বাংলাদেশের জনসাধারণের মধ্যে চর্মজনিত সমস্যা খুব বেশি। এর কারণ হল স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। কী কারণে রোগটি হচ্ছে যদি সে- সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় তাহলে চর্মের বিরক্তিকর অনেক সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
টিনিয়া পেডিস
ট্রাইকোফাইটন রুব্রাম এবং ট্রাইকোফাইটন মেনটাগরোফাইট নামক ছত্রাক এ চর্মরোগটি ঘটিয়ে তাকে। যেসব স্থানে লোকজন খালিপায়ে হাটে সেখানে সংক্রমণের মাত্রা বেশি পরিলক্ষিত হয়। জিমনেশিয়াম, সুইমিংপুল কিংবা একই বাথরুম অনেকে ব্যবহার করলে এ-ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে। এক্ষেত্রে আঙুলের খাঁজসমূহে প্রদাহসহ চুলকানি হয়। স্থানসমূহ ভেজা থাকে। সাধারণত আঙুলসমূহের মধ্যবর্তী পাতলা সংযোজক ত্বক, পায়ের পাতার পার্শ্ববর্তী এলাকা, পায়ের চতুর্থ ও পঞ্চম আঙুলের মধ্যবর্তী স্থান আক্রান্ত হয় । ফুসকুড়ি কিংবা ঘা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী মামড়িও থাকতে পারে। ত্বক খুব বেশি শক্ত হতে পারে আবার নাও হতে পারে। সংক্রমণ কেবল ত্বকের টিস্যুতে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। গরমে এ-রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং তা আঙুলের নখে ছড়াতে পারে । এর ফলে পায়ের বিকৃত গঠন ও নখ পুরু হতে পারে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে যথাসম্ভব সতর্কতা নিতে হবে। যথাসম্ভব পা শুষ্ক রাখতে হবে। সূতির মোজা ও স্যান্ডেল ব্যবহার করতে হবে। জুতো না-পরাই ভালো। শোষক পাউডার বেশ সহায়ক। পা সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে। দিনে কমপক্ষে একবার ধুতে হবে এবং পুরোপুরি শুকাতে হবে। আঙুলসমূহের মধ্যবর্তী স্থানসমূহ কখনোই ভেজা রাখা চলবে না। চর্মবিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ছত্রাকবিরোধী ওষুধ খেতে হবে এবং চিকিৎসা সম্পন্ন করার আগে তা বন্ধ করা যাবে না।
টিনিয়া করপোরিস
সাধারণত ছত্রাক-সংক্রমিক জন্তু দ্বারা এ রোগ ছড়িয়ে থাকে, আবার মানুষের দ্বারাও ছড়াতে পারে । শিশু এবং বয়স্করা সমানভাবে এ-রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ দেখা দেয়। মাথায়, চিবুকে, মুখমণ্ডলে, গলা কিংবা পিঠে—মোটামুটি শরীরের যে-কোনো অংশে এ চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। উপসর্গ হিসেবে উঁচু ঘা, মামড়ি কিংবা গোলাকার ঘা দেখা যায়। আকৃতি দেখতে রিঙের মতো। রিং আড়াআড়িভাবে হতে পারে এবং অনেকগুলো বৃত্ত সৃষ্টি করতে পারে। পুঁজপূর্ণ ফুসকুড়ি থাকে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে ছত্রাকবিরোধী মলম বেশ কাজ দেয় । সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল ওষুধটির সঠিকমাত্রায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যবহার । সাধারণত দু- সপ্তাহ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় । তবে যেসব রোগীর শরীরে দৌর্বল্যকর রোগ রয়েছে তাদের টিনিয়া করপোরিস নির্মূল করা এক কঠিন ব্যাপার। এসব রোগীকে দীর্ঘদিন, যেমন চার সপ্তাহ একটানা স্থানিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এতেও যদি সংক্রমণ চলে না যায় তাহলে মুখে ছত্রাকবিরোধী ওষুধও খেতে হবে।
টিনিয়া ক্রুরিস
সাধারণত মোটা লোকদের এবং যারা আঁটসাঁট পোশাক পরে থাকে কিংবা ভেজা কাপড় পরে থাকে তাদের এ রোগটি বেশি হয়। রোগের প্রাদুর্ভাব সাধারণত শরীরের দুপাশে এবং এক লাইন বরাবর দেখা দেয়। জননাঙ্গের কাছের ত্বকে প্রদাহ হয়, পুরুষদের ক্ষেত্রে সচরাচর ঘটে অণ্ডথলির ত্বকে। পায়ু এলাকা, নিতম্ব এবং পেটে রোগটি বিস্তৃত হতে পারে। ত্বকে চুলকানি ও প্রদাহ থাকে। ফুসকুড়ি দেখা দেয়। পুঁজ থাকে। আক্রান্ত স্থানটি লাল, এমনকি বাদামি হতে পারে । চিকিৎসাক্ষেত্রে স্থানিক ছত্রাকবিরোধী ওষুধ বেশ কার্যকর। ঘর্ষণ এবং চুলকানি এড়াতে রোগীকে ঢিলা পোশাক পরতে হবে। যদি আক্রান্ত স্থানে অতিরিক্ত রস ক্ষরণ হয় তাহলে শোষণক্ষম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
টিনিয়া ভার্সিকালার
পিটাইরোস পরাম অরবিক্যুলারি নামক একধরনের ছত্রাক এ রোগটির জন্যে দায়ী । এক্ষেত্রে রোগীর বুকে, পিঠে কিংবা কেবল মুখে সাদা, তামাটে কিংবা বাদামি সমতল মসৃণ দাগ দেখা দেয়। মামড়ি থাকতে পারে, নাও পারে। চিকিৎসাক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের স্থানিক ছত্রাকবিরোধী ওষুধ ব্যবহার করা হয়। তবে ছত্রাকটি স্বাভাবিকভাবে ত্বকে অতিরিক্ত পরিমাণ থাকে বিধায় বারবার এই চর্মরোগটি দেখা দেয়।
কিউটেনিওয়াস ক্যানডিডিয়াসিস
কারণ
ক্যানডিডা এলবিকান, যদিও অন্যান্য ক্যানডিডা শ্রেণী দায়ী হতে পারে ।
উপসর্গ
সংক্রমণের স্থানের সাথে ক্যানডিডিয়াসিসের উপস্থিতির ভিন্নতা লক্ষণীয়। এটা সাধারণত উপস্থিত থাকে চর্মের ভাঁজের গরম ভেজা এলাকায়। স্থানটিতে লাল ক্ষত থাকে এবং চুলকানি হয়। ক্ষতের প্রান্তসমূহে সাধারণত ছোট, লাল ফুসকুড়ি থাকে। ক্যানডিডিয়াসিস ঘটে বোগলে, স্তনের নিচে, কুঁচকিতে, পেরিনিয়ামে, নিতম্বের খাঁজসমূহে এবং হাত ও পায়ের আঙুলের মাঝে
শিশুদের তোয়ালে জড়িয়ে রাখার ফলে যে লাল ফুসকুড়ি ওঠে, ক্ষত ব্যাপক ছড়াতে পারে এবং মলদ্বারের চারপাশ, পেরিনিয়াম, নিতম্বের খাঁজ, জননাঙ্গ, উরুর ভেতরের অংশ ও নিতম্ব এলাকা আক্রান্ত হয় । বৈশিষ্ট্যসূচকভাবে প্রদাহ উজ্জ্বল লাল হয়, চর্ম চকচকে দেখায় এবং সচরাচর ক্ষতে ফুসকুড়ি ও পুঁজপূর্ণ ফুসকুড়ি থাকে। ক্যানডিডাজনিত যোনিদেশের ওষ্ঠসমূহের প্রদাহ সচরাচর ঘটে মহিলাদের গর্ভাবস্থা ও গর্ভনিরোধক বড়ি অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে এবং ডায়াবেটিস মেলাইটাস থাকলে । এর প্রধান উপসর্গ হল যোনি এবং তার ওষ্ঠের প্রদাহের সাথে সাদা কিংবা হলুদ নিঃসরণ। ক্যানডিডা নখে সংক্রমণ ঘটায়। এর ফলে নখের পার্শ্ববর্তী চর্ম ব্যথা হয়, লাল হয় ও ফুলে যায় এবং পুঁজ বের হয়। নখের নিচে সংক্রমণ হলে নখশয্যা থেকে নখ আলাদা হয়ে যেতে পারে এবং নখের নিচে সাদা কিংবা হলুদবর্ণ দেখা যায় ।
চিকিৎসা
কিউটেনিওয়াস ক্যানডিডিয়াসিসে স্থানিক মনিলিয়াল-বিরোধী ওষুধ ভালো কাজ করে। ক্যানডিডাজনিত যোনি ও যোনির ওষ্ঠের প্রদাহের চিকিৎসায় অ্যান্টিমনিলিয়াল ভ্যাজাইনাল ট্যাবলেট দেয়া যেতে পারে।
এটোপিক ডার্মাটাইটিস
কারণ
এটোপিক ডার্মাটাইটিসের কারণ অজ্ঞাত। বংশগত ব্যাপার এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকটি অ্যালার্জিগত রোগের ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস থাকে ।
উপসর্গ
এটোপিক ডার্মাটাইটিস সাধারণত শিশুদের হয়। এক্ষেত্রে মুখমণ্ডল, মাথার ত্বক এবং হাত-পায়ে লাল পানিপূর্ণ কঠিন ক্ষত হয়। প্রাদুর্ভাবের সময় সাধারণত চুলকানি হয়। শিশু বেড়ে ওঠার সাথে সংশ্লিষ্ট স্থানের পরিবর্তন হয়। ৮/১০ মাস বয়সে যখন শিশু হামাগুড়ি দেয়, বাহু ও পায়ের বাইরের স্তর আক্রান্ত হয় এবং বয়স্ক শিশু তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কনুইয়ের সামনের অংশ এবং হাঁটুর পেছনের অংশ, এমনকি মুখমণ্ডল ও গলা আক্রান্ত হতে পারে । শুকনো ত্বক এই রোগের একটি বৈশিষ্ট্য ।
দীর্ঘস্থায়ী, অনেকদিনের এটোপিক ডার্মাটাইটিসের ক্ষেত্রে কব্জি, গোড়ালি, হাঁটুর পেছনভাগ এবং কনুইয়ের সম্মুখভাগে পুরু, খসখসে এবং অতিরঞ্জক চর্মের বিকাশ ঘটতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী এটোপিক ডার্মাটাইটিসের রোগীর হারপিস সিমপ্লেক্স থাকলে ভয়াবহভাবে কাঁপিয়ে জ্বর আসে এবং সেক্ষেত্রে সিস্টেমিক অ্যান্টিভাইরাল থেরাপির প্রয়োজন হয়।
চিকিৎসা
চিকিৎসার প্রথম উদ্দেশ্য হল শুষ্কতা ও চুলকানি কমিয়ে আনা। রোগীর গোসল সীমিত করতে হবে—বিশেষ করে শীতের মাসে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে ত্বক কোমল করে এমন পদার্থ ও পিচ্ছিল উপাদান ব্যবহার করতে হবে। কর্কশ, অমসৃণ কাপড় পরিহার করতে হবে এবং সেইসাথে ডার্মাটাইটিস (চর্মের প্রদাহ) কমাতে স্থানিক করটিকোস্টেরয়েড ও চুলকানি কমাতে মুখে খাবার অ্যান্টিহিস্টামিন ব্যবহার করতে হবে।
কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস
কারণ
অ্যালার্জি উৎপাদক দ্রব্যে কিংবা জ্বালাতনকর দ্রব্যের সংস্পর্শে থাকা।
উপসর্গ
উপসর্গ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। চর্ম লালবর্ণ হতে পারে, পানি জমতে পারে এবং ফুসকুড়িসহ প্রদাহ হতে পারে। ডার্মাটাইটিস (চর্মের প্রদাহ) প্রথমে ঘটে ত্বকের যে জায়গাটি সরাসরি দ্রব্যের সংস্পর্শে আসে, পরে তা
অন্যান্য এলাকায় ছড়াতে পারে ।
ক্ষতিকর বস্তু সরিয়ে নেবার পর লালবর্ণ সাধারণত মিলিয়ে যায় এবং ফুসকুড়ি ফেটে যায় ও শক্তদানা সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন বস্তুসমূহের সংস্পর্শে
থাকলে সংক্রমণ হয়ে থাকে ।
চিকিৎসা
জরুরি পরিস্থিতিতে ভেজা-সেঁক ব্যথা এবং চুলকানি উপশম করতে পারে। তীব্র প্রদাহ কমানোর জন্যে কখনো মুখে খাবার করটিকো স্টেরয়েড উপকারী। ডার্মাটাইটিস জরুরি না হলে এবং ফোস্কা মিলিয়ে গেলে স্থানিক করটিকো স্টেরয়েড উপকারী ।
সোরিয়াসিস
কারণ
সোরিয়াসিসের কারণ অজ্ঞাত। তবে এর সাথে বংশগত ব্যাপার জড়িত, কারণ সোরিয়াসিস সচরাচর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘটে।
উপসর্গ
সোরিয়াসিস চর্মের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা যা সাধারণত ১০ থেকে ৪০ বছর _বয়সের মধ্যে ঘটে। তবে যে-কোনো বয়সের রোগীকে আক্রমণ করতে পারে। সোরিয়াসিসে আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকে মামড়ি হয়। এই মামড়িসমূহে ঘষা লাগলে খসে পড়ে এবং সাদা, ঝকঝকে অভ্রচূর্ণের মতো লাগে। মামড়ি ঝরে পড়লে বা সরিয়ে ফেললে নিচে যে ত্বক বেরিয়ে পড়ে তার রং হয় লালচে এবং তার মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্তক্ষরণ ঘটতে দেখা যায়। সচরাচর এই রোগ দেখা দেয় কনুই, হাঁটু, নিতম্বের খাঁজ এবং মাথার ত্বকে। নখের রং
হলুদবর্ণের হয়। নখ বেঢপ হয়ে যায়। সেইসাথে নখের ওপর ছোটখাটো গর্ত দেখা যায় । আঘাতজনিত টিস্যুতে সোরিয়াসিস হতে পারে। শিশুদের ! ক্ষেত্রে রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় শ্বাসতন্ত্রের উপরিঅংশের অসুস্থতা এবং ফ্যারিংস-এ প্রদাহ দেখা দেয়।
চিকিৎসা
সোরিয়াসিসের চিকিৎসা রোগের আক্রান্ত স্থান এবং এর তীব্রতার ওপর নির্ভর করে। সীমাবদ্ধ ক্ষতের জন্যে কেবলমাত্র স্থানিক করটিকোস্টেরয়েড কিংবা কেরাটোলাইটিক এজেন্টের সাথে মিশ্রণ দেখা যায় । ব্যাপক সোরিয়াসিসের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র আলট্রাভায়োলেট-বি ব্যবহার করা যেতে পারে কিংবা কোলটারের সাথে অথবা এনথ্রালিনের সাথে মিশিয়ে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যান্য চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে সোরলেন ইউভি, মেথোট্রিক্সেট এবং ইট্রোটিনেট ।
একজিমা যে-কোনো ত্বকের প্রদাহ থেকে হতে পারে ।
একজিমা
হাতের একজিমা
উপসর্গ
