হযরত খিযির আ. বালকটির হত্যার কারণ বর্ণনা করলেন যে, তার প্রকৃতিতে কুফর ও পিতা-মাতার অবাধ্যতা নিহিত ছিল, তার পিতা-মাতা ছিলো নেককার ও ঈমানদার। হযরত খিযির আ. বলেন, আমার আশংকা ছিল যে, ছেলেটি বড় হয়ে নেককার ও ঈমানদার পিতা-মাতাকে বিব্রত করবে এবং কষ্ট দিবে। সে নিজে কুফরী কাজে লিপ্ত হয়ে পিতা-মাতার জন্যে ফিতনা হয়ে দাঁড়াবে এবং তার ভালোবাসায় পিতা-মাতার ঈমানও বিপন্ন হয়ে পড়বে। (৫/২৬০)


ডাউনলোড করুন তাফসীরের কিতাবসমূহ


সন্তানকে ইলমে দীন থেকে বঞ্চিত করলে, পিতা-মাতা অন্তিম শয্যায়ও তার খিদমত থেকে বঞ্চিত থাকে। তারা পিতা-মাতার মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে তাদেরকে কালিমার তালকীন দিতে পারে না। তাদের পার্শ্বে বসে সূরাহ ইয়াসীন তিলাওয়াত করলে, আছানীর সাথে তাদের রুহ বের হতে পারে। কিন্তু কুরআন বঞ্চিত সন্তান থেকে পিতা-মাতা এ সেবাও লাভ করতে পারে না। আল্লাহ্‌ তা’আলা ও তার রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ হচ্ছে- পিতা-মাতার জানাযার নামায তার সন্তান পড়াবে। কারণ- সন্তান যে দিল নিয়ে আল্লাহ্‌র দরবারে ক্রন্দন করতে পারে, এটা দুনিয়ার অন্য কারো দ্বারা সম্ভব নয়। ইলম বঞ্চিত সন্তান থেকে পিতা-মাতা জানাযার ক্রন্দন ইত্যাদিও আশা করতে পারে না। আর মুর্দাকে কবরে ডান কাতে শোয়ানো জরুরী অর্থাৎ জীবিত মানুষ যেভাবে সুন্নাত তরীকায় ডান কাতে শোয়, মুর্দাকে সে ভাবে শোয়াতে হয়। তার সীনা ও চেহারা সবই কেবলার দিকে রাখা জরুরী। সন্তানকে কুরআনী শিক্ষা থেকে মাহরূম করলে, পিতা-মাতা সঠিক তরীকায় দাফন হওয়া থেকেও বঞ্চিত হয়। তাছাড়া পিতার নাজাত ও মাগফিরাতের জন্য সন্তান কুরআনে কারীমের সহীহ তিলাওয়াত থেকে দুরে রাখলে, তারা পিতা-মাতার ছাওয়াব রিসানীর জন্য কুলখানী, চল্লিশা ইত্যাদি বিদআতী ও হিন্দুয়ানী তরীকার আশ্রয় নিলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সহীহ তরীকায় পিতা-মাতাকে ছাওয়াব রিসানী করতে সক্ষম হয় না। পিতা-মাতা তাদের থেকে শরীআত সম্মত পন্থায় কোন উপকার হাসিল করতে পারে না। সন্তানকে দীনী ইলম থেকে মাহরূম রাখার কারণে পিতা-মাতা এভাবে অপূরণীয় বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

সূত্র

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,606FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles