Thursday, November 21, 2024

নেককার মহিলাদের কাহিনী • হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ

নেককার মহিলাদের কাহিনী • হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ

মহান আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসুল দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন মানুষের হেদায়াতের জন্য। তাদের একত্ববাদের দাওয়াত ও শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন। ঠিক তেমিনভাবে অনেক নেককার মহিলাও দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। তাদের মধ্যেও আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য মুজিজা দিয়েছিলেন। যেগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। এখানে তেমনিভাবে আল্লাহর কিছু প্রিয় নেককার মহিলাদের কাহিনী ও তাদের শিক্ষা তুলে ধরা হলো।


হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ

হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ নবী করীমের বিবি। হযরত যায়েদ একজন ছাহাবী। নবী করীম তাঁকে পোষ্যপুত্র করে রেখেছিলেন। হযরত যায়েদ বয়স্ক হলেন। নবী করীম তাঁর বিবাহের ব্যবস্থা করতে লাগলেন। হযরত যয়নবের জন্য তাঁর ভাইয়ের নিকট পয়গাম পাঠালেন। কিন্তু হযরত যায়েদের হিসাবে তাঁরা নিজদিগকে খান্দানী মনে করতেন। তাই বিবাহের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন।

এদিকে আল্লাহ্ তা’আলা “ওহী” প্রত্যাদেশ নাযিল করলেন। “পয়গাম্বরের নির্বাচনের পর কোন মুসলমানের কোন ওযর থাকা উচিত নয়।” এরপর উভয়েই এই বিবাহে সম্মতি জানাইলেন। যথারীতি বিবাহ অনুষ্ঠিত হলো। কিন্তু বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর সদভাব দেখা গেল না। শেষ পর্যন্ত হযরত যায়েদ স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। নবী করীম অনেক বুঝাইলেন, নিষেধ করলেন। কিন্তু বিশেষ আশ্বস্ত থেকে পারলেন না। ফলে রাসূলুল্লাহ্ (দঃ) বিশেষ চিন্তিত হলেন। ভাবলেন, বিবাহের পূর্বেই এটাতে ভাই-বোন অসম্মত ছিল। কেবলমাত্র আমার ইচ্ছার উপর উভয়ে রাযী হয়েছিল। এখন যদি তালাক দিয়ে দেয়, তা হলে উভয়ের মনে আর দুঃখের সীমা থাকবে না।

অবশেষে রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্থির করলেন, সকল সমস্যা সমাধানের নিমিত্ত তিনি স্বয়ং হযরত যয়নবকে বিবাহ করবেন। এটাতে উভয়েই সান্ত্বনা লাভ করবে; কিন্তু বেঈমান লোকেরা অবশ্যই তোমত লাগাবে। তারা বলবে যে, নবী স্বীয় পুত্র-বধূকে বিবাহ করেছেন। ইতিমধ্যেই হযরত যায়েদ তাঁকে তালাক দিয়ে দিলেন।

ইদ্দত পুরা হয়ে গেল। নবী করীম স্বয়ং বিবাহের পয়গাম দিলেন। ওযূ করে নামায আদায় করত আল্লাহ্ তাআলার নিকট মুনাজাত করলেন। আয় আল্লাহ্! আমি নিজ বুদ্ধিতে কোন কাজ করি না, কেবল আপনার আদেশেই করে থাকি। অতঃপর আল্লাহ্ স্বীয় রাসূলের উপর “ওহী” নাযিল করলেন, “আমি তাঁর বিবাহ আপনার সাথে করে দিলাম।”

রাসূলুল্লাহ্ লাগাইবে যয়নবকে এই আয়াত শুনিয়ে দিলেন। হযরত যয়নব অন্যান্য বিবিগণের সাথে ফখর করে বলতেন, দেখ! তোমাদের বিবাহ মা-বাপের দ্বারা হয়, আর আমার বিবাহ আল্লাহ্ তা’আলা করালেন। এই সময় থেকেই নারীদের পর্দার হুকুম জারি হয়। হযরত যয়নব খুব দানশীল নারী ছিলেন। তাঁর হৃদয় ছিল অত্যন্ত নরম, দয়ায় পরিপূর্ণ।

একবারের এক ঘটনা। হযরতের সকল বিবিগণই মিলিতভাবে হযরতের নিকট আরয করলেন, আপনার পর কোন বিবি সর্ব-প্রথম আপনার সাথে মিলিত হবেন। উত্তরে হযরত বললেন, যার হাত অধিক লম্বা। এই কথা শুনে সকলেই হাত মাপতে লাগলেন। অবশেষে দেখা গেল, হযরত সওদার হাত অধিক লম্বা।

হযরত মুহাম্মদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মৃত্যুর পর দেখা গেল, হযরত যয়নব মৃত্যুবরণ করলেন সকলের আগে এবং হযরত সওদা মৃত্যুবরণ করলেন সর্বশেষে। ফলে সকলেই বুঝলেন, দানের হিসাবে হাত লম্বা হয়। হযরত যায়েদ তখন বুঝতে পারলেন, হযরত যয়নব হযরতের কত প্রিয় ছিলেন। হযরত আয়েশা বলেন, আমি হযরত যয়নব থেকে উৎকৃষ্ট কোন আওরত দেখিনি। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যয়নবের ন্যায় নম্র স্বভাব এবং আল্লাহর সামনে অনুনয় বিনয়কারিণী আওরত আমি দেখি নাই।

নেককার মহিলাদের কাহিনী ও তাদের জীবনী

হযরত হাওয়া (আঃ)হযরত সারা (আঃ)হযরত হাজেরা (আঃ)হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বিবিবাদশাহ্ নমরুদের কন্যাআইয়ূব নবীর স্ত্রী বিবি রহিমাহযরত ইউসুফ (আঃ)-এর খালাহযরত মূসা (আঃ)-এর মাতাহযরত মূসা (আঃ)-এর বোনহযরত মূসা (আঃ)-এর বিবি ছফুরাহযরত বিবি আছিয়াফেরাউনের কন্যা ও বাঁদীহযরত মূসার এক বৃদ্ধা লস্করহাইসূরের ভগ্নীহযরত বিলকিসবনি-ইসরাইলের এক দাসীবনি-ইসরাইলের এক বুদ্ধিমতী নারীহযরত বিবি মারইয়ামহযরত খাদিজাহযরত সওদা • হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা • হযরত হাফসা • হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ • হযরত যোয়ায়রিয়াহ • হযরত মায়মুনাহ • হযরত সাফিয়া • হযরত যয়নব • হযরত রোকেয়া • হযরত উম্মে কুলসুম • হযরত ফাতেমা (রাঃ) • হযরত হালিমা সাদিয়া •

তথ্যসূত্র

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,606FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles