উপমহাদের প্রখ্যাত আলেম, হাকিমুল উম্মত হিসেবে খ্যাত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রচিত মুসলমানের হাসি বই-এ নাসির গাজীর অনেকগুলো বুদ্ধিদীপ্ত ও শিক্ষণীয় গল্প স্থান পেয়েছে। গল্পগুলো থেকে শিক্ষণীয় অনেক বিষয় রয়েছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের জন্য অনেক হাস্যরসাত্মক শিক্ষণীয় গল্প রয়েছে। সেখান থেকে গল্পগুলো এখানে তুলে ধরা হলো-
বাদশাহ’র ছেলের লেখাপড়া
এক দেশে ছিলেন এক বাদশাহ। বাদশাহর এক পুত্র সন্তান ছিল। পুত্রের জন্য অনেক শিক্ষক রেখেও তার লেখাপড়ার কোন উন্নতি দেখা গেল না।
বাদশাহ মহাবিপদে পড়লেন। তিনি উজির-নাজির সবাইকে ডেকে তার পুত্রের জন্য একজন ভাল শিক্ষক খুঁজতে বললেন।
এদিকে সেদেশে একদিন নাসির গাজী বেড়াতে এলেন। তার কানে গেল সে সমস্যার খবর। নাসির গাজী সুযোগ বুঝে একদিন বাদশাহর দরবারে হাজির হয়ে বললেন- জাঁহাপনা! আমি আপনার ছেলেকে পড়াতে চাই। কিন্তু যদি ৩ মাসের মধ্যে লেখাপড়া শিখাতে পারি, তাহলে আমাকে পাঁচ হাজার মহর দিতে হবে। এই প্রস্তাবে বাদশাহ রাজী হয়ে গেলেন।
নাসির গাজী বাদশাহর ছেলেকে প্রথম দিন পড়াতে গিয়ে বুঝে গেলেন- ছেলেটির পড়ালেখায় মন নেই। তার খেলাধুলায় মন বেশী।
নাসির গাজীর মাথায় একটা বুদ্ধি এসে গেল। তিনি ছাত্রকে বললেন, লেখাপড়া করে কোন লাভ নেই। চলো, আমরা ছাদে যাই। ছাদে গিয়ে ঘুড়ি উড়াব। ছেলে তো শুনে বেজায় খুশী।
নাসির গাজী বেশী করে ঘুড়ি বানিয়ে আনলেন এবং প্রত্যেক ঘুড়িতে ১টি করে সংখ্যা লিখলেন: ১, ২, ৩, ৪, ৫ ইত্যাদি। এরপর ১ নম্বর ঘুড়িটি নিয়ে এসে বললেন- আজ ১ নম্বর ঘুড়ি উড়াব। ভাল করে দেখে নাও-কোনটি ১ নম্বর ঘুড়ি। ছেলেটি কয়েকবার ঘুড়ি উড়াল, নামাল। এভাবে বাদশাহর ছেলে ১ নম্বর ঘুড়ি চিনে ফেলল।
নাসির গাজী আরেকদিন ২ নম্বর ঘুড়ি নিয়ে এলেন। তা বার বার উড়িয়ে ২ শিখালেন। এভাবে সংখ্যা শেখানোর পর আরো কিছু ঘুড়ি বানিয়ে অ, আ, লিখে আগের মত উড়াতে দিলেন। বাদশাহর ছেলে ঘুড়ি উড়িয়ে সব কণ্ঠস্থ করল। এভাবে ৩ মাস কেটে গেল।
এরপর নাসির গাজী বাদশাহর দরবারে হাজির হয়ে বললেন, আপনার ছেলের লেখাপড়ার ৩ মাস কেটে গিয়েছে। বাদশাহ বললেন, আমি তো দেখেছি- আপনি আমার ছেলেকে নিয়ে সারাদিন ঘুড়ি উড়ান। লেখাপড়া তো শিখাতে দেখিনি। তখন নাসির গাজী বললেন, আপনার পুত্রকে ডেকে ওর থেকে পড়া জিজ্ঞাসা করে দেখুন।
বাদশাহ ছেলেকে ডেকে এনে পড়া জিজ্ঞাসা করলেন। ছেলে একটা একটা করে সব বলে দিল।
বাদশাহ মহাখুশী হয়ে নাসির গাজীকে পাঁচ হাজার মহরের সাথে আরো এক হাজার মহর বেশী দিলেন। রাজদরবারের সবাই নাসির গাজীর বুদ্ধির প্রশংসা করতে লাগল।
নাসির গাজীর অন্যান্য গল্পসমূহ
- এক সিংহ ও পথচারীর গল্প ➜ পড়ুন
- জ্বি হুজুর! জ্বি হুজুর!! ➜ পড়ুন
- মূল্যবান সম্পদ ➜ পড়ুন
- আজ নগদ কাল বাকী ➜ পড়ুন
- মাছের মাথা-খাওয়ার লোভ ➜ পড়ুন
- ওয়াজ না করার ফন্দি ➜ পড়ুন
- একসাথে দু’জন ➜ পড়ুন
- হতবাক ইহুদি ➜ পড়ুন
- উচিত বিচার ➜ পড়ুন
- তিন টাকার সদাই ➜ পড়ুন
- বাদশাহ’র ছেলের লেখাপড়া ➜ পড়ুন
- ফুলদানির জন্য মৃত্যুদন্ড ➜ পড়ুন
- পন্ডিত খেতাবের বিড়ম্বনা ➜ পড়ুন
- সৎ লোকের সন্ধানে ➜ পড়ুন
- চৈতন্য ফিরে এল ➜ পড়ুন
- ঝাড়-ফুঁকের এ্যাকশন ➜ পড়ুন
- দিতে জানে না, নিতে জানে ➜ পড়ুন
- সম্পদের ওসীয়তনামা ➜ পড়ুন
- আল্লাহ যা করেন বান্দার মঙ্গলের জন্যেই করেন ➜ পড়ুন
- সব জায়গায় একই সূত্র ➜ পড়ুন
- চোর ধরার আজব বুদ্ধি ➜ পড়ুন
- দুনিয়া ধ্বংসের আগেই ধ্বংস ➜ পড়ুন
- অল্প সময়ের জন্য বিনা খরচে সুখের আস্বাদ ➜ পড়ুন
- পনের দিনের মজুরীর ভয়ে ➜ পড়ুন
- কুকুর তাড়ানো ভণ্ডপীর ➜ পড়ুন
- সব জায়গায় একই সূত্র ➜ পড়ুন
- পবিত্র কোরআনের আয়াতের ফুঁকের ক্ষমতা