▶ প্রশ্ন: উসুলে ফিকহ কী? এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণনা করুন? ▶ বিষয়: (IST-506) Principles of Islamic Jurisprudence ▶ কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (১ম পর্ব)
ভূমিকা
উসুলে ফিকহ ইসলামী শরীয়তের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের জীবন সদা পরিবর্তনশীল। বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষাপটে মানুষের জীবন যাপনের ধারা ও পদ্ধতি একদিন থেকে অন্য দিন পরিবর্তিত হতে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে জীবন ধারণের জন্য মানুষ প্রতিদিন নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করতে হচ্ছে। এই সকল সমস্যার সমাধানে শরীয়াত সম্মত মাসয়ালা বের করা খুবই জরুরী। আর উসুলে ফিকহ তথা ফিকহ শাস্ত্রের মাধ্যমেই নিয়মতান্ত্রিকভাবে এসব মাসয়ালা বের করে সমস্যার সমাধান করা হয়।
উসুলে ফিকহ এর সংজ্ঞা
পবিত্র আল কুরআন এক মহাগ্রন্থ। যা সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য পথপ্রদর্শক এবং রহমত স্বরূপ নাযিল করা হয়েছে। আল কুরআনের নির্দেশিত পথ বা কার্যকারিতা কিয়াস পর্যন্ত বজায় থাকবে। আর কোরআন এই নির্দেশিত পথকে ইসলাম নামে আখ্যায়িত করেছে এবং এর আইন-কানুন ও সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। যার ব্যাখ্যা হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাজকর্ম, কথাবার্তা ও অনুমোদন দ্বারা প্রদান করেছেন তার বাস্তব ও চূড়ান্ত রুপ-ই ফিকহ শাস্ত্র।
হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় কোন সমস্যা দেখা দিলে তিনি নিজেই তার সমাধান করতেন। কিন্তু তাঁর ওফাতের পর সমসাময়িক সমস্যা সমাধানের জন্য কুরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে। আর এ সকল সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে উসুলে ফিকহ এর উৎপত্তি ঘটে।
আরো পড়তে পারেন: কিতাবুল্লাহ কী? এর প্রকারভেদ ও বিস্তারিত আলোচনা করুন?
ফিকহ শাস্ত্রের গুরুত্ব
ইসলামে ফিকহ শাস্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। ফিকহ ইসলামের মূল বা নির্যাস এবং ধর্মের বাস্তব দিক। যাকে ইমাম আবু হানীফা (রহ.) ফিকহে আকবার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ফিকহ শাস্ত্রের দ্বারাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ মোতাবেক সঠিক ভাবে ইবাদত করা যায়, মুয়ামালাত বা লেনদেন সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দেওয়া যায়, মানুষের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করা যায় এবং এর দ্বারা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ফিকহ’র দ্বারাই তাদের মধ্যকার বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়, ইসলামী ভাবধারায় পরিবার ও সমাজ গঠন করা যায়। পরিবার ও সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন বিয়ে, তালাক, মিরাস, অসিয়াত তথা পরিবার ও সমাজ জীবনের সকল বিষয় সম্পর্কে অবহিত হওরা যায়।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সাহাবীগণকে ফিকহ শাস্ত্র শিক্ষা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করতেন। কোন লোক ইসলামে দীক্ষিত হলে তিনি এ ব্যক্তিকে অযু, গোসল, নামায ও কুরআন তিলাওয়াতসহ যাবতীয় ইসলামী বিধি-বিধান শিক্ষা দেয়ার জন্য সাহাবীদের হাতে তুলে দিতেন। অনেক সময় তিনি নিজেই এগুলো শিক্ষা দিতেন। ফিকহ এর দ্বারা ইবাদত তথা- অযু, গোসল, নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত প্রভৃতি সকল প্রকার ইবাদত সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়।
আরো পড়তে পারেন: খাস কী? খাসের হুকুমসহ বিস্তারিত আলোচনা করুন?
ফিকহ-ই মানুষকে সঠিকভাবে ইবাদত করার পথদির্নেশনা দেয়। তাহারাত, নামায, রোজা, হজ্জ ও যাকাত ইত্যাদির খুটিনাটি নিয়মাবলীর বর্ণনা ফিকহ এর মাধ্যমেই পাওয়া যায়। অনুরূপভাবে লেনদেন সম্পর্কেও ফিকহ-এর মাধ্যমে অবহিত হওয়া যায়।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে ফকীহ বানিয়ে দেন”। অর্থাৎ যাকে আল্লাহ তায়ালা দ্বীনের গভীর জ্ঞান দান করেন, আল্লাহ তার মঙ্গল চান বলেই তাকে ওই জ্ঞান দান করেন।
উপসংহার
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উক্ত হাদীস থেকে বোঝা যায়, যারা ফিকহ শাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেছেন তাদের মর্যাদা কত উচ্চতম। সর্বোপরি ইসলামের হুকুম-আহকামগুলো সম্বন্ধে তীক্ষ্ণভাবে জ্ঞান রাখার জন্য ফিকহ শাস্ত্রের জ্ঞান রাখা জরুরী।
• IST-501 : Study of Al-Quran (Surah: Al-Fatah and Al-Hujurat) • IST-502 : Introduction to Islamic Dawah • IST-503 : Al-Sirat Al-Nababiah • IST-504 : Human Rights in Islam • IST-505 : Principles and History of Tafsir literature • IST-506 : Principles of Islamic Jurisprudence •