উপমহাদের প্রখ্যাত আলেম, হাকিমুল উম্মত হিসেবে খ্যাত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রচিত মুসলমানের হাসি বই-এ নাসির গাজীর অনেকগুলো বুদ্ধিদীপ্ত ও শিক্ষণীয় গল্প স্থান পেয়েছে। গল্পগুলো থেকে শিক্ষণীয় অনেক বিষয় রয়েছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের জন্য অনেক হাস্যরসাত্মক শিক্ষণীয় গল্প রয়েছে। সেখান থেকে গল্পগুলো এখানে তুলে ধরা হলো-
বাদশাহ’র আরাম অনুভব
বাদশাহ একবার নতুন গদী ক্রয় করে সেখানে উজির-নাজিরদের বসতে দিয়ে রসিকতা করে বললেন- আচ্ছা, তোমরা যে এই নতুন গদীতে বসে রয়েছে, এতে তোমাদের কেমন আরাম লাগছে? তখন একেজন একেক ধরনের উত্তর দিল।
বাদশাহ যখন নাসির গাজীকে এ প্রশ্ন করলেন। তখন নাসির গাজী বলল, প্রচণ্ড পায়খানার বেগ হওয়ার পরে পায়খানা করলে যেমন আরাম পাওয়া যায়, ঠিক তেমনি আরাম পাচ্ছি। তখন উজির-নাজির সবাই সমন্বরে হো হো করে হেসে উঠল। বাদশাহ এহেন পরিস্থিতি দেখে রাগান্বিত হয়ে নাসির গাজীকে বললেন- তুমি আমার এই গদীকে পায়খানার সাথে তুলনা করেছে, তাই এর শাস্তি স্বরূপ তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করলাম।
তখন নাসির গাজী বাদশাহকে বলল, জনাব! আপনি আমাকে যে শাস্তি দিবেন, তা আমি মাথা পেতে নিব। তবে আমাকে আপনি আমার কথা প্রমাণ করার জন্য একমাস সময় দিন। বাদশাহ তখন চিন্তা করতে লাগলেন। অবশেষে নাসির গাজীকে তার কথা প্রমাণ করার জন্য এক মাস সময় দিলেন।
কিছুদিন পর বাদশাহ নাসির গাজীকে নিয়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে এক জায়গায় বের হলেন। পথিমধ্যে বাদশাহর পায়খানার ভীষণ বেগ হল। তখন বাদশাহ নাসির গাজীকে বললেন-দেখ তো, আশে-পাশে কোন টয়লেট আছে কিনা? নাসির গাজী বলল, জনাব! এখানে আশে-পাশে কোন টয়লেট নেই। আরেকটু সামনে চলুন, হয়ত সেখানে কোন টয়লেট পাওয়া যাবে। বাদশাহ কিছুদুর যাওয়ার পর নাসির গাজীকে আবার বললেন- দয়া করে তাড়াতাড়ি একটা টয়লেট খুজে বের কর। নাসির গাজী এদিক সেদিক উঁকি মেরে দেখে বলল, জাঁহাপনা! ঐ যে দূরে লোকালয় দেখা যাচ্ছে। মনে হয় সেখানে কোন টয়লেট আছে। বাদশাহর এদিকে হালুয়া টাইট। তিনি ভাবছেন- এখন যদি জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে নাসির গাজীর সামনে খুব লজ্জা পাব। এদিকে বাদশাহর পায়খানার বেগ এতই বেড়েছে যে, হাটতেও তার খুব কষ্ট হচ্ছে। অ-নে-ক কষ্টে বাদশাহ লোকালয়ে এসে পৌঁছলেন। সেখানে একটি টয়লেটের সন্ধ্যান পেয়ে বাদশাহর যেন প্রাণ ফিরে এল। অতি তাড়াতাড়ি বাদশাহ টয়লেটে প্রবেশ করলেন।
যখন পায়খানার হাজত সেরে বাদশাহ টয়লেট থেকে বেরিয়ে এলেন, তখন নাসির গাজী বলল, বাদশাহ নামদার! এখন কি আপনার সেই গদীতে বসলে যেমন আরাম লাগে তেমন আরাম লাগছে, নাকি তার চেযে বেশী আরাম লাগছে? বাদশাহ তখন খুব লজ্জা পেলেন এবং প্রকৃত ব্যাপারটা বুঝে নাসির গাজীকে বললেন- “তোমার এই সুতীক্ষ্ম বুদ্ধির জন্য তোমাকে পূর্বের শাস্তি ক্ষমা করে দিলাম এবং এক হাজার দিরহাম তোমাকে উপহারস্বরূপ দিলাম।”
নাসির গাজীর অন্যান্য গল্পসমূহ
- এক সিংহ ও পথচারীর গল্প ➜ পড়ুন
- জ্বি হুজুর! জ্বি হুজুর!! ➜ পড়ুন
- মূল্যবান সম্পদ ➜ পড়ুন
- আজ নগদ কাল বাকী ➜ পড়ুন
- মাছের মাথা-খাওয়ার লোভ ➜ পড়ুন
- ওয়াজ না করার ফন্দি ➜ পড়ুন
- একসাথে দু’জন ➜ পড়ুন
- হতবাক ইহুদি ➜ পড়ুন
- উচিত বিচার ➜ পড়ুন
- তিন টাকার সদাই ➜ পড়ুন
- বাদশাহ’র ছেলের লেখাপড়া ➜ পড়ুন
- ফুলদানির জন্য মৃত্যুদন্ড ➜ পড়ুন
- পন্ডিত খেতাবের বিড়ম্বনা ➜ পড়ুন
- সৎ লোকের সন্ধানে ➜ পড়ুন
- চৈতন্য ফিরে এল ➜ পড়ুন
- ঝাড়-ফুঁকের এ্যাকশন ➜ পড়ুন
- দিতে জানে না, নিতে জানে ➜ পড়ুন
- সম্পদের ওসীয়তনামা ➜ পড়ুন
- আল্লাহ যা করেন বান্দার মঙ্গলের জন্যেই করেন ➜ পড়ুন
- সব জায়গায় একই সূত্র ➜ পড়ুন
- চোর ধরার আজব বুদ্ধি ➜ পড়ুন
- দুনিয়া ধ্বংসের আগেই ধ্বংস ➜ পড়ুন
- অল্প সময়ের জন্য বিনা খরচে সুখের আস্বাদ ➜ পড়ুন
- পনের দিনের মজুরীর ভয়ে ➜ পড়ুন
- কুকুর তাড়ানো ভণ্ডপীর ➜ পড়ুন
- সব জায়গায় একই সূত্র ➜ পড়ুন
- পবিত্র কোরআনের আয়াতের ফুঁকের ক্ষমতা