হাইপারটেনশন বা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। হাইপারটেনশন বা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রথমে এর কারণগুলো সম্বন্ধে ভালোভাবে জানা প্রয়োজন।
হাইপারটেনশন বা উচ্চরক্তচাপের প্রধান কারণসমূহ
৯৫% উচ্চরক্তচাপের প্রাথমিক এবং প্রধান কারণ হচ্ছে নিম্নরূপ
- পারিবারিক ইতিহাস অর্থাৎ মা-বাবার উচ্চরক্তচাপ থাকলে সন্তানদের হাইপারটেনশন বা উচ্চরক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- অভ্যাসগত কারণ যেমন— বেশি লবণ খাওয়া, অ্যালকোহলে আসক্তি, মানসিক চাপ, শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
- মানুষের দেহে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের যে স্থান সেখানে কোনো সমস্যা দেখা দিলে (যেমন Renin Angiotensin system)।
আরো পড়তে পারেন: শুধু হাড়ের জন্যই নয়, হার্টের স্বাস্থ্যেও ভূমিকা রাখে ক্যালসিয়াম
সেকেন্ডারি কারণসমূহ
সাধারণত মানুষের দেহের কোনো বিশেষ অঙ্গে সঠিক কার্যকলাপ হতে না পারলে এ সমস্যা হয়ে থাকে । যেমন:
- কিডনির সমস্যা
- এন্ডোক্রাইন বা হরমোনজনিত সমস্যা
- হার্টের বা হৃৎপিণ্ডের সমস্যা
- ওষুধ: কিছু ওষুধ যেমন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, স্টেরয়েড ইত্যাদির পাশ্বপ্রতিক্রিয়ায় উচ্চরক্তচাপ হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায়ও অনেকের উচ্চরক্তচাপ হয়ে থাকে । একে একলাম্পশিয়া ও প্রিএকলাম্পশিয়া বলে ।
উচ্চরক্তচাপের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- হার্ট অ্যাটাক
- হার্ট ফেইলিওর
- ব্রেইন স্ট্রোক
- কিডনির অসুখ
- কিডনি ফেইলিওর
- চোখের অসুখ ।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করণীয়
- কাঁচা লবণ ও অ্যালকোহল খাবেন না।
- ধূমপান বর্জন করুন।
- ফ্যাট জাতীয় খাবার যেমন তেল, ঘি, গরুর মাংস, খাসির মাংস, ডিমের হলুদ অংশ কম খাবেন ।
- মুরগির মাংস, ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ, শাক-সবজি, ফলমূল বেশি খাবেন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- দৈনিক হাঁটার অভ্যাস করুন। এছাড়া সাঁতার কাটা এবং অন্যান্য
- ব্যায়ামও করতে পারেন।
- পারিবারিক ইতিহাস থাকলে আগে থেকেই সতর্ক হবেন।
- আপনি উচ্চরক্তচাপের রোগী হয়ে থাকলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শে থেকে নিয়মিত চিকিৎসা করাবেন।
- প্রতিদিন রক্তচাপ মাপুন। নিজ বাড়িতে একটি রক্তচাপ মাপার যন্ত্র কিনে নেবেন।
- চিকিৎসকের নির্দেশিত ওষুধ নিয়মিত সেবন করবেন। ‘আজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে তাই ওষুধ খাব না’ এ মনোভাব বর্জন করুন। কারণ যে কোনো সময় আপনার রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে ব্রেইন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকে আপনার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।