▶ প্রশ্ন: তাহারাত-এর সংজ্ঞা দিন। উযু ভঙ্গের কারণ, উযুর ফরয, সুন্নত ও মুস্তাহাবগুলো বর্ণনা করুন। ▶ বিষয়: IST-602 : Study of Al-Fiqh ▶ কোর্স: এমএ ইন ইসলামিক স্টাডিজ (ফাইনাল)
তাহারাত-এর সংজ্ঞা দিন। উযু ভঙ্গের কারণ, উযুর ফরয, সুন্নত ও মুস্তাহাবগুলো বর্ণনা করুন।
ভূমিকা
ইসলামী শরীয়তে তাহারাত তথা পবিত্রতার গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্রতা ছাড়া কোন ইবাদাত গ্রহণযোগ্য নয় । আর পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো পবিত্র পানি ।
তাহারাত এর সংজ্ঞা
আরবি শব্দ طهارة, তাহারাত তথা পবিত্রতা হল ইসলামের একটি অত্যাবশ্যক অংশ। এটি নাজাসাতের বিপরীত, যা হল ধর্মীয়ভাবে অপবিত্র হওয়ার অবস্থা। এটি প্রাথমিকভাবে শারীরিক অপবিত্রতা (যেমন, মূত্র) দূরীকরণের মাধ্যমে আর তারপর অজু বা গোসলের দ্বারা ধর্মীয় পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমে অর্জিত হয়।
শরীয়তের নির্দেশিত পন্থায় পবিত্রতা অর্জন করাকে তাহারাত নামে অভিহিত করা হয়। যেমন- অযু, গোসল ও তায়াম্মুম দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা।
উযু ভঙ্গের কারণসমূহ
এক বা একাধিক কারণে ওযু ভঙ্গ হতে পারে। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো-
- পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়া। পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে প্রস্রাব, পায়খানা, বায়ু, কৃমি, মযী, মনি এবং মেয়েদের হায়েয বা নিফাসের রক্ত বের হলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যায়।
- শরীরের যেকোন অঙ্গ থেকে নাপাকি বের হওয়া। অপারেশন করে পাইপের মাধ্যমে প্রস্রাব-পায়খানা বের করলে বা শরীরের কোন ক্ষতস্থান থেকে বেশি পরিমাণ রক্ত, বমি বা পুঁজ বের হলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যায়।
- গোসল ফরয হয় এমন কিছু ঘটে যাওয়া। যেসব কারণে গোসল ফরয হয় সেসব ঘটনায় ওযূও ভঙ্গ হয়ে যায়।
- শুয়ে, চিৎ হয়ে বা ঠেস দিয়ে ঘুমানো। শুয়ে বা হেলান দিয়ে ঘুমালে ওযু ভঙ্গ হয়। কিন্তু বসে বসে ঘুমালে ওযু ভঙ্গ হয় না।
- হুঁশ জ্ঞান হারিয়ে ফেলা। পাগল, বেহুঁশ বা মাতাল হয়ে যাওয়া বা কোন ঔষধ সেবনের কারণে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ওযূ ছুটে যায়। মস্তিষ্কের বিকৃতি বা চেতনা হারিয়ে ফেললেও ওযু থাকে না।
- লজ্জাস্থান স্পর্শ করা। বিনা আবরণে হাত দ্বারা লিঙ্গ স্পর্শ করলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। তবে কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ হলে ওযু ভাঙবে না।
- উটের মাংস ভক্ষণ। উটের মাংসা ভক্ষণ করলে উযু ভেঙ্গে যায়।
উযুর ফরয
উযুর ফরয চারটি। যথা-
- সমস্ত মুখ ভালভাবে ধৌত করা।
- দুই হাতের কনুইসহ ভালভাবে ধৌত করা।
- মাথা চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ্ করা।
- দুই পায়ের টাকনুসহ ধৌত করা।
উযুর সুন্নাত
উযুর সুন্নাতসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
- অজুর শুরুতে নিয়ত করা।
- বিসমিল্লাহ পড়া।
- উভয় হাত কবজি পর্যন্ত ধোয়া।
- মিসওয়াক করা।
- কুলি করা।
- নাকে পানি দেওয়া।
- রোজাদার না হলে ভালোভাবে কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়া।
- প্রতিটি অঙ্গ তিনবার ধোয়া।
উযুর মুস্তাহাবসমূহ
উযুর কিছু মুস্তাহাব কাজ, যেগুলো করা উত্তম। তবে না করলেও উযু হয়ে যাবে। যেমন-
- অযুর পর কালেমা শাহাদাত পড়া।
- অযুর দুই কাজের মধ্যে দেরি না করা।
- অযুর সময় আহেতুক কথা না বলা।
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন স্থানে অযু করা।
- পানির অপচয় না করা।
- ডান থেকে বামে ধারাবাহিকতা রেখে অযু করা।
উপসংহার
পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। ইসলামী শরীয়াতে তাহারাত তথা পবিত্রতা অর্জনের গুরুত্ব অত্যধিক। যেমন- গোসল করা, উযু করা মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন।
• IST-601 : Study of al Tafsir (Tafsir Ibn Kathir : Surah-al-Maieda verse 1 to 77) • IST-602 : Study of al-Fiqh • IST-603 : Philosophy of religion and Comparative Religion • IST-604 : History of Sufism in Bangladesh and some prominent • IST-605 : Trade, Commerce and Business Studies in Islam •