▶ প্রশ্ন: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামি ব্যাংক ও এর সম্ভাবনা আলোচনা করুন। ▶ বিষয়: IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam ▶ কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামি ব্যাংক ও এর সম্ভাবনা আলোচনা করুন।
ভূমিকা
বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয় অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে মুসলিম বিশ্বে যখন ইসলামি পুনর্জাগরণের জোয়ার আসে এবং বিশ্বের মুসলিম মনীষীগণসুদবিহীন ইসলামি অর্থ ব্যবস্থার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখতে শুরু করেন তখন বাংলাদেশের ইসলামি চিন্তাবিদঘনও থেমে থাকেননি। তাঁরা তখন ইসলামি ব্যাংকিং এর উপর বিভিন্ন প্রবন্ধ উপস্থাপন, কনফারেন্স, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে সুদবিহীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবী জানাতে থাকেন।
বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংক
বাংলাদেশর জনগণ মুসলমান হিসেবে ইসলামি অর্থনীতিতে বিশ্বাসী। তাঁরা সুদের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছে। অর্থনীতিকে কুরআন ও সুন্নাহ নির্দেশিত নীতিমালার ভিত্তিতে গড়ে তোলার দাবী ও আকাঙ্ক্ষা তাঁদের দীর্ঘ দিনের লালিত। কিন্তু পরাধীন জাতির ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষা থাকলে সবকিছু করতে পারে না। মুসলিম জনগণের দাবী ও আকাঙ্ক্ষা থাকলে সবকিছু করতে পারে না। সুমলিম জনগণের দাবী ও আকাঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে দেশ বিদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট আলেম, ইসলামি চিন্তাবিদ, ব্যাংকার, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি এদেশে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করার এবং মুসলিম জাতিকে সুদের অভিশাপ থেকে রক্ষা করার জন্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর-এর শাসনামলে বাংলাদেশ পাকিস্তানের লাহোর সম্মেলনে ওআইসি’র সদস্য পদ লাভ করে এবং একই বছরের আগষ্ট মাসে বাংলাদেশ ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) চার্টারে স্বাক্ষর করে দেশের অর্থ ব্যবস্থা ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পুনর্বিন্যাস করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। ১৯৮১ সালে জানুয়ারী মাসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সৌদী আরবের তায়েফে অনুষ্ঠিত ওআইস’র তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলনে ইসলামি দেশসমূহের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ সুবিধার জন্যে একটি স্বতন্ত্র ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করার প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যক্ত করেন। নভেম্বর, ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ দেশের বাইরের কয়েকটি দেশে ইসলামি ব্যাংকসমূহের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্যে প্রতিনিধি প্রেরণ করে।
অতঃপর ১৯৮২ সালের নভেম্বর মাসে আইডিবি’র একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেন এবং এখানে বেসরকারীভাবে যৌথ উদ্যোগে একটি ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁরা লক্ষ করেন যে, এদেশে সুদবিহীন ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি জনগণের গভীর আগ্রহ রয়েছে এবং এ ব্যাপারে এখানে ইতোমধ্যে অনেক কাজও সম্পাদন করা হয়েছে। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার উপর বেশ কয়েকটি সেমিনার, প্রশিক্ষণ কোর্স ও ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা ও সাধনার ফলে ইসলামি আদর্শে উদ্বুদ্ধ দেশ বিদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও ইসলামি সংস্থা ইসলামি ব্যাংকের ধারণাকে বাস্তবে রূপদান করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে ব্যাংক ব্যবস্থায় ইসলামি শরীআ নীতিমালা পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করার এবং আর্থনীতিতে ন্যায়-নীতি, সুবিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৮৩ সালের ৩০শে মার্চ ‘ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৩ সারের ১২ই আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাংক তার ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। বিশ্বের ৫৬টি মুসলিম দেশের প্রতিনিধিত্বকারী অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক, দুবাই ইসলামি বাহরাইন ইসলামি ব্যাংক প্রভৃতি ইসলামি ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এ বংকের মূলধন যোগানে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশে এ ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সরকার, আইসিবি, আইইআরবি, কয়েকটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশের ইসলাম প্রিয় ব্যক্তিবর্গ।
উপসংহার
১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে দ্বিতীয় ইসলামি ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ‘আল বারাকা ব্যাংক লিমিটেড’ নামে। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশে ইসলামি শরীআর ভিত্তিতে পরিচালিত আরো তিনটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ তিনটি ইসলামি ব্যাংকের নাম হচ্ছে- (১) আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড, (২) সোস্যাল ইনভেষ্টমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (৩) প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড (ইসলামি শাখা) (৪) শাহজালাল ব্যাংক। এছাড়া বাংলাদেশে আরো একাধিক ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
• IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam •