ইসলামি ব্যাংক ও সুদভিত্তিক ব্যাংকিং পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করুন।

প্রশ্ন: ইসলামি ব্যাংক ও সুদভিত্তিক ব্যাংকিং পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করুন। বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



ইসলামি ব্যাংক ও সুদভিত্তিক ব্যাংকিং পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করুন।

ভূমিকা

ইসলামি ব্যাংকের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশী সুদমুক্ত লেনদেনের স্বার্থে। আল্লাহ পাক সুদকে সম্পূর্ণভাবে হারাম করেছেন। এমতাবস্থায় কোন মুসলমান সুদভিত্তিক লেনদেন করতেই পারে না। কিন্তু ইসলামি ব্যাংকের অনুপস্থিতিতে বাণিজ্যিক প্রয়োজনে বাধ্য হয়েই একজন মুসলমানকে সুদী ব্যাংকের সাথে লেনদেন করতে হয়। ইসলামি ব্যাংক এই দুর্বিসহ অবস্থা থেকে মুসলমানদের মুক্তি দেয় এবং সুদমুক্ত লেনদেনের সুযোগ তৈরী করে।

ইসলামি ব্যাংক ও সুদভিত্তিক ব্যাংকিং পদ্ধতির পার্থক্য

ইসলামি ব্যাংক ও প্রচলিত সুদভিত্তিক ব্যাংকের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। নানা দিক থেকে এ পার্থক্য দেখানো যেতে পারে। নিচে সে সব পার্থক্য বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-


No posts


উদ্দ্যেশ্যগত পার্থক্য

ইসলামি ব্যাংক ও প্রচলিত সুদভিত্তিক ব্যাংক উভয়ই মুনাফা অর্জনের উদ্যেশ্যে কাজ করে। তবে এক্ষেত্রে একটি মৌলিক পার্থক্য লক্ষণীয়। মুনাফা অর্জনই প্রচলিত ব্যাংকের প্রধান উদ্দ্যেশ্য। পক্ষান্তরে মুনাফা অর্জণ কোনক্রমেই একটি ইসলামি ব্যাংকের প্রধান উদ্দ্যেশ্য হতে পারে না। ইসলামি ব্যাংকের প্রধান উদ্দ্যেশ্য সুদমুক্ত আর্থিক লেনদেন সম্পাদনের মাধ্যমে পুঁজি সরবরাহকারী ও পুঁজি ব্যবহারকারীর ন্যায্য স্বার্থরক্ষার পাশাপাশি জনগণের ব্যাপক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিৎ করা।

তাত্বিক ভিত্তিগত পার্থক্য

প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা সুদের উপর প্রতিষ্ঠিত। আমানত গ্রহণ ও ঋণদানের সকল স্তরে সুদ হচেছ প্রধান বিবেচ্য ও উদ্দীপক উপাদান। পক্ষান্তরে, ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থায় সুদের কোন অস্তিত্ব নেই। বরং সত্যি বলতে সুদী শোষণের নিগড় থেকে মানুষকে মুক্তি দানের লক্ষ্যেই ইসলামি ব্যাংকের জন্ম। সুতরাং ইসলামি ব্যাংকিং এর কর্মকান্ডের কোন পর্যায়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোন প্রকার সুদের অস্তিত্ব থাকার প্রশ্নই ওঠে না।

তহবিলের উৎস বিষয়ক পার্থক্য

প্রচলিত সুদভিত্তিক ব্যাংকের তহবিলের প্রধান উৎস সাধারণত দুধরনের। এক, ইক্যুইটি তহবিল। যেসব উপায়ে প্রচলিত ব্যাংক ইক্যুইটি তহবিল সংগহ করে থাকে সেগুলি হলোঃ শেয়ার বিক্রয়ঃ প্রচলিত ব্যাংক শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহের মাধ্যমে এ জাতীয় তহবিল সংগ্রহ করে। এ তহবিলের বিপরীতে প্রচলিত ব্যাংক সাধারণত লভ্যাংশ ঘোষণা করে থাকে।



ডিবেজ্ঞার বিক্রয় সংক্রান্ত পার্থক্য

যেসব উপায়ে প্রচলিত ব্যাংক ঋণ তহবিল সংগ্রহ করে থাকে সেগুলো হলোঃ সংগৃহীত আমানতঃ প্রচলিত ব্যাংক বিভিন্ন প্রকার চলতি, সঞ্চয়ী মেয়াদী হিসাব খোলার মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্ৰহ করে। এছাড়া ডিপিএস জাতীয় বিভিন্ন স্কীমের মাধ্যমেও তারা তহবিল সংগহ করে থাকে। এ সব আমানতের বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদান করা হয়। কল মানি ঋণঃ সাময়িক অর্থ ঘাটতি মিটাবার জন্য প্রচলিত ব্যাংক অর্থবাজার থেকে অতি অল্প সময়ের জন্য ঋণ গ্রহণ করে থাকে। যেসব ব্যাংকের উদ্বৃত্ত নগদ তহবিল থাকে তারা নির্দিষ্ট হার সুদে বিনিয়োগের জন্য অথবা চাহিবা মাত্র পরিশোধের শর্তে তারল্য ঘাটতিযুক্ত ব্যাংকে ঋণ দিয়ে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণগ্রহণঃ সুদভিত্তিক বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ প্রয়োজনের মুহূর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দিষ্ট হারে সুদের বিপরীতে বাণিজ্যিক ব্যাংককে ঋণ দিয়ে থাকে।

সাংগঠনিক কাঠামোগত পার্থক্য

সাংগঠনিক কাঠামোর দিক থেকেও ইসলামি ব্যাংকের সাথে প্রচলিত সুদভিকি ব্যাংকের একটি পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। প্রচলিত ব্যাংকের পরিচালকমন্ডলী ব্যাংকের সকল নীতি-নির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থায় পরিচালকমন্ডলীর পাশাপাশি একটি শরীয়া কাউন্সিলও কার্যকর থাকে। শরীয়া কাউন্সিল কার্যত পরিচালক মন্ডলীর তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে কাজ করে। বিশেষ করে কোন ইসলামি ব্যাংক তার নানাবিধ কর্মকান্ড পরিচালনার বিভিন্ন পর্যায়ে শরীয়া নীতিমালা যথেষ্ট পরিমানে অনুসরণ করছে কি না তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব শরীয়া কাউেিলর। এর পাশাপাশি ইসলামি ব্যাংকের দৈনন্দিন গুরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য পরিচালক মন্ডলীর মধ্য থেকে একটি নির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়ে থাকে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

প্রকাশিত বইসমূহ


বিনিয়োগ নীতিমালা বিষয়ক পার্থক্য

প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সকল প্রকার বিনিয়োগ সুদভিত্তিক। সাধারণত ঋণগ্রহীতার আবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যাংক ঋণ দিয়ে থাকে। ঋণ গ্রহীতা ঋণের অর্থ ব্যবহার করে কোন লাভ অর্জণ করূক চাই না করূক ব্যাংক ঋণের অংকের উপর নির্দিষ্ট সময়ান্তে নির্দিষ্টহারে সুদ আদায় করবেই। পক্ষান্তরে, ইসলামি ব্যাংক সাধারণত ঋণে কোন অর্থ লগ্নি করে না। ইসলামি ব্যাংক কখনো কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিলে তা করজে হাসানা বা সুদমুক্ত ঋণ হিসাবেই দিয়ে থাকে। ইসলামি ব্যাংক সাধারণত তিনটি পদ্ধতিতে অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে । যেমন-

  • ক্রয়-বিক্রয় পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে ইসলামি ব্যাংক ঋণ দানের পরিবর্তে মক্কেলের পক্ষে তার দরকারী পণ্য বা বস্তু ক্রয় করে এবং ক্রয়কৃত পণ্য বা বস্তুর ক্রয়মূল্যের সাথে আনুষঙ্গিক খরচ যুক্তিসংগত ও উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে নির্ধারিত মুনাফা যোগ করে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণপূর্বক তা মক্কেলের কাছে বিক্রয় করে।
  • ভাড়া পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে ইসলামি ব্যাংক তার মালিকানাধীণ কোন সম্পদ মক্কেলের কাছে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাড়া দেয়। অথবা মক্কেলের ফরমায়েশ অনুযায়ী কোন সময় গাড়ী, নিজ নামে ক্রয় করে তা মক্কেলের নিকট ভাড়ায় খাটায়।


  • লাভ-লোকসানে অংশীদারিত্ব পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে ইসলামি ব্যাংক বিনিয়োগ গ্রহীতার সাথে এমনভাবে চুক্তিবদ্ধ হয় যাতে বিনিয়োগ থেকে অর্জিত লাভ ইসলামি ব্যাংক ও বিনিয়োগ গ্রহীতার মধ্যে পূর্ব নির্ধারিত অনুপাতে বণ্টিত হয়। পক্ষান্তরে, বিনিয়োগের যে কোন লোকসান মূলধনে অংশীদারিত্বের অনুপাতে উভয় পক্ষের মধ্যে বণ্টিত হয়।

উপসংহার

সুদ ভিত্তিক বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ সাধারণত সহায়ক জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান করেনা। যার অর্থ হলো, যারা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বা শিল্পপতি অথবা কমপক্ষে জামানত দেয়ার মত যথেষ্ট স্থাবর সম্পত্তি আছে সেই-ই শুধু ঋণ পাওয়ার যোগ্য। এ ব্যবস্থায় স্বল্প বিত্তের মানুষ ঋণ পায়না। সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেরও বেশীরভাগ মানুষ হয় বিত্তহীন নয়তো স্বল্পবিত্তের। ফলে সুদী ব্যাংকসমূহ থেকে তাদের ঋণ পাওয়ার সুযোগ একেবারে নেই বললেই চলে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য চাই জামানতবিহীন ঋণের নিশ্চয়তা। কেবল ইসলামি ব্যাংকই জামানতবিহীন সুদমুক্ত ঋণ ও লাভ-লোকসানে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিনিয়োগের নিশ্চয়তা দিতে সক্ষম।



• IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

ইসলামী ব্যাংকের পরিচয় দিন। ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করুন।

প্রশ্ন: ইসলামী ব্যাংকের পরিচয় দিন। ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করুন। বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



ইসলামী ব্যাংকের পরিচয় দিন। ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করুন।

ভূমিকা

ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা একটি ব্যতিক্রমধর্মী ব্যাংক ব্যবস্থা। ইসলামি শরী’আ অনুযায়ী এ ব্যাংক ব্যবস্থা পরিচালিত। ইসিলামের সুমহান নীতিমালা অনুযায়ী একটি সুদমুক্ত শোষণহীন সমাজ গড়ে তোলার পথে একটি বস্তুনিষ্ঠ প্রয়াস হচ্ছে ইসলামি ব্যাংক। ন্যায় ও ইনসাফের মাধ্যমে যুলম ও নিপীড়নমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তুলতে ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা একটি অনন্য সাধারণ ব্যবস্থা। একটি কল্যাণময় অর্থে-সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণে ইসলামি ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

ইসলামি ব্যাংকের পরিচয়

ইসলাম সম্মেলন সংস্থা (OIC) ইসলামি ব্যাংকের একটি সুনির্দিষ্ট ও সহজবোধ্য সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দিয়েছে। যা ১৯৭৮ সালে সেনেগালের রাজধানী ডাকারে ও.আই.সি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে অনুমোদিত ও গৃহীত হয়। তা হলো-

Islamic Bank is a financial institution whose statutes, rules and procedures expressly state its commitment to the principles of Islamic Shariah and to the banning of the receipt and payment of interest on any of its operations.