হাতের এক কিংবা অন্যান্য চর্মরোগের সাথে একত্রিত থাকতে পারে। হাতের একজিমা শরীরগত কিংবা শরীর-বহির্ভূত কারণের জন্যে হতে পারে। যেমন দীর্ঘ সময় পানি এবং ডিটারজেন্টে উন্মুক্ত থাকার ফলে হতে পারে। উপসর্গসমূহের মধ্যে ত্বকে শুষ্কতা, চুলকানি, ফাটল দেখা দেয়, ত্বক লাল হয়ে যায় এবং পানি জমতে পারে।
চিকিৎসা
যে কারণে একজিমা হয়েছে তা বের করতে পারলে উক্ত বস্তু পরিহার করলে পুনরায় রোগের আক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। ত্বক কোমল করার উপাদান এবং স্থানিক গ্লুকোকরটিকয়েড সচরাচর ব্যবহার করা হয় । ভেজা-সেঁক ব্যথা ও চুলকানি সারাতে সাহায্য করে । ঘরের কাজ করার সময় হাতে দস্তানা পরা উচিত ।
নিউ ম্যুলার একজিমা
এর কারণ অজ্ঞাত। তবে শুষ্কতা এবং বাইরের অস্বস্তিকর দ্রব্য সম্ভবত এর জন্যে দায়ী ।
চিকিৎসা
স্থানিক স্টেরয়েডে ভালো কাজ হয় না বিধায় কেউ কেউ অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন ।
ইমপেটিগো
কারণ
বিটা হেমোলাইটিক স্ট্রেপটোকক্কাই কিংবা স্টাফাইলোকক্কাস অরিয়াস নামক ব্যাকটেরিয়া ।
উপসর্গ
ত্বকে লাল ফুসকুড়ি দেখা দেয় এবং তা বড় পানিপূর্ণ ও পুঁজপূর্ণ হয় । দেখতে ফোস্কার মতো লাগে। ফুসকুড়ি এবং ফোস্কা ফেটে যায়। সেইসাথে শক্ত, গোল, মধুবর্ণের ক্ষত দেখা যায়। ক্ষত যে-কোনো স্থানে হতে পারে, তবে বেশি হয় মুখমণ্ডল, বাহু ও পায়ে ।
চিকিৎসা
ভিজিয়ে ধীরে ধীরে আবর্জনা সরিয়ে ফেলতে হবে। সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে ।
স্ক্যাবিস
কারণ
সারকোপটেস স্ক্যাবি জীবাণু যা কেবলমাত্র চর্মগর্তে দেখা যায়। সংক্রমণ প্রধানত ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে ছড়ায়। এসব পরজীবী ক্ষুদ্র কীট আশ্রয় থেকে দূরে সরে গেলে ২/৩ দিনের বেশি বাঁচতে পারে না ।
উপসর্গ
স্ক্যাবিসে তীব্র চুলকানি হয়, বিশেষ করে রাতে চুলকানি খুব বেড়ে যায় । চুলকানির ফলে নখের আঁচড়ে ফুসকুড়ি ওঠে, শরীরে লাল দানা সৃষ্টি হয়। একজিমা হতে পারে বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। আঙুল, হাত, কনুই, বোগলের সামনের ভাঁজে, মহিলাদের স্তনবৃন্তে, পুরুষদের লিঙ্গে এবং অণ্ডথলিতে, নিতম্বে ও গোড়ালিতে চুলকানি হয় ।
চিকিৎসা
সঠিক পরজীবীনাশক ওষুধ ব্যবহার করে চিকিৎসা করা হয়। পারিবারিক সদস্যদের সবাইকে প্রয়োজনে চিকিৎসা করা হয়।
উপসংহার
চর্মরোগ রোগীর জন্যে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। দীর্ঘস্থায়ী চর্মরোগের জন্যে কেউ কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। চর্মরোগ দেখা দিলে তাকে মোটেই উপেক্ষা করা ঠিক হবে না। আপনার নিজের কিংবা পরিবারের যে- কারোরই হোক না কেন প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ৷
[…] 👉 আরো পড়তে পারেন: চর্মরোগ থেকে রক্ষা পাবেন কীভাবে […]