ঔষধি গুণসম্পন্ন কিছু দেশীয় ফল ও তাদের ব্যবহার
ঔষধি গুণে ভরপুর ফল- ডালিম
ডালিম ফল আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসায় পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডালিমে বিউটেলিক এসিড, আরসোলিক এসিড এবং কিছু আ্যালকালীয় দ্রব্য, যেমন-সিডোপেরেটাইরিন, পেপরেটাইরিন, আইসোপেরেটাইরিন, মিথাইল পেরেটাইরিন প্রভৃতি মূল উপাদান থাকায় তা বিভিন্ন রোগ উপশমে ব্যবহৃত হয়। কবিরাজী মতে ডালিম হচ্ছে হৃদয়ের শ্রেষ্ঠতম হিতকর ফল। এ ফল কোষ্ঠ রোগীদের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। ডালিম গাছের শিকড়, ছাল ও ফলের খোসা দিয়ে আমাশয় ও উদরাময় রোগের ওষুধ তৈরী করা হয়। এটা ত্রিদোষ বিকারের উপশামক, শুক্রবর্ধক, পিপাসানাশক, মেধা ও বলকারক, অরুচিনাশক ও তৃত্তিদায়ক। ডালিমের ফুল রক্তশ্রাবনাশক।
👉 আরো পড়তে পারেন: শিশুদের বুদ্ধি বিকাশের জন্য টিপস
ঔষধি গুণে ভরপুর ফল- জাম
জাম ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে শরীর সুস্থ রাখে। এক চা চামচ জামের বীচির গুড়া খালি পেটে প্রতিদিন সকালে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। জাম রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদপিন্ড ভালো রাখে। জাম রক্তস্বল্পতা ও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। কালো জাম জরায়ু, ডিম্বাশয় ও মলদ্বারের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। জামের কচি পাতার রস ২-৩ চা-চামচ একটু গরম করে ছেঁকে নিয়ে খেলে ২-৩ দিনের মধ্যে সাদা বা রক্ত আমাশয় সেরে যায়। জামছালের গুড়া দিয়ে দাত মাজলে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হবে। জামে ফাইটো কেমিক্যালস আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সঙ্গে মৌসুমি সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি দেয়। প্রতিরোধ করে ইনফেকশনের মতো সমস্যাও।

জাম খাওয়ার সতকর্তা
আধা পাকা (ডাঁসা) জাম খাওয়া ভালো না। খালি পেটে জাম খাবেন না এবং জাম খাওয়ার পর দুধ খাবেন না। পাকা ফল ভরা পেটে খেলে অতিরিক্ত এসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকভাব হতে পারে।
ঔষধি গুণে ভরপুর ফল- তেঁতুল
তেঁতুল একটি জনপ্রিয় ভেষজ ফল। পেটের বায়ু, হাত, পা জ্বালায় তেতুলের শরবত উপকারী। তেঁতুলের কচি পাতা সিদ্ধ করে ঠান্ডা করে খেলে সর্দি ভালো হয়। তেঁতুলে টারটারিক এসিড থাকে, যা মানুষের হজমে সহায়তা করে। মাথাব্যাথা, ধুতরা ও কচুর বিষাক্ততা এবং আালকোহলের বিষাক্ততা নিরাময়ে এ ফলের শীসের শরবত ব্যবহৃত হয়। এটা ব্যবহারে প্যারালাইসিস অঙ্গের অনুভূতি ফিরিয়ে আনে। গাছের ছালের চূর্ণ ব্যবহারে দাঁব্যাথা, হাপানি, চোখ জ্বালা পোড়া নিরাময় হয়।
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণী ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান), কৃষি মন্ত্রণালয়