অর্থাৎ ইসলামি ব্যাংক এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যার মৌলিক বিধান, নীতিমালা, বৈশিষ্ট্য ও কর্মপদ্ধতিতে ইসলামি শরীআর মূলনীতি অনুসরণের সুষ্পষ্ট অঙ্গীকার থাকবে এবং যার সমুদয় কাজ-কর্ম, আদান-প্রদান হবে সুদের লেনদেন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।



ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অভ ইসলামি ব্যাংকস ইসলামি ব্যাংকের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছে,

ইসলামি ব্যাংক কার্যত একটি নতুন ব্যাংকিং ধারণা যা আর্থিক ও অন্যান্য লেনদেন ইসলামি শরীআর নীতিমালা সুষ্ঠুভাবে মেনে চলে। অধিকন্তু ব্যাংক যখন এ নীতিমালার আলোকে পরিচালিত হবে তখন বাস্তব জীবনে শরীআর নীতিমালা প্রয়োগ নিশ্চিত হতে হবে। ইসলামি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এ ব্যাংক কাজ করবে এবং এর মৌলিক উদ্দেশ্য জনগণের মাঝে ইসলামি চেতনার বিকাশ সাধনে ব্যাংক নিরন্তর কর্মরত থাকবে।

মালয়েশিয়ার ইসলামি ব্যাংকিং আইন কর্তৃক ১৯৮৩ সালে অনুমোদিত ইসলামি ব্যাংকের সংজ্ঞা হল- ইসলামি ব্যাংক এমন একটি কোম্পানী যা ‘ইসলামি ব্যাংকিং’ ব্যবসায় করে এবং যার একটি বৈধ লাইসেন্স আছে। আর ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবসায় হচ্ছে এমন এক ব্যবসা যার লক্ষ্য ও কর্মকান্ডের কোথাও এমন কোন উপাদান নেই যা ইসলাম অনুমোদন করে না।

ইসলামি ব্যাংক শরীআ ভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক ব্যবস্থা

ইসলামি ব্যাংক হচ্ছে- ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পরিচালিত সুদবিহীন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কেউ হয়তো মনে করতে পারেন যে, কোন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান থেকে সুদ প্রথাকে রহিত করা হলেই বুঝি তা ইসলামি ব্যাংক বা ইসলামি প্রতিষ্ঠান হয়ে যায়। আসলে তা নয়। কোন ব্যাংক বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানকে ইসলামিক হতে হলে তার যাবতীয় কর্মকান্ডের সকল স্তরেই ইসলামি শরীআর নীতিমালাকে অনুসরণ করতে হবে।


শিশুর আধুনিক, সুন্দর ও অর্থবহ নাম


কেউ যদি কোন প্রতিষ্ঠানকে ইসলামিক প্রতিষ্ঠান বলে দাবী করে কিংবা প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ড-এ ইসলাম শব্দ ব্যবহার করে অথবা প্রতিষ্ঠানের কিছু কিছু কর্মকান্ডে ইসলামি শরীআর নীতিমালা অনুসরণ করে, আবার কিছু কিছু কর্মকান্ডে ইসলামি শরীআর নীতিমালা উপেক্ষা করে চলে, তাহলে সেটিকে প্রকৃত ও সম্পূর্ণরূপে ইসলামি প্রতিষ্ঠান বলা যায় না। অবশ্য কোন প্রতিষ্ঠান যদি তার কিছু কিছু কর্মকান্ডে ইসলামি শরীআকে অনুসরণ করে, তাহলে সেটিকে আংকি ইসলামিক বলা যেতে পারে। একটি প্রতিষ্ঠান প্রকৃতপক্ষে এবং সম্পূর্ণরূপে ইসলামিক তখনই হবে, যখন সেটি তার কর্মকান্ডের সকল স্তরে ইসলামি শরীআর নীতিমালা পরিপূর্ণভাবে মেনে চলে এবং মেনে চলতে বাধ্য থাকে।

কেউ কেউ হয়তো মনে করে থাকেন যে, প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থাই তো লেনদেনের জন্য যথেষ্ট। কেননা, এ সকল ব্যাংকের মাধ্যমেই মানুষ তাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে পারে। সুতরাং ইসলামি ব্যাংকের আবার কি প্রয়োজন আছে?

এ প্রসংগে বলা যায় যে, ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক, ব্যক্তিগত, বাণিজ্যিক, পারস্পরিক সম্পর্ক, অধিকার প্রভৃতি সকল ক্ষেত্রেই মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা) জীবন বিধান দিয়েছেন যা মানব জাতির জন্যে কল্যাণকর। অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিধান তথা ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা কায়েম করতে হলে ইসলামি ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ইসলামি ব্যাংকিং হলো ইসলামি অর্থ ব্যবস্থার একটি দিক।



ইসলামি ব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই কিছু উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকে। ইসলামি ব্যাংকেরও কিছু উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আছে এবং সেগুলো সম্পূর্ণভাবে ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে হতে হবে। কেবলমাত্র মুনাফা অর্জন করা কিংবা সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়া ইসলামি ব্যাংকের মুখ্য উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নয়। ইসলামি ব্যাংকের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিম্নরূপ-

  • অর্থনীতি ও ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিধান পালন করা।
  • ব্যবসায় বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে ন্যায় বিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা।
  • গরীব, অসহায়, বেকার ও স্বল্প আয়ের লোকদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা।
  • ইসলামি পদ্ধতিতে উৎপাদনশীল ও কল্যাণকর খাতে অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করা।
  • সুদ বিহীন ও কল্যাণমুখী ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রবর্তন করা।
  • লাভ-লোকসানের অংশীদারিত্বে পুঁজি গঠন ও বিনিয়োগ করা।


  • অর্থ ব্যবস্থায় ধনীকে আরো ধনী হবার এবং গরীবকে আরো গরীব হবার পথ সৃষ্টি না করা।
  • শ্রমিকের মর্যাদা, অধিকার এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
  • ইসলামি ব্যাংককে বিশ্বের দরবারে ইসলামের একটি মডেল হিসেবে দাঁড় করানোর ব্যবস্থা করা।
  • অর্থনীতিতে শোষণ ও যুলমের অবসান ঘটিয়ে আদল ও ইনসাফ কাযেম করা।
  • মুসলিম বিশ্বে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত করে মুসলিম উম্মার উন্নতি ও সংহতি জোরদারে অবদান রাখা । এমনিভাবে প্রতিটি ইসলামি ব্যাংক ইসলামি শরীআর আলোকে তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারবে।

উপসংহার

বর্তমান বিশ্বে অন্তহীন সমস্যার উৎস হলো অর্থনীতি। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অর্থনৈতিক সামাজিক বৈষম্য, মুদ্রাস্ফীতি, শোষণ, যুলম, শ্রেণীগত সংঘাত এসবের ক্রমবর্ধমান চাপে বিশ্বমানবতা আজ বিপর্যস্ত। পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র কিংবা মানবরচিত অন্য কোন অর্থ ব্যবস্থাই মানবতার এ বিপর্যয়কে রোধ করতে পারেনি। এক্ষেত্রে বিশ্ব মানবতার একমাত্র মুক্তির পথ নিশ্চিত করতে পেরেছে আল্লাহ পাকের নির্দেশিত ও মহানবীর (সা) প্রবর্তিত ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা। ইসলামি ব্যাংকিং ইসলামি অর্থ ব্যবস্থারই একটি অংশ।



• IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

ইসলামি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য লিখুন। প্রচলিত ব্যাংক ও ইসলামি ব্যাংকের তুলনা উল্লেখ করুন।

    0

    প্রশ্ন: ইসলামি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য লিখুন। প্রচলিত ব্যাংক ও ইসলামি ব্যাংকের তুলনা উল্লেখ করুন। বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



    ইসলামি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য লিখুন। প্রচলিত ব্যাংক ও ইসলামি ব্যাংকের তুলনা উল্লেখ করুন।

    ভূমিকা

    ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা ইসলামি শরী’আত অনুযায়ী পরিচালিত। ইসলামের সুমহান নীতিমালা অনুযায়ী একটি সুদমুক্ত পোষণহীন সমাজ গড়ে তোলার পথে একটি বস্তুনিষ্ঠ প্রয়াস হচ্ছে ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা। ন্যায় ও ইনসাফের মাধ্যমে যুলম ও নিপীড়নমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তুলতে ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা একটি অনন্য সাধারণ ব্যবস্থা। একটি কল্যাণময় আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণে ইসলামি ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

    ইসলামি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য

    ব্যাংকিং ক্ষেত্রে ইসলামি ব্যাংক একটি নতুন সংযোজন হলেও প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এটি অনন্য বৈশিষ্ট্যের দাবি রাখে। তাই ইসলামি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা প্রয়োজন। ইসলামি ব্যাংকের কতগুলো আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। নিম্নে ইসলামি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা হলো-

    • ইসলামি ব্যাংকের লক্ষ্য – উদ্দেশ্য শরী’আতের আলোকে নির্ধারিত।
    • ইসলামি ব্যাংকের সকল লেনদেন সুদমুক্ত।
    • এ ব্যাংক কৃষি, শিল্প-বাণিজ্যে লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে মূলধন বিনিয়োগ করে বা অংশীদারিত্ব গ্রহণ করে।

    No posts


    • এ ব্যাংক নিজস্ব তহবিল দ্বারা যাকাত ফান্ড গঠন করে এবং যাকাত তহবিল দ্বারা জনসেবা করে থাকে।
    • এ ব্যাংক জনকল্যাণমূলক কাজে করযে হাসানা বা সুদ মুক্ত ঋণ প্রদান করে।
    • ইসলামি ব্যাংক একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক যা ফিকহ শাস্ত্র নির্ধারিত পদ্ধতিতে কারবার করে।
    • ইসলামি ব্যাংক দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে ত্রাণকার্য পরিচালনার মাধ্যমে মানবতার বিকাশ ঘটায়।
    • এ ব্যাংক শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবদান রাখতে গিয়ে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো গড়ে তুলে।
    • ইসলামি ব্যাংক জনসাধারণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়কে লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে কারবারের অঙ্গীকার আমানত হিসেবে গ্রহণ করে।
    • ইসলামি ব্যাংক সুদমুক্ত পন্থায় বৈদেশিক বাণিজ্যে অবদান রাখে।
    • কল্যাণমুখী ব্যাংক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা ইসলামি ব্যাংকের অনন্য বৈশিষ্ট্য।
    • ইসলামি ব্যাংক মানব সম্পদ উন্নয়ন ও আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে বেকারত্ব দূরীকরণে অবদান রাখে।
    • ইসলামি ব্যাংক ইসলামি অর্থব্যবস্থার লক্ষ্য অর্জনের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে এবং সমাজ থেকে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে চেষ্টা করে।
    • ব্যবসায় বাণিজ্যে ও অর্থনীতিতে ন্যায়-নীতি ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে।
    • ইসলামি ব্যাংক আন্তরিকতার সাথে উন্নতমানের সেবা প্রদান করে।
    • ইসলামি ব্যাংক বিনিয়োগের মাধ্যমে আয়ের শতকতা ৭০ ভাগ আমানতদারদের মধ্যে বণ্টন করে থাকে।

    প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থা ও ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থার মধ্যে তুলনা

    ইসলামি ব্যাংক ও প্রচলিত ব্যাংকের মধ্যে কাঠামোগত কিছু সামঞ্জস্য আছে। তা সত্ত্বে অসামঞ্জ পরিমাণই বেশি। নিম্নে এ দু’ধরনের ব্যাংক ব্যবস্থার একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হলো-



    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: শরী’আতের বিধান মোতাবিক হালাল ও সহজ পন্থায় দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে সহায়তা করা ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থার উদ্দেশ্য। প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থার উদ্দেশ্য সুদী অর্থাৎ লগ্নী ব্যবসায় পরিচালনা করা।
    • সুদের বিলুপ্তি: শরী’আতের সুদ নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ায় ইসলামি ব্যাংক সুদ বর্জন করে লেনদেন করে। অপর দিকে প্রচলিত ব্যাংক সুদের মাধ্যমেই সব কারবার করে থাকে।
    • অর্থের উৎস: সুদী ব্যাংকগুলো সুদ প্রদানের অঙ্গীকারে জনগণের আমানত গ্রহণ করে। কিন্তু ইসলামি ব্যাংক লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে জনগণের আমানত গ্রহণ করে।
    • বিনিয়োগ: ইসলামি ব্যাংকের বিনিয়োগের ক্ষেত্র হচ্ছে- ক. মুদারাবা খ. মুশারাকা গ. মুরাবাহা ঘ. বাইয়ে মুয়াজ্জাল ঙ. বাইয়ে সালাম চ. ইজারা ইত্যাদি। প্রচলিত ব্যাংকের বিনিয়োগের মাধ্যম হচ্ছে- ক. ক্যাশ ক্রেডিট খ. ওভার ড্রাফট গ. লোন ইত্যাদি।
    • সুদ বনাম লাভ-ক্ষতি: প্রচলিত ব্যাংকের সুদ লাভ-লোকসানের সাথে সম্পর্কহীন। এখানে সুদের হার পূর্ব নির্ধারিত। ইসলামি ব্যাংকে সুদ নেই। লাভ-লোকসানের হার বছরের নির্দিষ্ট সময় অন্তে হিসাব করে স্থির করা হয়।
    • গ্রাহক সম্পর্ক: ইসলামি ব্যাংকের গ্রাহকগণ ব্যাংকের ব্যবসায়ের সংগঠক অথবা আমানতকারী হিসেবে মূলধন দাতা। প্রচলিত ব্যাংকের সাথে গ্রাহকগণের সম্পর্ক পাওনাদার হিসেবে বিবেচিত।
    • পরিচালন ব্যয়: ইসলামি ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় লাভের ওপর নির্ভরশীল। লোকসান হলে খরচ বেড়ে যায় এবং তা ব্যাংকের অস্তিত্বে হুমকি হয়ে দেখা দেয়। তবে ইসলামি ব্যাংকের দক্ষ কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টার কারণে বেশির ভাগ প্রকল্পে ব্যাংকের লোকসান হয় না। প্রচলিত ব্যাংক সুদ আদায় করা ও সুদ প্রদান করা এ দু’য়ের বিয়োগফলের উপরে পরিচালনা ব্যয় নির্ধারণ করে থাকে।

    শিশুর আধুনিক, সুন্দর ও অর্থবহ নাম


    • যাকাত ফান্ড: ইসলামি ব্যাংক নিজস্ব তহবিলের জমাকৃত অর্থের যাকাত দিয়ে থাকে। এ অর্থ জনকল্যঅণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। প্রচলিত ব্যাংকে যাকাতের কোন প্রশ্নই উঠেনা। তেমনি সেবামূলক বা ত্রাণকার্য ইসলামি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য হলেও প্রচলিত ব্যাংকে তা নেই।
    • শোষণের অবসান: ইসলামি ব্যাংকের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত পথে সমাজ থেকে শোষণের অবসান ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণ সাধনে সহায়তা করা। প্রচলিত ব্যাংকে সাধারণ মানুষের সেবা ও কল্যাণের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেই। অরে ব্যবসার মাধ্যমে সমাজের কতিপয় মানুষের ভাগ্যোন্নয়নেই প্রধান ভূমিকা হিসেবে কাজ করে।
    • আয়ের উৎস: ইসলামি ব্যাংকের আয়ের উৎস মুনাফা, প্রাক্কলিত ব্যাংকের আয়ের উৎস সুদ।
    • সামাজিক সংগঠন: ইসলামি ব্যাংক নিজকে সংগঠনের একটি অংশ মনে করে। এ ব্যাংকের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের দরিদ্র্য জনগণকে সম্ভাব্য সকল উপায়ে সাহায্য করা। অপরদিকে প্রচলিত ব্যাংক সমাজের সাথে তার এ ধরনের সম্পর্ক ও সমন্বয়ে কখনোই চিন্তা করে না।
    • প্রকৃত লোকসানের দায়ভার গ্রহণ: ইসলামি ব্যাংক লাভ-লোকসানের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করে; বিনিয়োগে প্রকৃত লোকসানের দায়ভারও ব্যাংক গ্রহণ করে। অপরদিকে প্রচলিত ব্যাংক বিনিয়োগের অর্থও এর উপর নির্ধারিত সুদ এক এক করে আদায় করে। বিনিয়োগের লাভ-লোকসানের ব্যাপারে তার কোন দায়-দায়িত্ব নেই।


    • শরী’আ বোর্ড: ইসলামি ব্যাংকের কার্যক্রম ইসলামি শরী‘আত অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য প্রখ্যাত আলেম, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ ও আইনবিদদের সমন্বয়ে শরী’আ কাউন্সিল বা বোর্ড গঠন করে থাকে। কিন্তু প্রচলিত ব্যাংকে এ ধরনের কোন ব্যবস্থা নেই।
    • কার্যক্রমে পার্থক্য: ইসলামি ব্যাংক শিল্প-বাণিজ্য, কৃষি ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন প্রকল্পে একজন অংশীদার হিসেবে জড়িত থাকে। এ জন্য ব্যাংক ব্যবসায়, শিল্প বা প্রকল্পের সফলতার দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখে। ব্যাংক আবার এর সুফলও পায়। লাভ আদায় হয় ভালভাবে। প্রচলিত ব্যাংক ব্যবসা-শিল্পের কোন অংশীদার নয় বলে অর্থ গ্রহণকারী সংগঠনের সফলতার জন্য ব্যাংক উদ্বিগ্ন নয়। তবে এ ব্যাংকগুলো সুদসহ অর্থ ঠিকমত ফেরত দিতে পারবে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখে। তা সত্ত্বেও অন্তত সরকারি ব্যাংকগুলো ঋণ আদায় সঠিকভাবে করতে ব্যর্থ। প্রভাবশালী ঋণ গ্রহীতাগণ ঋণের অর্থ প্রদানে উৎসাহী নয়। এ জন্য ব্যাংক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।

    উপসংহার

    বস্তুত ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা সফল বিবেচনায় আজ সাধারণ ব্যাংকের চেয়ে অধিক লাভজনক এবং কল্যাণকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। সকল ইসলামি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য একই রকম হওয়া জরুরী নয়। তবে মৌলিক বৈশিষ্ট্য অবশ্যই অভিন্ন হবে। আর তা হচ্ছে ব্যাংকের সমুদয় কর্মকান্ড ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া। প্রতিটি ইসলামি ব্যাংক তার নিজস্ব কতকগুলো বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে নিতে পারবে। তবে তা অবশ্যই ইসলামি শরীআর নীতিমালার ভিত্তিতে হবে।



    • IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

    ইসলামি ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রম বিকাশ সম্বন্ধে আলোচনা করুন।

      0

      প্রশ্ন: ইসলামি ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রম বিকাশ সম্বন্ধে আলোচনা করুন। বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



      ইসলামি ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রম বিকাশ সম্বন্ধে আলোচনা করুন।

      ভূমিকা

      ইসলামি ব্যাংক প্রচলিত ব্যাংক সমূহের ন্যায় সুদের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেনি। তাছাড়া ইসলামি ব্যাংক শুধু সুদকে পরিহার করেই ক্ষান্ত হয়নি; বরং সকল কর্ম কান্ডের সকল স্তরের ইসলামি শরী’আতকে অনুসরণ করে ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর আর্থ-সামাজিক ও শরীআতী প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ইসলামি ব্যাংক এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা তার মৌলিক বিধান ও কর্মপদ্ধতির সকল স্তরে ইসলামি শরী’আতের নীতিমালা মেনে চলতে বদ্ধপরিকর এবং রাষ্ট্রীয় কর্ম-কান্ডের সকল পর্যায়ে সুদ বর্জন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

      ইসলামি ব্যাংকের উৎপত্তি

      ইসলামের প্রাথমিক যুগে বর্তমান কালের মত প্রাতিষ্ঠানিক কোন ব্যাংকের অস্তিত্ব ছিল না, তবে সরকারী কোষাগার ছিল, যাকে বায়তুল মাল বলা হত। তখনকার প্রয়োজনীয় আর্থিক লেন-দেন সমাপনের জন্য এ বায়তুল মালই যথেষ্ট ছিল। বায়তুল মালের লেন-দেন ছিল সম্পূর্ণ সুদমুক্ত। অতীতের এ অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই মুসলিম বিশ্বে ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।


      No posts


      মদীনায় ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ইসলামের অর্থনৈতিক বিধানসমূহ প্রবর্তন করা হয়। সুদ বর্জন করার নীতিমালা ঘোষণা করা হয়। উমাইয়া শাসনামলে ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। এরপর থেকে মুসলমানরা দীর্ঘদিন পর্যন্ত একটি উন্নত ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখতে সক্ষম হয়।

      অষ্টাদশ শতকে পাশ্চাত্য জগতের সংস্পর্শে আসার পূর্ব পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বে সুদবিহীন ইসলামি অর্থব্যবস্থা চালু ছিল। এই শতকে ইসলামি অর্থব্যবস্থার উপর পাশ্চাত্য অর্থ ব্যবস্থা প্রাধান্য বিস্তার করে এবং মুসলিম অর্থনীতি তথাকথিত মুক্ত অর্থনীতির সংস্পর্শে আসে। তখন হতে সুদের সাথে মুসলমানদের পরিচয় ঘটে এবং ধীরে ধীরে তা মুসলমানদের জীবন যাত্রার সাথে মিশে যায়।



      সুদের প্রবর্তন

      ইসলামের প্রাথমিক যুগে আধুনিককালের ন্যায় কোন ব্যাংকের অস্তিত্ব ছিল না বটে কিন্তু মুসলমানগণ ইসলামি পদ্ধতিতে নিজস্ব আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। আল্লাহর রাসূল (সা) ইসলামি রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় আর্থিক লেনদেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্যে ‘বায়তুল মাল’ প্রতিষ্ঠা করেন। ‘বায়তুল মাল’ এর লেনদেন ছিল সম্পূর্ণ সুদমুক্ত। পরবর্তীতে খোলাফায়ে রাশেদুনের যুগেও ‘বায়তুল মাল’ বহাল ছিল এবং ইসলামি রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় আর্থিক লেনদেন ‘বায়তুল মাল’ এর মাধ্যমেই সম্পন্ন করা হতো। প্রাথমিক যুগের এ অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই মুসলিম দুনিয়ার আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে উঠে।

      ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা কেবল আরব জাহানেই সীমাবদ্ধ ছিল না বরং সমগ্র বিশ্বেই ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা চালু ছিল। এমন এক যুগ ছিল যখন বিশ্বের শাসন ক্ষমতা ছিল মুসলমানদের হাতে; আর চালু ছিল সুদবিহীন অর্থ ব্যবস্থা। অষ্টাদশ শতকে পাশ্চাত্য জগতের সংস্পর্শে আসার পূর্ব পর্যন্ত প্রায় সমগ্র বিশ্বে সুদ বিহীন অর্থ ব্যবস্থা চালু ছিল। কিন্তু মুসলিম জাতি বিবিধ কারণে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি। অষ্টাদশ শতকে পাশ্চাত্য শক্তি মুসলিম দুনিয়ার উপর প্রাধান্য বিস্তার করে এবং মুসলিম জাতি সুদ ভিত্তিক অর্থনীতির সংস্পর্শে আসে। ফলে সুদ বিহীন ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস প্রাপ্ত হয়।



      ইয়াহুদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সুদী ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে সুদকে মুসলিম জাতির উপর চাপিয়ে দেয় এবং ইসলামি নতিমালার ভিত্তিতে আল্লাহর রাসূল (সা) কর্তৃক প্রবর্তিত এবং খোলাফায়ে রাশেদুন কর্তৃক অনুসৃত সুদবিহীন যে অর্ত ব্যবস্থা যুগ যুগ ধরে প্রায় সমগ্র বিশ্বে পরিচালিত হয়ে আসছিল তাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হল। ইয়াহুদীরাই ছিল সুদের প্রবর্তক এবং সুদী প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র মালিক। যতদূর জানা যায় প্রাচীন গ্রীক সমাজে যখন ব্যাংক একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করে তখন ব্যাংকে সুদ গ্রহণ ছিল নিষিদ্ধ। খ্রিষ্টানদের ‘ওল্ড টেস্টমেন্ট’ ধর্মগ্রন্থেও সুদ নিষিদ্ধ ছিল।

      কিন্তু ইয়াহুদী জাতি এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যাংকসমূহে সুদের প্রবর্তন করে। পরবর্তীতে খ্রিষ্টানরাও তাদের অনুসরণ করে এবং উত্তরোত্তর মুসলমানরাও সুদী কারবার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে মুসলমানদের মনমগজ ও চিন্তাধারার এমন পরিবর্তন ঘটে যে, ব্যাংকিং বলতে তারা কেবল সুদভিত্তিক পুঁজিবাদী ব্যাংক ব্যবস্থাকেই বুঝে। ইসলামি ব্যাংকিং বললে তারা যেন কিছুই বুঝে না। ব্যাংকিং বলতে তারা সুদী ব্যাংকের নাম, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাকে অনুভব করে।



      আমরা জানি, বর্তমান যুগে ব্যাংকের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। একে কোনভাবেই অস্বীকার করা যায় না। কারণ রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ কার্যাদি, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক লেনদেন, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অর্থ স্থানান্তর, আমদানী রাপ্তানী ইত্যাদি যাবতীয় অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী ব্যাংকের মাধ্যমেই সম্পন্ন হচ্ছে। ব্যাংক ব্যতীত এ সকল গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এদিক থেকে ব্যাংক একটি কল্যাণকর প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সুদ প্রথার কারণে সমগ্র ব্যবস্থাই অপবিত্র এবং মানবজাতির জন্যে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংক থেকে যদি সুদের মত এ ভয়াবহ পাপ ও অভিশাপটিকে দূর করা যায় তাহলেই ব্যাংক সত্যিকার অর্থে একটি কল্যাণকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এবং সবার নিকট গ্রহণযোগ্য হবে।

      ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ

      বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম মনীষীগণ শুরু থেকেই গোটা ব্যাংক ব্যবস্থাকে ইসলামিকরণের জন্যে ব্যাংক থেকে সুদ প্ৰথা দূর করে এটিকে একটি প্রকৃত কল্যাণকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার এবং মুসলিম জাতিকে সুদের ভয়াবহ অভিশাপ থেকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তাঁরা কখনো নীরব থাকেননি। মুসলিম মনীষীগণ সর্বযুগেই ইসলামি নীতিমালাকে পুনঃ প্রবর্তনের ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন।

      সুদী ব্যাংক ব্যবস্থাকে ইসলামিকরণ করার বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইসলামি চিন্তাবিদ, ইসলামি আইনবিদ, অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার, সাহিত্যিক, শিক্ষক, শিল্পপতি, ব্যাবসায়ী, গবেষক এবং দার্শনিকগণ বিভিন্ন সভা- সমিতি, কনফারেন্স, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে তাঁদের মূল্যবান বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। তাঁদের এ বক্তব্য এবং লিখনীর ভাষা কখনো ছিল বলিষ্ঠ আবার কখনো ছিল মন্থর। বিশেষ করে বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে বিশ্বের মুসলিম মনীষীগণ সুদ বিহীন ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার স্বপক্ষে ব্যাপক গবেষণা, লেখালেখি এবং জোরালো বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। তাঁদের এ বক্তব্য ক্রমান্বয়ে ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে রূপ নেয় এবং ষাটের দশক থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুদবিহীন ইসলামি ব্যাংক, বীমা, ইন্সুরেন্স কোম্পানী এবং সমিতি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে।


      শিশুর আধুনিক, সুন্দর ও অর্থবহ নাম


      ১৯৬৩ সালে মিসরে সর্বপ্রথম সুদ বিহীন ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ডঃ আহম্মদ আল নাজ্জার স্বউদ্যোগে মিসরীয় বদ্বীপ শহর মিটগামারে ‘মিটগামার ব্যাংক’ নামে একটি সেভিংস ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল আধুনিক বিশ্বের প্রথম সুদবিহীন ইসলামি ব্যাংক। স্বল্প সময়ের মধ্যে এ ব্যাংক বিপুল সাফল্য অর্জন করে। ১৯৬৩-৬৭ সালের মধ্যে মিসরের ৯টি প্রদেশে মোট ৯টি ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু মিসরের তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক সরকার ১৯৬৭ সালে রাজনৈতিক কারণে সকল ইসলামি ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। অতপর মিসর সরকার জনগণের দাবী ও আকাঙ্ক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে এবং রাজনৈতিক সমর্থন লাভের জন্যে ১৯৭২ সালে ‘নাসের সোশ্যাল ব্যাংক’ নামে অপর একটি ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন।

      ১৯৭০ সালে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (OIC) গঠিত হয়। ১৯৭৩ সালে জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি)-এর পররাষ্ট্র মন্ত্রী সম্মেলনে একটি আন্তর্জাতিক ইসলামি অর্থ সংস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে প্রথম বারের মত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের অপর সম্মেলনে ‘আইডিবি’ (ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক) চার্টার গৃহীত হয়। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৭৫ সালে সৌদী আরবে ‘ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক’ (আইডিবি) প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং ঐ বছরই সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘দুবাই ইসলামি ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করে। অতপর ক্রমান্বয়ে, কুয়েত, সেনেগাল, বাহরাইন, পাকিস্তান, ইরান, সুইজারল্যান্ড, জাম্মান, জর্দান, বাংলাদেশ প্রবৃতি দেশে ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ইরান ও পাকিস্তানের গোটা ব্যাংক ব্যবস্থাকে ইসলামিকরণ করা হয়।

      উপসংহার

      বর্তমান বিশ্বে ইসলামি ব্যাংক কেবলমাত্র মুসলিম দেশসমূহেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং যুক্তরাষ্ট্রে, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানী এর মত অমুসলিম দেশেও ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৪২টি দেশে ১৫৫ টিরও অধিক সুদ বিহীন ইসলামি ব্যঅংক ও অন্যান্য অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান ইসলামি শরীআর নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে এবং মরীআর নীতিমালাকে পূর্ণাঙ্গভাবে অনুসরণ করার প্রচেষ্টা অব্যাহক রেখেছে। গোটা বিশ্বের মুসলমানগণ তাঁদের ব্যাংকিং এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পরিচালনা করবে এবং সুদের ভয়াবহ অভিশাপ, শোষণ ও জুলম থেকে মুক্তি লাভ করবে।



      • IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

      ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি? ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী আলোচনা করুন।

      প্রশ্ন: ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি? ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী আলোচনা করুন। বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



      ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি? ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী আলোচনা করুন।

      ভূমিকা

      বর্তমান যুগে সুসভ্য মানব সমাজের জন্য ব্যাংক যে একটি অত্যাবশ্যকীয় ব্যবস্থা তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। অনেক বড় বড় অর্থনৈতিক কাজই একমাত্র ব্যাংকের সাহায্যে সম্পন্ন করা সম্ভব। এতে প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও আধুনিক কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা ও ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান। ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা ইসলামের দৃস্টি আর আদুনিক বা প্রচলিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা পাশ্চাত্য জগতের সৃষ্টি। প্রচলিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থ পরিচালার Measurement হচ্ছে Secularism ধর্মনিরপেক্ষতা, পক্ষান্তরে ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্য পরিচালনার Measurement হচ্ছে ইসলামি শরীআ।

      ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক

      যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান মুদ্রা এবং ব্যাংক ব্যবস্থা ইসলামি অর্থনীতির আলোকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইসলামি শারীআ মুতাবিক ব্যাংকসমূহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং সে অনুযায়ী আইন প্রয়োগ করে তাকে ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে।

      প্রচলিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলীর অনেক ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন- মুদ্রা ও নোট প্রচলন, নিকাশ ঘর হিসেবে কাজ করা, অন্যান্য ব্যাংকের এবং সরকারি ব্যাংকের হিসেবে কাজ করা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ঋণ দান ইত্যাদি। তবে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট প্রচলন কার্যে শরীআ বিরোধী কোন ছবি মুদ্রায় ছাপাতে পারে না। প্রচলিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যায় ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার অধীনস্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে মূলধন যোগান দিতে পারে। ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রদত্ত সরকারি ঋণ হবে করযে হাসানা বা উত্তম ঋণ। এ কাজগুলো ছাড়াও ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরো কর্ম সম্পাদন করে থাকে।



      ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী

      নিম্নে ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

      • শরী’আ বোর্ড গঠন: ইসলামি ব্যাংকের অর্থনৈতিক কার্যাবলী সূচারুরূপে পরিচালনার জন্য শরী’আ বোর্ড গঠন অপরিহার্য। বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, আলিমে দ্বীন, আইনবিদ এবং ইসলামি অর্থনীতিবিদদের মাধ্যমে এ বোর্ড গঠন করা হয়। তাঁরা কুর’আন সুন্নাহকে Measurement হিসেবে ধরে নীতিমালা প্রণয়ন করে থাকেন। ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক বোর্ড হিসেবেও সঠিকভাবে কার্য সম্পাদন করে থাকে।
      • প্রতীকী মুদ্রা প্রচলন: দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও জনসাধারণের প্রয়োজন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে কারেন্সী নোট ছাড়ে। পাঁচ টাকা বা তার বেশি মূল্যের নোট আমাদের দেশে কারেন্সী বলে পরিচিত, বাকিটা রেজগি। আমাদের দেশের কাগজের নোটগুলো পরিবর্তনীয় মুদ্রা নয়। কাগজী মুদ্রাকে স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রায় রূপান্তর করা যায় না। কাগজী মুদ্রা প্রচলন যেন সরকারের একটি অনর্জিত আয়। স্বার্ণ বা রৌপ্য মুদ্রা প্রচলনের জন্য আয় করতে হয় কিন্তু কাগজী মুদ্রার জন্য আয়ের প্রয়োজন নেই, মেশিনে নোট ছাপালেই হলো। এর জন্য কোন কৈফিয়ত দিতে হয় না।


      • সুদপ্রথা রহিত করে অর্থনৈতিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা: আল কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, “আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন।” এ সুদ প্রথাকে রহিত করে অর্থনৈতিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। হারাম দ্রব্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, শিল্প বাণিজ্য সবই হারাম। এগুলোর উৎপাদন ও ব্যবসায় যেন কোন মূলধন বিনিয়োগ করা না হয়, তা ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
      • যাকাত ফান্ড: যাকাতের অর্থ হিসেবে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে যে টাকা জমা হবে বায়তুল মাল তথা ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার হিসাব সংরক্ষণ করে এবং তা বণ্টনের ব্যবস্থা করে। অপরিবর্তনীয় মুদ্রা একদিকে যেমন মুদ্রাস্ফীতি ঘটিয়ে অর্থমূল্যকে সর্বদা অস্থির রাখে, অপরদিকে পুঁজিবাদের দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটায়। তাছাড়া কাগজী মুদ্রার কারণেই পুঁজিবাদ দ্রুত বেড়ে ওঠে। কাগজী মুদ্রার অনেক সুবিধাও রয়েছে। যেমন- সহজেই বিনিময় করা যায়। সেজন্য এ মুদ্রা প্রতীক মুদ্রা হিসেবে চালু রাখা উচিত, যেন স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রার পরিবর্তন করা যায়। যার ফলে পাঁচ টাকার মুদ্রার গায়ে লিখিত এ কথাটি সত্যে পরিণত হয়- চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকবে। বর্তমানে বিভিন্ন নোটের গায়ে লেখাটা সত্যের অপলাপমাত্র। এ সমস্যা হয়েছে স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রায় পরিবর্তন যোগ্য না হওয়ায়। কাজেই ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি আবারো পরিবর্তন যোগ্য কাগজী মুদ্রার প্রচলন করে এবং কাগজী মুদ্রা সমমানের স্বর্ণ ও পৌপ্য মুদ্রা ট্রেজারিতে মওজুদ রাখে তবে এ সমস্যার সমাধান হবে।


      • ঋণ নিয়ন্ত্রণ করা: ইসলামে সুদ হারাম। তাই ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সুদের হারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না। ঋণ নিয়ন্ত্রণের জন্যে ইসলামি চিন্তাবিদগণ সুদের পরিবর্তে ফী নেয়ার পরামর্শ দেয়। তবে সত্য কথা বলতে কি-কোন ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক করযে হাসানা ব্যতীত কোন ঋণ দিতে পারে না। যার ফলে ঋণ নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নই ওঠে না। তবে দেশে স্বল্পমাত্রায় বিনিয়োগ হলে মুদ্রা সংকোচন এবং অধিক হলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটতে পারে। বিনিয়োগের পরিমাণের কারণে যদি বিভ্রাট দেখা দেয় তবে ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লাভের হার কম-বেশি হতে পারে। ফলে সংগঠনগুলো মূলধন কম বা বেশি সংগ্রহ করবে। ব্যাংকের লভ্যাংশ ১৫% থেকে যদি ৩০% করা হয় তা হলে সংগঠনের লাভ থাকবে ২০%। এ অবস্থায় ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

      উপসংহার

      ইসলামি ব্যাংকের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত পথে সমাজ থেকে শোষণের অবসান ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণ সাধনে সহায়তা করা। প্রচলিত ব্যাংকে সাধারণ মানুষের সেবা ও কল্যাণের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেই। অরে ব্যবসার মাধ্যমে সমাজের কতিপয় মানুষের ভাগ্যোন্নয়নেই প্রধান ভূমিকা হিসেবে কাজ করে।



      • IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

      ইসলামি ব্যাংকের শরীয়া কাউন্সিল এর পরিচয় দিন। শরীয়া কাউন্সিল এর কার্যাবলী বর্ণনা করুন।

      প্রশ্ন: ইসলামি ব্যাংকের শরীয়া কাউন্সিল এর পরিচয় দিন। শরীয়া কাউন্সিল এর কার্যাবলী বর্ণনা করুন। বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



      ইসলামি ব্যাংকের শরীয়া কাউন্সিল এর পরিচয় দিন। শরীয়া কাউন্সিল এর কার্যাবলী বর্ণনা করুন।

      ভূমিকা

      কোন একটি ব্যাংকের কেবল মাত্র আর্থিক লেনদেন সুদমুক্ত হলে কিংবা সাইন বোর্ডে ইসলাম শব্দ ব্যবহার করলেই তা প্রকৃত ইসলামি ব্যাংক বা ইসলামি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হয়ে যায় না। প্রকৃত ইসলামি ব্যাংক হতে হলে ব্যাংকের সমুদয় কর্মকান্ড ইসলামি শরীআ অনুযায়ী পরিচালিত হতে হবে। সুতরাং ইসলামি ব্যাংকের যাবতীয় কর্মকান্ড ইসলামি শরীআ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও তথ্য সরবরাহের জন্যে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি শরীআ বোর্ড গঠন করা প্রয়োজন।

      ইসলামি ব্যাংকের শরীআ কাউন্সিল

      দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামা কিরাম, ইসলামি চিন্তাবিদ, ফকীহ, ইসলামি অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার, ইসলামি আইনবিদ এবং দার্শনিকগণকে নিয়ে এ শরীআ বোর্ড গঠিত হবে। শরীআ বোর্ডের সদস্যদের কেবল উচ্চ ডিগ্রী এবং জ্ঞানের পান্ডিত্য থাকলেই চলবে না; বরং প্রত্যেক সদস্যকে পরহেজগার, মুত্তাক্বী এবং ইসলামি শরীআতে পারদর্শী হতে হবে। শরীআ বোর্ডের সদস্যগণকে কেবল ব্যাংক কর্তৃপক্ষের আস্থাভাজন হলেই চলবে না, জনগণের নিকটও আস্থাভাজন হতে হবে। এখানে ‘মুত্তাক্বীন’ শব্দ এ কারণে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পৃথিবীতে এমন বহু লোক আছে যারা অসীম জ্ঞানের অধিকারী। দেশ বিদেশের কোন উচ্চ ডিগ্রীরও অভাব নেই তাঁদের। ইসলামের কথা বলে মানব হৃদয়কে শীতল করে দিতে পারে। অথচ ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে ইসলামের কোন অসুশাসন তাঁরা মেনে চলবেন না। বাহ্যিক অবস্থা দেখলে বুঝার উপায় নেই যে, তিনি মুসলিম নাকি অমুসলিম। ব্যক্তি স্বার্থ ও অর্থের লোভ লালসা তাঁদেরকে গ্রাস করে ফেলেছে। নিজ অপরাধগুলোকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যে ইসলামের অপব্যাখ্যা দিতেও দ্বিধাবোধ করেন না তাঁরা।

      সুতরাং এ ধরনের আমলহীন আলেম বা পন্ডিতগণকে শরীআ বোর্ডের সদস্য মনোনীত করা হলে তাঁদের ফতোয়া বা সিদ্ধান্ত জনগণ মানবে না। ফলে এর মাধ্যমে শুধু ব্যাংকই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বরং হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইসলামি ব্যাংক শুধু জনগণকে বুঝানো ও সান্ত্বনা দেওয়ার জন্যে নামে মাত্র একটি শরীআ বোর্ড গঠন করলে হবে না বরং শরীআ বোর্ডের সদস্যগণ যাতে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করতে পারেন সে সুযোগ দিতে হবে এবং ইসলামি ব্যাংকে ইসলামি শরীআর পরিপন্থী কোন কাজ করা হলে কিংবা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে তা রোধ করণে হস্তক্ষেপ করার পর্যাপ্ত ক্ষমতাও শরীআ বোর্ডের থাকতে হবে।



      ইসলামি ব্যাংক-কে একটি পরিপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে শরীআ বোর্ড গঠনকালে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোকে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক-

      1. শরীআ কাউন্সিল সদস্যদের কেউই ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তা হবেন না। কারণ নিম্নপদস্থ কর্মকর্তাগণ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ কর্তৃক প্রভাবিত হতে পারেন। তবে তাঁদের কাজের জন্যে উপযুক্ত সম্মানী ও সুযোগ সুবিধা থাকবে।
      2. ব্যাংকের মালিকপক্ষ তথা বোর্ড অভ ডাইরেক্টরস শরীআ কাউন্সিলের কোন সদসস্যের উপর প্রভাব খাটাবে না। বরং ব্যাংকের কোন কর্মকান্ডে বোর্ড অভ ডাইরেক্টরস কিংবা কর্মকর্তা কর্তৃক ইসলামি শরীআর নীতিমালা লঙ্ঘিত হলে শরীআ বোর্ডের নিকট তাঁদের জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকবে।
      3. শরীআ কাউন্সিলের সদস্যগণের স্বাধীনভাবে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করার কাজ পরিলক্ষিত হলে কিংবা কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে তা রোধ করার জন্যে শরীআ বোর্ডকে প্রয়োজনীয় এবং পর্যাপ্ত ক্ষমতা প্রদান করা।
      4. ব্যাংকের কর্মকান্ড সংক্রান্ত কোন বিষয়ে বোর্ড অভ ডাইরেক্টরস এর কোন সভা অনুষ্ঠিত হলে তাতে শরীআ বোর্ডের এক বা একাধিক সদস্যকে আমন্ত্রণ জানানো।
      5. ব্যাংকের স্বার্থে কিংবা ব্যাংকের কর্মকান্ডের সাথে সম্পর্কিত কোন বিষয়ে বোর্ড অব ডাইরেক্টরস কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা বাস্তবায়িত করার পূর্বেই এ সিদ্ধান্ত ইসলামি শরীআ সম্মত কিনা তা শরীআ কাউন্সিল থেকে লিখিত অনুমোদন দেয়া।

      শিশুর আধুনিক, সুন্দর ও অর্থবহ নাম


      1. ব্যাংক যে সকল বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণ করবে তা বাস্তবায়িত করার পূর্বে শরীআ বোর্ডের অনুমোদন নেয়া।
      2. ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ থেকে ব্যাংকের কর্মকান্ড, কর্মপদ্ধতি এবং ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যে সকল সার্কুলার ইস্যু করা হবে তা বৈধ কিনা এ বিষয়ে শরীআ বোর্ড থেকে লিখিত অনুমোদন নেয়া।
      3. শরীআ কাউন্সিলের রায় বা সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে গণ্য করা। ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি বোর্ড অব ডাইরেক্টরস পর্যন্ত শরীআ কাউন্সিলের সিদ্ধান্তকে মেনে চলতে এবং পালন করতে বাধ্য থাকা।
      4. ইসলামি ব্যাংক-কে একটি আদর্শ, কল্যাণকর এবং প্রকৃত ইসলামি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে শরীআ বোর্ডকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও তথ্য দেয়ার ব্যাপক অধিকার দেয়া।
      5. শরীআ কাউন্সিলের সদস্যদের যেন শরীআতী কোন কারণ ব্যতীত সহজেই পদচ্যুত করা না হয় তার ব্যবস্থা করা।
      6. শরীআ কাউন্সিলকে যে কোন সময় ব্যাংকের যে কোন কর্মকান্ড তদারক করার, বিভিন্ন ব্রাঞ্চ পরিদর্শন করার, অডিট করার এবং ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে অংশগ্রহণ করার অনুমতি থাকা এবং এতদবিষয়ে যাবতীয় ব্যয়ভার ব্যাংক কর্তৃক বহন করা।


      1. ইসলামি ব্যাংকের শরীআ কাউন্সিলকে যে সকল সুযোগ সুবিধা ও ক্ষমতা প্রদানের কথা ইতিপূর্বে আলোচনা করা হল তা শরীআ কাউন্সিলকে দিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অস্বীকৃতি জানাবে না। এছাড়া শরীআ কাউন্সিলেরও জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকবে।

      এখানে আরো একটি বিষয় বলা দরকার যে, প্রতিটি ইসলামি ব্যাংকে একটি শরীআ কাউন্সিল থাকা তো প্রয়োজন। তবে যে দেশে একাধিক ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে দেশের কেবল নিজস্ব শরীআ কাউন্সিল থাকা হয়তো যথেষ্ট হবে না। এক্ষেত্রে সকল ইসলামি ব্যাংকের যৌথভাবে বিশেষ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি শরীআ কাউন্সিল গঠন করা দরকার। প্রয়োজন বোধে দেশের বাইরের আলেম, ফকীহ, ইসলামি অর্থনীতিবিদ, ইসলামি চিন্তাবিদ, ব্যাংকার, দার্শনিক এবং ইসলামি আইনবিদগণের সমন্বয়ে বিশেষ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি শরীআ কাউন্সিল গঠন করা হবে। প্রতিটি ইসলামি ব্যাংকের শরীআ কাউন্সিল-এর চেয়ারম্যান বা অন্য কোন সদস্য বিশেষ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন যৌথ শরীআ কাউন্সিলের একজন সদস্য বা প্রতিনিধি নিযুক্ত হবেন।

      শরীআ কাউন্সিলের কার্যবালী

      ইসলামি ব্যাংকের শরীআ কাউন্সিল নিম্নলিখিত কার্যাবলী সম্পদান করে থাকে-

      1. ইসলামি ব্যাংকের যাবতীয় কর্মকান্ড ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করা এবং যে যে ক্ষেত্রে ইসলামি শরীআর নীতিমালাকে লঙ্ঘন করা হয় সেগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশ দেয়া।
      2. ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প, সিদ্ধান্ত, বিজ্ঞপ্তি ও প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় ইসলামি শরীআর পরিপন্থী হলে তা বাতিল করে দেয়া এবং ব্যাংকের বিভিন্ন সভায় আমন্ত্রণ পেয়ে যোগদান করা।
      3. ইসলামি ব্যাংকিং, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রকল্প গ্রহণ, বিনিয়োগ পদ্ধতি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিময়, পারস্পরিক অধিকার এবং ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিভিন্ন পরামর্শ, তথ্য, ইসলামি আইনের ব্যাখ্যা প্রদান এবং এতদসংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা করা।
      4. ইসলামি ব্যাংক এবং এতদ্‌সংক্রান্ত কোন বিষয়ে বোর্ড অব ডাইরেক্টরস কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং প্রকল্প অনুমোদনের জন্যে শরীআ বোর্ডে পেশ করা হলে তা শরীআ সম্মত কিনা খতিয়ে দেখা এবং শরীআ সম্মত হলে অনুমোদন দেয়া।


      1. ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ থেকে ইস্যুকৃত সার্কুলার (বিজ্ঞপ্তি) জারী করার পূর্বে তা অনুমোদনের জন্যে পেশ করা হলে তা শরীআ সম্মত কিনা খতিয়ে দেখা এবং শরীআ সম্মত হলে অনুমোদন দেয়া।
      2. ইসলামি ব্যাংকে সালাত এবং এতদসংক্রান্ত ইসলামের অন্যান্য মৌলিক বিষয় কায়েম আছে কিনা তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশ প্রদান করা।
      3. ইসলামি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার লেনদেন, বিনিয়োগ ও সার্বিক কার্যক্রম ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা প্রয়োজনবোধে নিয়মিত অথবা বৎসরে এক বা একাধিক বার অডিট করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা । একে ‘শরীআ অডিট’ বলে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। এসদসংক্রান্ত কাজের জন্যে শরীআ বোর্ড প্রয়োজনীয় জনশক্তি কাজে লাগাবে এবং ব্যয়ভার ব্যাংক বহন করবে।
      4. ইসলামি ব্যাংকে ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা-তথা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা, কাজের সময়সূচি, চাকুরীচ্যুতি, সামিয়ক বরখাস্ত, অধিকার, শ্রমিক নির্যাতন এবং এতদসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে ইনসাফ ও ন্যায় বিচার কায়েম হচ্ছে কিনা তা তদারক করা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।


      1. শরীআ কাউন্সিল ব্যাংকের যে সকল কর্মকান্ড ও পদ্ধতিতে অনুমোদন দিয়েছে ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম সেভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করা এবং ইসলামি শরীআর নীতিমালার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
      2. ইসলামি ব্যাংক-কে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ব্যাপারে শরীআ বোর্ডকে সম্যক ভূমিকা রাখা দরকার। ইসলামি ব্যাংকের সমুদয় কার্যক্রম যাতে ইসলামি শরীআ ভিত্তিতে পরিচালিত হয় সেদিকে শরীআ বোর্ডকে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

      শরীআ বোর্ডের প্রত্যেক সদস্যকে স্মরণ রাখা দরকার যে, ইসলামের একটি মহৎ ও বৃহৎ কাজের বোঝা তাঁদেরকে দেয়া হয়েছে। সুতরাং ইসলামি ব্যাংকে যদি ইসলামি শরীআর পরিপন্থী কোন কর্মকান্ড সংঘটিত কিংবা চর্চা হয়, আর শরীআ বোর্ড তা তদন্ত না করে কিংবা প্রতিবাদ না করে কিংবা ইসলামি ব্যাংকের যাবতীয় কাজ ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পরিচালিত না করে তাহলে পরকালে আল্লাহর দরবারে এর জন্যে শরীআ বোর্ডকে অধিক দায়ী হতে হবে।

      উপসংহার

      বাংলাদেশে বর্তমানে ৬টি ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমতাবস্থায় প্রতিটি ব্যাংকের নিজস্ব শরীআ কাউন্সিলের অতিরিক্ত যৌথভাবে বিশেষ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি শরীআ কাউন্সিল গঠন করা দরকার। যৌথভাবে গঠিত বিশেষ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সেন্ট্রাল শরীআ কাউন্সিলেরও স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করার এবং বিভিন্ন ইসলামি ব্যাংকের কর্মকান্ড যে কোন সময় তদারক করার এবং অডিট করার অবাধ স্বাধীনতা থাকতে হবে। যৌথভাবে গঠিত সেন্ট্রাল শরীআ কাউন্সিলের সদস্যগণ উপযুক্ত সম্মানী, সুযোগ সুবিধা এবং তদারক ও অডিট সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের খরচ ব্যাংকসমূহ যৌথভাবে বহন করবে। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সেন্ট্রাল শরীআ কাউন্সিলের সংক্রান্ত যাবতীয় আদেশ নিষেধ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মেনে চলতে বাধ্য থাকবে।



      • IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

      বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামি ব্যাংক ও এর সম্ভাবনা আলোচনা করুন।

      প্রশ্ন: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামি ব্যাংক ও এর সম্ভাবনা আলোচনা করুন। বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



      বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামি ব্যাংক ও এর সম্ভাবনা আলোচনা করুন।

      ভূমিকা

      বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয় অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে মুসলিম বিশ্বে যখন ইসলামি পুনর্জাগরণের জোয়ার আসে এবং বিশ্বের মুসলিম মনীষীগণসুদবিহীন ইসলামি অর্থ ব্যবস্থার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখতে শুরু করেন তখন বাংলাদেশের ইসলামি চিন্তাবিদঘনও থেমে থাকেননি। তাঁরা তখন ইসলামি ব্যাংকিং এর উপর বিভিন্ন প্রবন্ধ উপস্থাপন, কনফারেন্স, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে সুদবিহীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবী জানাতে থাকেন।

      বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংক

      বাংলাদেশর জনগণ মুসলমান হিসেবে ইসলামি অর্থনীতিতে বিশ্বাসী। তাঁরা সুদের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছে। অর্থনীতিকে কুরআন ও সুন্নাহ নির্দেশিত নীতিমালার ভিত্তিতে গড়ে তোলার দাবী ও আকাঙ্ক্ষা তাঁদের দীর্ঘ দিনের লালিত। কিন্তু পরাধীন জাতির ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষা থাকলে সবকিছু করতে পারে না। মুসলিম জনগণের দাবী ও আকাঙ্ক্ষা থাকলে সবকিছু করতে পারে না। সুমলিম জনগণের দাবী ও আকাঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে দেশ বিদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট আলেম, ইসলামি চিন্তাবিদ, ব্যাংকার, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি এদেশে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করার এবং মুসলিম জাতিকে সুদের অভিশাপ থেকে রক্ষা করার জন্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।



      ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর-এর শাসনামলে বাংলাদেশ পাকিস্তানের লাহোর সম্মেলনে ওআইসি’র সদস্য পদ লাভ করে এবং একই বছরের আগষ্ট মাসে বাংলাদেশ ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) চার্টারে স্বাক্ষর করে দেশের অর্থ ব্যবস্থা ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পুনর্বিন্যাস করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। ১৯৮১ সালে জানুয়ারী মাসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সৌদী আরবের তায়েফে অনুষ্ঠিত ওআইস’র তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলনে ইসলামি দেশসমূহের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ সুবিধার জন্যে একটি স্বতন্ত্র ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করার প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যক্ত করেন। নভেম্বর, ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ দেশের বাইরের কয়েকটি দেশে ইসলামি ব্যাংকসমূহের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্যে প্রতিনিধি প্রেরণ করে।

      অতঃপর ১৯৮২ সালের নভেম্বর মাসে আইডিবি’র একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেন এবং এখানে বেসরকারীভাবে যৌথ উদ্যোগে একটি ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁরা লক্ষ করেন যে, এদেশে সুদবিহীন ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি জনগণের গভীর আগ্রহ রয়েছে এবং এ ব্যাপারে এখানে ইতোমধ্যে অনেক কাজও সম্পাদন করা হয়েছে। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার উপর বেশ কয়েকটি সেমিনার, প্রশিক্ষণ কোর্স ও ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা ও সাধনার ফলে ইসলামি আদর্শে উদ্বুদ্ধ দেশ বিদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও ইসলামি সংস্থা ইসলামি ব্যাংকের ধারণাকে বাস্তবে রূপদান করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।


      শিশুর আধুনিক, সুন্দর ও অর্থবহ নাম


      পরবর্তীতে ব্যাংক ব্যবস্থায় ইসলামি শরীআ নীতিমালা পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করার এবং আর্থনীতিতে ন্যায়-নীতি, সুবিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৮৩ সালের ৩০শে মার্চ ‘ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৩ সারের ১২ই আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাংক তার ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। বিশ্বের ৫৬টি মুসলিম দেশের প্রতিনিধিত্বকারী অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক, দুবাই ইসলামি বাহরাইন ইসলামি ব্যাংক প্রভৃতি ইসলামি ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এ বংকের মূলধন যোগানে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশে এ ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সরকার, আইসিবি, আইইআরবি, কয়েকটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশের ইসলাম প্রিয় ব্যক্তিবর্গ।



      উপসংহার

      ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে দ্বিতীয় ইসলামি ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ‘আল বারাকা ব্যাংক লিমিটেড’ নামে। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশে ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পরিচালিত আরো তিনটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ তিনটি ইসলামি ব্যাংকের নাম হচ্ছে- (১) আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড, (২) সোস্যাল ইনভেষ্টমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (৩) প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড (ইসলামি শাখা) (৪) শাহজালাল ব্যাংক। এছাড়া বাংলাদেশে আরো একাধিক ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।



      • IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

      ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে? ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলী বর্ণনা করুন।

      প্রশ্ন: ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে? ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলী বর্ণনা করুন। বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)



      ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে? ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলী বর্ণনা করুন।

      ভূমিকা

      যে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ইসলামি মূলনীতি অনুসারে অর্থ বিনিয়োগ করে এবং আর্থিক লেন-দেন করে থাকে, তাকে ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক বলা হয়। ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে আলাদা। এতে জনগণের আমানত গ্রহণ বা অর্থবিনিয়োগ কোনটাই সুদভিত্তিক নয়। ইসলামি ব্যাংক জনগণের কাছ থেকে সুদে ঋণ গ্রহণ করে না। আবার সুদে কাউকে ঋণ দেয় না।

      ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংজ্ঞা

      ও.আই.সি. সচিবালয় ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিম্নরূপ সংজ্ঞা দিয়েছে,

      Islamic Bank is a financial institution whose statutes, rules and procedures expressly state its commitment to the principles of Islamic Shariah and to the banning of the reciepts and payments of interest in on any of its operations.

      “ইসলামি ব্যাংক এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যার মৌলিক বিধান, নীতিমালা ও কর্মপদ্ধতিতে শরী’আতের মূলনীতি অনুসরণের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার থাকবে এবং যার সমুদয় কাজ ও লেন-দেন সুদমুক্ত।” ও.আই.সি’র উক্ত সংজ্ঞা ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়। ইসলামি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও.আই.সি’র নীতিমালা অনুসরণ করে ব্যাংকিং কাজ পরিচালনা করে থাকে।



      ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলী

      নিম্নে ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক এর কার্যাবলী আলোচনা করা হলো-

      1. আমানত গ্রহণ: ইসলামি ব্যাংক ব্যবসায় ও শিল্পে বিনিয়োগের জন্য জনসাধারণের নিকট থেকে সুদবিহীন আমানত গ্রহণ করে। ব্যবসায় ও শিল্পে আমানত বিনিয়োগের ফলে যে লাভ হয় তার অংশ চুক্তি অনুসারে আমানতকারীকে প্রদান করা হয়। ইসলামি ব্যাংক সাধারণত নিম্নলিখিতভাবে আমানত গ্রহণ করে থাকে-
        1. চলতি হিসাব (Current Account): যে হিসাবে যখন তখন টাকা জমা দেয়া ও ওঠানো যায় তাকে চলতি হিসাব বা Current Account বলা হয়। যে কোন কোম্পানী, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি বিভাগ, সংস্থা ও ট্রাষ্ট কিংবা ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ এ একাউন্ট খুলতে পারেন। এর জন্য সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা দিতে হয়।লাভ-লোকসানে অংশীদারী মেয়াদী আমানত হিসাব: এক হাজার টাকা অথবা এর দ্বিগুণ, তিনগুণ প্রভৃতি হারে অর্থ জমা দিয়ে এ হিসাব খোলা যায়। বারো, আঠারো, চব্বিশ, ত্রিশ, ছত্রিশ মাস মেয়াদী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এ হিসাবে টাকা জমা রাখা যায়। এ একাউন্ট খোলার সময় নির্দিষ্ট মেয়াদ উল্লেখ করতে হয়। এ Account এর জন্য চেক বই দেওয়া হয় না। চেক বই এর পরিবর্তে প্রতিবার অর্থ জমা গ্রহণের বিনিময়ে টার্স ডিপোজিট রশিদ (PLS-TDR) ইস্যু করা হয়। লাভ-লোকসানের অংশীদারী মেয়াদিজমাকে এর প্রকৃতি অনুসারে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হচ্ছে (i) অনুমোদন সমেত (with authorization) এবং (ii) অনুমোদনহীন (without authorization).লাভ-লোকসানের অংশীদারী আমানত হিসাব: এ হিসাব ন্যূনতম ১০০ টাকা জমা দিয়ে খোলা হয়। প্রতি বছর ছ’মাস অন্তর জুন এবং ডিসেম্বর মাসে Account এ জমাকৃত অর্থের লাভ-লোকসানের হিসাব করা হয়।নিরাপত্তা হিসাব (Payment order/Security Deposit): এ একাউন্টে ইসলামি ব্যাংক রশিদ প্রদান করে সুদমুক্ত আমানত গ্রহণ করে থাকে। টেন্ডার বা অন্যকোন চুক্তির ক্ষেত্রে এ রশিদ Security Deposit ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ ধরনের আমানতের ক্ষেত্রে ইসলামি ব্যাংক কোন প্রকার মুনাফা প্রদান করে না ৷

      শিশুর আধুনিক, সুন্দর ও অর্থবহ নাম


      1. লাভ-লোকসানে অংশীদারী বিশেষ নোটিশ ডিপোজিট হিসাব: এ ধরনের হিসাব খোলার নিয়ম প্রায় চলতি হিসাব খোলার মতই। ন্যূনতম অর্থ জমা দিয়ে যে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এ হিসাব খুলতে পারে। যতবার ইচ্ছা টাকা জমা দেয়া যায়। কিন্তু ওঠানোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ সাতদিন আগে টাকার পরিমাণ জানিয়ে চিঠি দিতে হয়। এ হিসেবে দৈনিক উৎপাদনের ভিত্তিতে হিসাব করে ব্যাংক ঘোষিত হারে লাভ-লোকসান প্রদান করা হয়। ন্যূনতম পরিমাণ সংরক্ষণ না করা হলে লভ্যাংশ প্রদান করা হয় না।
      2. বিনিয়োগ: ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু মুনাফা অর্জনের উপরেই গুরুত্বারোপ করে না; বিনিয়োগের ভিত্তিতে যাতে সামাজিক কল্যাণ অর্জিত হয় সেদিকেও দৃষ্টি রাখে। নিম্নে ব্যাংকের বিনিয়োগ নীতির পদ্ধতিগুলো উল্লেখ করা হলো:
        1. সরাসরি বা প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ: ইসলামি ব্যাংক শিল্প, কৃষি, বাণিজ্য, পরিবহন, স্থাবর সম্পত্তি এবং গৃহ নির্মাণ (Real Estate and Housing) প্রভৃতি খাতে স্বল্প অথবা মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদের জন্য সরাসরি মূলধন বিনিয়োগ করে।মুদারাবা – স্বনিয়োজিত উদ্যোক্তার মাধ্যমে বিনিয়োগ: মুদারাবা বলতে এমন একটি চুক্তি বুঝায়- যার শর্তানুসারে একপক্ষ অর্থাৎ ব্যাংক মূলধন যোগান দেয় এবং অন্যপক্ষ অর্থাৎ স্বনিয়োজিত উদ্যোক্তা চুক্তির নির্ধারিত অনুপাত অনুযায়ী লাভের জন্য তার দক্ষতা, প্রচেষ্টা, শ্রম ও প্রয়োজনীয় ব্যবসায়িক প্রজ্ঞা নিয়োজিত করেন। এ জাতীয় বিনিয়োগের কয়েকটি দিক হল-
          1. চুক্তির শর্তানাযায়ী মুনাফা ব্যাংক এবং উদ্যোক্তার মধ্যে বন্টন করা হয়।ব্যাংক শুধু প্রকৃত লোকসানের দায়িত্ব গ্রহণ করে।উদ্যোক্তা বা তার কর্মচারী বা প্রতিনিধি কর্তৃক শর্ত লংঘন, অবহেলা, অদম্য ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির কারণে কোন লোকসান হয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে ব্যাংক উদ্যোক্তার নিকট থেকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ আদায় করে নেয়ার অধিকার রাখে।


        1. মুশারাকা অংশীদারী বিনিয়োগ: মুশারাকা বলতে এমন ব্যবসায়িক চুক্তি বুঝায় যার অধীনে ব্যাংক মূলধনের একটি অংশ যোগন দেয় এবং বাকি অংশ যোগান দেয় বিনিয়োগ গ্রাহক। এ পদ্ধতি অনুযায়ী-
          1. মূলধন সরবরাহের আগেই মুনাফা বণ্টনের অনুপাত ব্যাংক ও বিনিয়োগ গ্রাহকের সম্মতিতে এ চুক্তিনামায় নির্ধারিত হয়।ব্যবসায়ে প্রকৃত লোকসানের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও বিনিয়োগ গ্রাহক মূলধনের আনুপাতিক হারে তা বহন করে।
          মুরাবাহা চুক্তির ভিত্তিতে লাভে বিক্রয়: গ্রাহকের অনুরোধে নির্ধারিত মালামাল বিক্রির জন্য ব্যাংক গ্রাহক সংগ্রহ করে এবং তা চুক্তির ভিত্তিতে কিছু লাভসহ গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে। মুরাবাহা চুক্তির বৈশিষ্ট্য হল-
          1. এ পদ্ধতিতে তিনটি পক্ষ থাকে যথা- ব্যাংক, বিক্রেতা (যার নিকট থেকে ব্যাংক মাল ক্রয় করে) এবং ক্রেতা (যার নিকট ব্যাংক মাল বিক্রি করে)।মালামালের দাম ও লাভের অংক ব্যাংক ও বিনিয়োগ গ্রাহক উভয়েরই জানা থাকতে হয় ।ব্যাংক বিনিয়োগ গ্রাহকের নিকট থেকে প্রস্তাবিত মালের মূল্যের ২৫/৩০ ভাগ জামানত হিসেবে গ্রহণ করতে পারে।
          বায়-ই-মুয়াজ্জাল বা বাকিতে বিক্রয়: বায়-ই-মুয়াজ্জাল বলতে ব্যাংক কর্তৃক মুনাফার উদ্দেশ্যে বাকিতে মাল বিক্রয়ের জন্য বিনিয়োগ গ্রাহক ও ব্যাংকের মধ্যে চুক্তিকে বুঝায়। এ পদ্ধতির বিশেষ দিক হল-
          1. এ পদ্ধতিতে ব্যাংক গ্রাহকের অনুরোধে কৃষি ও শিল্পসহ বিভিন্ন খাতের উপকরণ ও মালামাল ক্রয় করে গ্রাহকের নিকট তা বাকিতে বিক্রয় করে।গ্রাহকগণ চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে মালের নির্ধারিত মূল্য পরিমোধ করেন।চুক্তিপত্রে পণ্যের ধরণ, গুণাগুণ, পরিমাণ, বিক্রয় মূল্য, সরবরাহের স্থান, সময়, গ্রাহক কর্তৃক মূল্য পরিশোধের সময়-সীমা ও পদ্ধতি ইত্যাদি চুক্তিপত্রে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।
          বায়-ই-সালাম অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়: বায়-ই-সালাম হলো এমন একটি ব্যবসায়িক চুক্তি যার আওতায় ভবিষ্যতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালামাল সরবরাহের শর্তে, ব্যাংক মালের ক্রয়মূল্য অগ্রিম পরিশোধ করে। এ ধরনের ব্যাবসায়িক চুক্তির কয়েকটি দিক হল-
          1. এ পদ্ধতিতে ব্যাংক সাধারণত কৃষি ও শিল্প পণ্য অগ্রিম ক্রয় করে থাকে।এ পদ্ধতিতে ব্যাংক হচ্ছে ক্রেতা এবং গ্রাহক হচ্ছে বিক্রেতা।ব্যাংক এ ধরনের চুক্তি সম্পাদনের সময় গ্রাহককে অর্থের যোগান দেয়।


        1. ভাড়ায় ক্রয়: এ পদ্ধতিতে ব্যাংক ও গ্রাহক চুক্তির ভিত্তিতে যৌথভাবে, যানবাহন, মেশিন ও যন্ত্রপাতি, ভবন ও এপার্টমেন্ট এবং গাড়ি ইত্যাদি ক্রয় করে। গ্রাহক ভাড়ার ভিত্তিতে তা ব্যবহার করেন এবং ব্যাংকের অংশের মূল্য কিস্তিতে পরিশোধ করে তা মালিকানা অর্জন করেন। এ পদ্ধতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল-
          1. গ্রাহক এ পদ্ধতির ভিত্তিতে পণ্য ক্রয় করার আগ্রহ ব্যক্ত করে ব্যাংকের কাছে অনুরোধ জানায় এবং তার নির্ধারিত অংশের টাকা ব্যাংকে জমা দেয়।গ্রাহকের অংশের টাকার সাথে ব্যাংক তার অংশের টাকা যোগ করে সমুদয় মূল্য পরিশোধ করে।
          ইজারা: ব্যাংক মেশীনারী সামগ্রী, যানবাহন, বাড়িঘর, জাহাজ ইত্যাদি সম্পূর্ণ নিজস্ব মালিকানায় রেখে গ্রাহককে তা ভাড়ার চুক্তিতে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ইজারা দেয়।করযে হাসানা: লাভ-লোকসান মুক্ত ঋণকে করযে হাসানা বলা হয়। এ ঋণের উপর লাভ বা লোকসানের কোনটিই হিসাব করা হয় না। গ্রাহক যে পরিমাণ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন তাই পরিশোধ করেন।নিলাম বিনিয়োগ: ব্যাংক নিজের উদ্যোগে উৎপাদনমুখী ছোট ও মাঝারী ধরনের শিল্প কারখানা তৈরি ও চালু করে ঐগুলো লাভের ভিত্তিতে নিলামে বিক্রি করে।
        1. স্বাভাবিক লাভের হারে বিনিয়োগ: ছোট-খাট ব্যবসা যেগুলোতে বার্ষিক ব্যালেন্সশীট হয় না, সেগুলোতে সাধারণভাবে গ্রহণযোগ্য লাভের হারে এ ব্যাংক বিনিয়োগ করে থাকে।
      1. বৈদেশিক বিনিয়োগ: ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক শরী’আতের সীমানায় অবস্থান করে বৈদেশিক বিনিময়সহ সকল প্রকার ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। বৈদেশিক বিনিময় কার্যক্রমের অধীনে এ ব্যাংক: (i) আমদানী; (ii) রপ্তানি, (iii) রেমিটেন্সেস এবং (iv) বিবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
      2. যাকাত গ্রহণ: ইসলামি ব্যাংক সম্পদশালী এবং শুভাকাঙ্খীদের দেয়া যাকাত, সাদকা ইত্যাদি গ্রহণ করে তহবিল গঠন করে থাকে এবং তা উন্নয়নমূলক খাতে অথবা দরিদ্র, অনাথ, ইয়াতীমদের মধ্যে নগদ অর্থে বণ্টন করে থাকে।
      3. লকার ভাড়া: ইসলামি ব্যাংক গ্রাহকদের মূল্যবান দলীলপত্র, স্বর্ণালংকার ইত্যাদি নিরাপদ সংরক্ষণের জন্য গ্রাহকদের লকারের সুবিধা প্রদান করে থাকে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক লকার ভাড়া দেয়ার কারণে নির্দিষ্ট অর্থ পায়।


      1. বৈদেশিক মুদ্রার বিনিয়োগ: ইসলামি ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে। এতে তার লাভ- লোকশানের অংশীদারিত্ব থাকে।
      2. বিল কালেকশন ও পরিশোধ: ইসলামি ব্যাংক বিল কালেকশনও পরিশোধ করে এবং গ্রাহকদের পক্ষে নিশ্চয়তা প্রদান করে থাকে।
      3. বিবিধ:
        1. শেয়ার গ্রহণ, সনদ দান ও নবায়ন;
        1. হস্তান্তরের মাধ্যমে কাজ সম্পাদন;
        1. বিনিয়োগ ট্রাষ্টি হিসেবে কাজ করে;
        1. বিদেশী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করে;
        1. কোম্পানির পক্ষে মূলধন আদায় করে;
        1. গ্রাহকদের পরামর্শ প্রদান করে;
        1. ত্রাণকার্য পরিচালনা করা;
        1. লেটার অব ক্রেডিট বা ঋণপত্র খোলা;
        1. ভূ-সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় করা;
        1. এজেন্ট নিয়োগ করা;
        1. প্রকল্পের সম্ভাব্যতা পরীক্ষা করার জন্য কারিগরী, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণ সম্পর্কিত পরামর্শ সার্ভিসের ব্যবস্থা করা।
        1. বিশেষ উদ্দেশ্যে কৃষি, শিল্প বা ভূ-সম্পত্তিতে বিশেষ তহবিল গঠন ও পরিচালনা করা।
        1. ইসলামি আইনের সাথে সঙ্গতি রেখে ঘাটতি পূরণের জন্য সলিডারিটি ও সিকিউরিটি তহবিল গঠন করা।

      উপসংহার

      ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংক অর্থ লেনদেন ও ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখছে। এ ব্যাংকের সকল কার্যক্রম সুদমুক্ত এবং ইসলামি নীতিমালার উপর প্রতিষ্ঠিত। এ ব্যাংকের বিনিয়োগ কার্যক্রম, আমানত গ্রহণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ, যাকাত গ্রহণ, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিয়োগ, বিল আদায় ও পরিশোধ ইত্যাদি সকল কার্যক্রমে ইসলামি নীতিমালা মেনে চলা হয়। একজন মুসলমানের জন্য সুদী ব্যাংকিং লেনদেন পরিহার করে সুদমুক্ত কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনা অপরিহার্য।



      • IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam

      3 Reasons Why You Should Switch to Oat Milk

      Hey friend! Have you ever considered switching up your milk game? I know, I know—milk is milk, right? But what if I told you there’s a dairy-free alternative that’s delicious, versatile, and oh-so-good for you? Yup, I’m talking about oat milk! Whether you’re lactose intolerant, vegan, or just curious about new things, here are three solid reasons why you should give oat milk a try.

      1. It’s Great for Your Health

      Heart-Healthy Goodness

      Oat milk is packed with beta-glucans, a type of soluble fiber that’s known to help lower cholesterol levels. This is a big win for your heart! By reducing bad cholesterol (LDL) and potentially raising good cholesterol (HDL), oat milk can play a part in keeping your cardiovascular system in tip-top shape.

      Digestive Benefits

      Unlike dairy milk, oat milk is naturally lactose-free, which means no more tummy troubles for those who are lactose intolerant. Plus, the fiber in oat milk can help keep your digestive system running smoothly. No more bloating or discomfort after enjoying your favorite latte!

      Nutrient-Rich

      Oat milk is often fortified with essential vitamins and minerals like calcium, vitamin D, vitamin B12, and riboflavin. These nutrients are crucial for maintaining strong bones, a healthy immune system, and overall vitality. So, you’re not just getting a tasty drink, but a nutritious one too!


      No posts


      2. It’s Environmentally Friendly

      Lower Carbon Footprint

      One of the most compelling reasons to switch to oat milk is its environmental impact. Producing oat milk generates significantly less greenhouse gas emissions compared to cow’s milk. If you’re looking to reduce your carbon footprint, oat milk is a fantastic choice.

      Water Conservation

      Did you know that it takes about 1,000 liters of water to produce just one liter of cow’s milk? In comparison, oat milk requires much less water to produce. By choosing oat milk, you’re contributing to water conservation efforts, which is super important for our planet’s sustainability.

      Sustainable Farming Practices

      Oats are generally considered a low-impact crop, meaning they’re easier on the soil and require fewer pesticides compared to other plants like almonds or soybeans. By supporting oat milk, you’re promoting sustainable farming practices that are better for our earth.

      3. It’s Incredibly Versatile and Delicious

      Perfect for Coffee and Tea

      Oat milk has a creamy texture and a mild, slightly sweet flavor that makes it a perfect addition to your coffee or tea. It froths up beautifully for lattes and cappuccinos, giving you that café-quality experience at home.

      Cooking and Baking

      You can use oat milk in a variety of recipes, from smoothies and soups to baked goods and sauces. Its neutral flavor means it won’t overpower your dishes, but rather, it’ll complement and enhance them. Try substituting oat milk in your favorite pancake or muffin recipe—you might be pleasantly surprised!

      Dairy-Free Treats

      If you’re a fan of dairy-free ice creams, cheeses, or yogurts, oat milk is your new best friend. Many brands are now offering oat milk-based alternatives that are just as tasty (if not more) than their dairy counterparts. Plus, they’re often lower in saturated fats and cholesterol.

      Bonus: It’s Easy to Make at Home

      One of the coolest things about oat milk is that you can easily make it at home with just a few ingredients: oats, water, and a sweetener of your choice (like honey or maple syrup). Blend them together, strain through a cheesecloth or nut milk bag, and voila—you’ve got fresh, homemade oat milk! You can even customize it by adding flavors like vanilla or cinnamon.

      Conclusion

      Switching to oat milk can be a game-changer for your health, the environment, and your taste buds. It’s heart-healthy, easier on your digestive system, and packed with essential nutrients. Plus, it’s a more sustainable choice that helps reduce your carbon footprint and conserve water. And let’s not forget—it’s absolutely delicious and versatile!

      So, next time you’re at the grocery store, why not pick up a carton of oat milk and give it a try? Your body, the planet, and your taste buds will thank you!

      মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং বিভিন্ন করপোরেশনের শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব ও অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান নীতিমালা, ২০২৩

      মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং বিভিন্ন করপোরেশনের শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব ও অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান নীতিমালা, ২০২৩

      মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং বিভিন্ন করপোরেশনের শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব ও অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান নীতিমালা, ২০২৩ | বিস্তারিত…



      মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং বিভিন্ন করপোরেশনের শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব ও অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান নীতিমালা, ২০২৩ PDF Download

      DOWNLOAD LINK


      রাষ্ট্রপতির কার্যালয় • প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় • সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ • মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ • শিক্ষা মন্ত্রণালয়গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ভূমি মন্ত্রণালয়পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কৃষি মন্ত্রণালয়স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়খাদ্য মন্ত্রণালয়স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়শিল্প মন্ত্রণালয়শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়রেলপথ মন্ত্রণালয়নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়অর্থ মন্ত্রণালয়