Wednesday, February 5, 2025

সোস্যাল মিডিয়ায় নিজের ক্ষতি করছেন না তো?

সকালে ঘুম ভাঙ্গে মোবাইলের এ্যালার্মের সুন্দর শব্দ শুনে। তারপর ফ্রেশ হওয়া, নাস্তা করা- শুরু হয়ে যায় চিরাচরিত দৈনন্দিন জীবন। এভাবেই প্রতিদিন শুরু হয় এবং চলে যায় আমাদের জীবন- আধুনিক যন্ত্র মোবাইল ফোনের সংস্পর্শে। আমরা বসবাস করছি মানব সভ্যতার চরম একটা উৎকর্ষময় সময়ের মধ্যে- আধুনিক যুগে। এ যুগে দৈনন্দিন জীবনের শুরুটাই হয় মোবাইল ডিভাইসের মতো এরকম অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সংস্পর্শে।

এই ইলেকট্রনিক জীবনে এসকল আধুনিক ডিভাইসগুলো প্রভাব বিস্তার করেছে আমাদের মৌলিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে বিনোদনসহ জীবনের সর্বক্ষেত্রে। আর এসবের মধ্যে সোস্যাল মিডিয়া অন্যতম প্রভাব বিস্তাকারী। আমরা অধিকাংশ সময়ই বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসে ব্যয় করি। এইসব ইলেক্ট্রনিক্স মাধ্যম ব্যবহার করে আমরা প্রতিনিয়তই ডুব দিচ্ছি বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায়। যেখানে নিজস্ব প্রয়োনীয় বিষয়, আবেগ-অনুভূতি, মতামত প্রকাশ করছি যখন তখন।

আমাদের দেশে সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার যেন কোন সমস্যার কারণ না হয়, সুশৃঙ্খলভাবে মানুষ প্রয়োনীয় বিষয়, আবেগ-অনুভূতি, মতামত প্রকাশ করতে পারে সেজন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ নামে একটি আইন তৈরি এবং কার্যকর করে। সেজন্য সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারে এই আইনের বিষয়ে জ্ঞান রাখা প্রয়োজন। অন্যথায় আপনার আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করে (যা এই আইনের পরিপন্থী) মারাত্মক বিপদ এমনকি শাস্তি সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আমাদের-দেশে-সোস্যাল-মিডিয়া-ব্যবহার-যেন-কোন-সমস্যার-কারণ-না-হয়

একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে উচিত হবে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে জানা যেন আমাদের কোনো ভুলে আমরা যেন রাষ্ট্রের চোখে কখ‌নো অপরাধী না হই। তাই আসুন জেনে নিই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা গুলো কী এবং এর বিপরীতে কী শাস্তির কথা উল্লেখ রয়েছে-

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জরুরী কেন

সময়ের প্রয়োজনে জীবন জীবিকা এবং বিনোদনের তাগিদে আমরা সবাই ডিজিটাল যুগের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের প্রতিনিয়তই প্রভাব বিস্তারকারী সাইবার জগতে বিচরণ করতে হয়। এই প্রভাবের কারণে আমরা অনলাইনকেই এখন বাস্তবতা মনে করছি।

যেকারণে আমাদের প্রেম ভালোবাসা আবেগ অনুভূতি দুঃখ বেদনা রাগ ক্ষোভ সবই এখন ডিজিটাল তথা সোস্যাল মিডিয়া নির্ভর। বিশেষ করে আমাদের নারী সমাজ এই ডিজিটাল প্লাটফর্মে বেশী ঝুঁকির মুখে। আমরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন মিডিয়ায় নারীদের এই লাঞ্চনা, অত্যাচার, ব্ল্যাকমেইলিংসহ নানা প্রতারণার খবর আসছে। এছাড়াও বর্তমানে সবকিছুই অনলাইন নির্ভর হওয়ার কারণে আমাদের অধিকাংশ লেনদেন এখন আমরা অনলাইনেই করি। ফলে অনলাইনে অনেকেই আর্থিক প্রতারণার শিকার হচ্ছে।


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮PDF Download


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ তে মোট ৪৮টি ধারা রয়েছে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি।

  • ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ১৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোয় যদি বেআইনি প্রবেশ করে তার ক্ষতিসাধন করার, বিনষ্ট করার, বা অকার্যকর করার চেষ্টা করলে অনধিক সাত বছরের জেল এবং জরিমানা ২৫ লাখ টাকা। যদি ক্ষতিসাধন করে তাহলে সর্ব্বোচ ১৪ বছরের কারাদন্ড এবং একইসাথে জরিমানা এক কোটি টাকা।
  • ১৮ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস কিংবা কম্পিউটার সিস্টেমে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কিংবা সহায়তা করে তাহলে সর্ব্বোচ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা ১০ লাখ টাকা। এই ধারাটি মূলত অনলাইনে স্প্যাম শেয়ার করা, হ্যাকিং করা, কম্পিউটারে ভাইরাস ছড়িয়ে তথ্য হাতানো এবং অনলাইনে আর্থিক জালিয়াতি সম্পর্কে।
  • ১৯ ধারাতে বলা হচ্ছে, বেআইনিভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেম থেকে কোনো তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ, তথ্য উপাত্তের ভাণ্ডার, বা তথ্য সংগ্রহ করেন বা কোনো তথ্য উপাত্তের অনুলিপি, নকল কপি ইত্যাদি সংগ্রহ করেন, তাহলে তার সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
  • ২০ ধারার বিধান অনুযায়ী, কম্পিউটার সোর্স কোড পরিবর্তন করলে কিংবা কম্পিউটার সোর্স কোড ধ্বংস করলে সর্ব্বোচ তিন বছরের সাজা এবং জরিমানা তিন লাখ টাকা।
  • ২১ ধারা মতে বলা হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি যদি ডিজিটাল (ফেইসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি) মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান), জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা ও প্রচার চালানো (বিকৃত করে হোক অবিকৃতভাবে হোক) বা উহাতে মদদ প্রদান করেন। তাহলে ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধেও একই শাস্তি কার্যকর হবে।
  • এই জাতীয় অপরাধের শাস্তি হবে অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই কাজ যদি কেউ দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুনঃ অর্থাৎ বারবার করে তাহলে সেই অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
  • ২৩ নাম্বার ধারায় অনলাইনের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আর্থিক বা অন্য কোন সুবিধা নেয়ার জন্যে প্রতারণার ব্যাপারে বলা হয়েছে ২৩ নম্বর ধারায় এবং মিথ্যা পরিচয় বা ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণা সম্পর্কে ২৪ নম্বর ধারায়।


  • ২৫ ধারায় আক্রমণাত্মক, মিথ্যা ও ভীতি প্রদর্শন, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ, ইত্যাদি বিষয়ে, যদি কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে, এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করেন, যাহা আক্রমণাত্মক বা ভয় প্রদর্শক অথবা মিথ্যা বলে সবাই জানা সত্ত্বেও, কোনো ব্যক্তিকে অপমান, বিরক্ত, অপদস্ত বা হেয়প্রতিপন্ন, বা মানহানির উদ্দেশ্যে কোনো তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ, প্রচার, প্রচারণা বা প্রকাশ করেন। অথবা দেশের ভাবমূর্তি বা সুনাম নষ্ট করতে,  বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য, বা ঐ উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা মিথ্যা হিসাবে জানা সত্ত্বেও, কোনো তথ্য উপাত্ত সম্পূর্ণ বা আংশিক বিকৃত আকারে প্রকাশ, বা প্রচার, প্রচারণা,  করেন বা করতে সাহায্য করেন, তাহলে ঐ  ব্যক্তির অনুরূপ কাজটি অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। এই অপরাধের শাস্তি কমপক্ষে ৩ বছরের কারাদণ্ড বা কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। দ্বিতীয়বার কিংবা বারবার একই অপরাধের জন্য ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
  • ২৬ নম্বর ধারাতে অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত ব্যবহারের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ  কারো নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ, ফোন নাম্বার, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, পাসপোর্ট নাম্বার, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম সনদ, ফিঙ্গার প্রিন্ট, ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার, ডিএনএ প্রোফাইল বা অন্য যেকোন পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য কেউ কারো অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে পারবে না।
  • ২৭ ধারা অনুযায়ী, অনলাইনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তি যদি রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ধ্বংসের নিমিত্তে, রাষ্ট্রীয়  নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করতে এবং জনসাধারণের মধ্যে ভয়ভীতি প্রদানের  জন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে বৈধ প্রবেশে বাঁধা অথবা প্রতিবন্ধকতা দেয় কিংবা কাউকে প্রতিবন্ধকতা করায়, তাহলে ঐ ব্যক্তির ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও  জরিমানা এক কোটি টাকা।
  • ২৮ নং ধারায় কোনো ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় স্বার্থ জনিত মূল্যবোধে বা অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে, ইচ্ছাকৃতভাবে। ডিজিটাল মাধ্যম অনলাইনে এমন তথ্য প্রচার বা মতামত প্রদান করে। তাহলে সর্ব্বোচ ১০ বছরের সাজা এবং জরিমানা ২০ লাখ টাকা।
  • ২৯ ধারাতে রয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অনলাইন কোনো ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে পেনাল কোড ৪৯৯ ধারা ভঙ্গ করে কোনো অপরাধ করেন তাহলে তার সর্ব্বোচ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং  পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা হবে।
  • ৩০ ধারা মতে, যদি কোন ব্যাংক, বীমা বা যেকোনো আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ কোনো ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে বৈধ পদ্ধতি  ছাড়া আইন বহির্ভূতভাবে ট্রানজেকশন বা লেনদেন করলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
  • ৩১ ধারায় সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সুশৃঙ্খল পরিস্থিতি ভঙ্গ করা বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
  • ৩২ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি এবং অবৈধ প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় বা অতি গোপনীয় বা জরুরী ও প্রয়োজনীয় তথ্য ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে (মোবাইল, ক্যামেরা ইত্যাদি) ধারণ, প্রেরণ ও সংরক্ষণ করেন বা অন্যকে করতে সহায়তা করেন, তাহলে সর্ব্বোচ ১৪ বছরের সাজা ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা।
  • ৩৪ ধারা অনুযায়ী কেউ হ্যাকিং করলে তার বিরুদ্ধে সর্ব্বোচ ১৪ বছরের সাজা ও জরিমানা এক কোটি টাকা করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশিরভাগ অপরাধ ধরা হয়েছে জামিনঅযোগ্য অপরাধ হিসাবে। যদিও ২০, ২৫, ২৯, ৪৮ ধারার অপরাধে জামিনের বিধান রাখা হয়েছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া

এই আইন বাস্তবায়নের জন্য একজন কম্পিউটার এবং সাইবার নিরাপত্তা বিশেষ বিশেষজ্ঞকে মহাপরিচালক পদবীতে প্রধান করে ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি গঠন করা হয়েছে। তিনি এই আইনের আলোকে ক্ষতিকর তথ্য অপসারণ ও ব্লক করার জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ করবেন।

কোনো কারণে কেউ যদি কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে এমন কোনো কিছু প্রকাশ করে যা দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কিংবা জাতিগত বিদ্বেষ বা ঘৃণার সৃষ্টি করে তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উক্ত তথ্য অপসারণ বা ব্লক করার জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবে।


আরো পড়তে পারেন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (The United States) | কিছু চমকপ্রদ তথ্য


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। কোনো একটি অভিযোগ গঠনের ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। তবে এর মধ্যে করা সম্ভব না হলে সর্বোচ্চ আরও ৯০ কার্যদিবস পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় একটি ইর্মাজেন্সি রেসপন্স টিম থাকবে। একইসাথে সার্বক্ষণিক মনিটরের জন্য জাতীয় কম্পিউটার মনিটরিং টিমও থাকবে।

এই আইনে ১১ সদস্যের ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যার প্রধান হবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

কোনো অপরাধী বাংলাদেশ বা বিশ্বের যেকোনো দেশে বসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোনো একটি ধারায় অপরাধ করুক না কেন, তার বিরুদ্ধে সরকার আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সাবধানতা

সাধারণ মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কেননা এতে এমন এমন সব ধারা উপধারা সংযুক্ত করা হয়েছে, যা অপরাধীদের জন্য হলেও তার কারণে সাধারণ মানুষও অসাবধানতার কারণে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হতে পারেন। কেননা, সাধারণ মানুষের বৃহৎ একটা অংশ স্বল্প ব্যয়ে ফেসবুক তথা সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে জানলেও বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে না জানার কারণে সেও যেকোনো সময় অপরাধী হয়ে যেতে পারে। তাই আমাদের ফেইসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

বর্তমান আইনে চাইলেই কারো নামে যা ইচ্ছা প্রকাশ করা যাবে না, দোষী ব্যক্তির নামে কোনো কিছু প্রকাশ করা যাবে না। এমন কিছু পোস্ট করা যাবে না, যার দ্বারা কোনো ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি হয় কিংবা নিজ ধর্মেরও এমন কিছু প্রকাশ করা যাবে না যদ্বারা কোনো একটি গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর গেজেট

এমন কোনো রাজনৈতিক পোস্ট করা যাবে না, যে পোস্টের কারণে মুক্তিযুদ্ধ কিংবা জাতির জাতীয় ইতিহাসে কোনো আঘাত আসে। আমরা অনেক কিছুতেই রাজনৈতিক এবং মুক্তিযুদ্ধকে পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে নিয়ে আসি। যা এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি অপরাধ বলেই গণ্য হবে। সুতরাং এই বিষয়ে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনুমতি ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকারি ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো তথ্য বা সংবাদ প্রকাশ অথবা সংগ্রহ করাকে দোষ হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন উন্মুক্ত মাধ্যমে (ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোস্যাল মিডিয়া) লেখালেখি কিংবা সাংবাদিকতা করে তাদেরও এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে জেনে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।


লিখেছেন: সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী 🔗 ফেসবুক

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,606FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles